ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের নয় মাস পর দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। 

বুধবার (৭ মে) দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে তিনি দেশ ছাড়েন। 

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন আবদুল হামিদ।

এর আগে রাত ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান আবদুল হামিদ। সেখানে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশনে প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে দেশ ছাড়েন তিনি।

আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকার তথ্য রয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় তার বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের হয়।

ইমিগ্রেশন বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, তাকে গ্রেপ্তারে বা দেশত্যাগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল না।

তিনি আরো বলেন, সংবিধানের ৩৪ ও ১০২ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশি কোনো নাগরিককে যাতায়াতে বাধা দেওয়া যাবে না। যদি আদালতের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা না থাকে। তার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। কোনো মামলায় তাকে আটক বা গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো আর্জি বা আবেদন ছিল না। 

১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল হামিদ।

হাজি মো.

তায়েব উদ্দিন ও তমিজা বেগমের সন্তান হামিদ গুরুদয়াল কলেজ থেকে মানবিকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্মাতক ডিগ্রি নেন।
ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করার পর কিশোরগঞ্জ বারে আইন পেশায় যোগ দেন তিনি। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সাল পরপর্যন্ত পাঁচবার জেলা বার সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আবদুল হামিদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬১ সালে কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই যোগ দেন আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে। এক পর্যায়ে তাকে কারাগারেও যেতে হয়।

গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জ সাব ডিভিশনের ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব নেন আবদুল হামিদ।

১৯৬৬-৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ১৯৬৯ সালে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। এরপর দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে শুরু হলে তিনি তাতে যোগ দেন।

মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে চলতি বছর আব্দুল হামিদকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ।

এরপর ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। 

সপ্তম সংসদে ১৯৯৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০০১ এর ১০ জুলাই পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালনের পর ২০০১ এর ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্পিকার হিসাবে সংসদ পরিচালনা করেন আবদুল হামিদ। আর নবম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার হন।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন আবদ ল হ ম দ ন র ব চ ত হন ক শ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

‘অসামাজিক’ কিছু দেখেননি স্থানীয় বাসিন্দারা, তারপরও মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা

আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বেহালা। পড়ে আছে একতারার ভাঙা অংশ। ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে হারমোনিয়ামসহ বাদ্যযন্ত্র ও গানের জিনিসপত্র। সরাজ, মন্দিরা, জিপসিসহ বাদ্যযন্ত্রগুলোতেই সুর উঠত। গাওয়া হতো সামা কাওয়ালি।

কিন্তু ‘অসামাজিক’ কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে হামলা-ভাঙচুর করা হয়েছে ময়মনসিংহ নগরের ‘আত্তায়ে রাসুল চার তরিকা খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামের ওই খানকায়। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ নগরের সুতিয়াখালী বাজারে প্রায় ১৭ বছর আগে সরকারি জমিতে ওই খানকা গড়ে তোলেন স্থানীয় উসমান গণি ফকির। গতকাল শনিবার দুপুরে খানকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা স্থাপনা দেখতে ভিড় করেছেন অনেকে। টিনের খুপরিঘরের চারপাশ কুপিয়ে তছনছ করা হয়েছে। সিমেন্টের পিলারগুলো ভাঙা। পাশেই পড়ে আছে পুড়িয়ে দেওয়া গানের জিনিসপত্র। একটি সাউন্ড বক্স বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। মাইকগুলো ভাঙা। থালাবাসন, দানবাক্সসহ সব জিনিসপত্রই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনময়মনসিংহে প্রতি সপ্তাহে কাওয়ালি গানের আসর বসা খানকা শরিফে ভাঙচুর১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খানকা শরিফের খাদেম উসমান গণি ফকির বলেন, ১৭ বছর ৯ মাস ধরে তাঁকে কেউ বাধা দেয়নি। হঠাৎ শুক্রবার বেলা ১টা ৪০ মিনিটে কিছু দুর্বৃত্ত এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে তাঁর ১০–১২ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট করেছে। এখানে প্রতি শুক্রবার অনেক লোক এসে মিলাদ পড়ে। জিকির শেষে সামা কাওয়ালি গান হয়। তিনি শুনেছেন, মসজিদে ঘোষণা দিয়ে হামলা করা হয়। তিনি বলেন, ‘সরাজ, বেহালা, হারমোনিয়ামসহ গানের সব জিনিস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কী কারণে হামলা করেছে, বুঝতে পারছি না। এখানে কোনো অসামাজিক কাজ হতো না। বাজারের ইজারাদারদেরও কোনো অভিযোগ ছিল না। মসজিদ কমিটিও কোনো দিন কিছু বলেনি। আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থাতেই আছি।’

মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা

সুতিয়াখালী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও খানকা শরিফের দূরত্ব ৫০ গজের মতো। শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইমাম মুসল্লিদের কাছ থেকে টাকা তুলতে মাইকে কথা বলেন। তখন ইমামের কাছ থেকে মাইক নিয়ে খানকা ভাঙার ঘোষণা দেন স্থানীয় রুবেল মিয়ার ছেলে মো. তানভীর (১৯)।

ময়মনসিংহ নগরের সুতিয়াখালী বাজারে ‘আত্তায়ে রাসুল চার তরিকা খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামের খানকায় ভাঙা জিনিসপত্র ঘুরে দেখেন খাদেম উসমান গণি ফকির। গতকাল শনিবার দুপুরে তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগরে আরো লঘুচাপের শঙ্কা, ঢাকায় ৩ ঘণ্টায় ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি 
  • গফরগাঁওয়ে বন্ধ করা হলো সিসা তৈরির কারখানা
  • ‘অসামাজিক’ কিছু দেখেননি স্থানীয় বাসিন্দারা, তারপরও মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা
  • আফগানিস্তান বাগরাম বিমান ঘাঁটি ফিরিয়ে না দিলে ‘খারাপ কিছু’ ঘটবে: ট্রাম্প
  • অভিযানের পর ধর্মঘটে অ্যাম্বুলেন্সচালকেরা, ময়মনসিংহ মেডিকেলের রোগীদের দুর্ভোগ
  • কেন নতুন গাড়ি না কিনে পুরোনো গাড়িই চালান ওয়ারেন বাফেট
  • রবিবার থেকে বৃষ্টি বাড়তে পা‌রে
  • আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চান ট্রাম্প, আছে যেসব সমস্যা
  • ময়মনসিংহে প্রতি সপ্তাহে কাওয়ালি গানের আসর বসা খানকা শরিফে ভাঙচুর
  • ময়মনসিংহে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ