কেরানি থেকে প্রধান শিক্ষক অবশেষে বরখাস্ত
Published: 8th, May 2025 GMT
প্রথমে কেরানি হিসেবে যোগ দেন। পরে ভুয়া সনদ দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদটি বাগিয়ে নেন মোর্শেদা বেগম। ঘটনা জানাজানি হলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনা ঘটেছে পীরগঞ্জ উপজেলার বড় বদনাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
২০২২ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। এরপর রাতারাতি মোর্শেদা বেগম ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন। এ কাজে তাঁকে সহায়তা করেন কমিটির সভাপতি ও তাঁর স্বামী রেজাউল করিম। বিষয়টি জানাজানি হলে ২০২৩ সালের ৫ মার্চ এলাকাবাসীর পক্ষে আব্দুর রাজ্জাক মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করলে তাঁর এমপিওভুক্তি স্থগিত রাখা হয়। এরপর আর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক ২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ফের অভিযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক, একাডেমিক সুপারভাইজার সাজেদুল বারী ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জয়নুল হককে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম। কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে গত ৩০ এপ্রিল প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন সভাপতি। ওই আদেশে বিদ্যালয়ের চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আতোয়ার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৫ সালে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সময় মোর্শেদা বেগম চতরা ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএ পাসের যে সনদ প্রদান করেছেন, তা সম্পূর্ণ ভুয়া। ওই সময় চতরা ডিগ্রি কলেজে ডিগ্রি কোর্স খোলা হয়নি। পরে তিনি ২০১০ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাসের সনদ দাখিল করে পুনরায় ২০১৪ সালে নিয়োগ গ্রহণ করেন। তিনি সেই নিয়োগসংক্রান্ত কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
তদন্তে আরও উল্লেখ করা হয়, মোর্শেদা বেগমকে ওই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে দেখা গেছে। ২০০৫ সালের পর ওই বিদ্যালয়ে আর কোনো নিয়োগই হয়নি। এজন্য মোর্শেদা বেগমের প্রধান শিক্ষক হিসেবে থাকার কোনো বৈধতা নেই।
বিদ্যালয়টির জমিদাতা ও সাবেক সভাপতি কায়কোবাদ সাবু বলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সভাপতি ছিলাম। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় বছরের পর বছর তালা দেওয়া থাকত বিদ্যালয়ে। শিক্ষক-কর্মচারীরা কেউই আসতেন না। এমপিওভুক্তি ঘোষণার পর রাতারাতি আমাকে সভাপতি পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়। বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, মোর্শেদা বেগমকে ২০০১ সালে কেরানি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। সে কীভাবে প্রধান শিক্ষক হয়?
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোর্শেদা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে কথা বলতে রাজি হননি। এক পর্যায়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে অসোভন আচরণ করেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে তিন বছরের শিশুকে হত্যায় সৎ মায়ের যাবজ্জীবন
নড়াইলের লোহাগড়ায় তিন বছরের এক শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে সৎ মাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার আসামির উপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ড পাওয়া জোবাইদা বেগম (২৫) উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর স্ত্রী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে সজীব কাজীর সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রী রুপা বেগমের বিচ্ছেদ হয়। এরপর সজীবের দুই সন্তান পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ইয়াসিন কাজী ও তিন বছর বয়সী মেয়ে নুসরাত জাহান রোজা দাদার (আবুল খায়ের) সঙ্গে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে সন্তানদের কথা চিন্তা করে সজীব কাজী দ্বিতীয় বিয়ে করেন জোবাইদা বেগমকে।
আরো পড়ুন:
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা, বাবাসহ ৩ জনের ফাঁসি
দাফনের আড়াই মাস পর কবর থেকে বৃদ্ধের মরদেহ উত্তোলন
২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে রোজাকে তার ভাই ইয়াসিন কাজী মারধর করলে সে কান্না শুরু করে। এরপর সৎ মা জোবাইদা বেগম তাকে ঘরের একটি কক্ষে নিয়ে যান। সে কান্না থামাচ্ছিল না দেখে জোবাইদা তার মুখ চেপে ধরেন, এতে শ্বাসরোধে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত রোজার দাদা আবুল খায়ের জোবাইদা বেগমকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বুধবার দুপুরে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান লিটু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা/শরিফুল/রাজীব