চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাবর্তনে অংশ নিতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। বুধবার সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে গ্রামের বাড়িতে যান প্রধান উপদেষ্টা। পরে জন্মভিটা ঘুরে দেখেন। সরকারপ্রধানকে কাছে পেয়ে স্বজনরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। তাদের কাছে অতীতের স্মৃতিচারণ করেন তিনি।

আগে প্রায় প্রতিবছর গ্রামের বাড়ি যেতেন ড.

ইউনূস। ২০১৭ সালের পরে আর যাওয়া হয়নি। দীর্ঘ আট বছর পর বাড়ি গিয়ে দাদা-দাদির কবর জেয়ারত করেন তিনি। এর পর স্থানীয়দের সঙ্গে মিলিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টা খোশগল্পে মাতেন। চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষায় ছড়া, শ্লোক ও স্মৃতিচারণ করেন। শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর মুখে পুরোনো দিনের কথা শুনে উচ্ছ্বসিত গ্রামবাসীও।

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার ছোটবেলার সব স্মৃতি এই গ্রামে। ছেলেমেয়েরা এখন বড় হয়ে গেছে; তাদের কাউকে আর চিনি না। অনেকে আছে; অনেক দিন তাদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হয় না।’ এ সময় আঞ্চলিক ভাষায় তিনি বলেন, ছোটবেলায় আমরা ছড়ার মতো বলতাম– ‘আবদুর রশীদ ঠেন্ডলের ঠাট/ নজু মিয়া হাট/ দুলা মিয়ার দাদার বাড়ি/ শোলক মিয়ার মোটরগাড়ি’।

তিনি বলেন, সে সময় আমাদের দাদারা মোটরগাড়ি নিয়ে বাড়ি আসতেন– এ কথা এখন চিন্তা করতেও ভিন্ন অনুভূতি কাজ করে! দেশে তো তখন মোটরগাড়ি কেউ চিনতও না। এখন সেসব কথা মনে পড়ছে। একের পর এক পরিবর্তন হচ্ছে। পরে শুনলাম– ‘নজু মিয়া হাট বলে শ’র অই গেইয়ে। শ’র বলে বিলেত অই গেইয়ে।’ এখন তো নজু মিয়া হাট শহর হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। আপনাদের শহর মনে হচ্ছে, আরও হবে।

গ্রামবাসীর উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে আপনাদের সবাইকে দেখে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন সভায় এসেছিলাম। তাদের বললাম, বাড়ির কাছে এসেছি; কোনো রকমে বাড়ির দিকে নিয়ে যেতে পার কিনা দেখ? এখন তো আমার নড়াচড়া করা মুশকিল, অনেক আয়োজন লাগে। সবার সঙ্গে দেখা হলো। আশা করি, ভবিষ্যতে আরও আসা-যাওয়া হবে। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

ড. ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন হাটহাজারীর শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামের নজু মিয়া সওদাগর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। সাত ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। জন্মভিটা বাথুয়া হলেও ড. ইউনূসের পরিবারের সদস্যরা অর্ধশতাব্দী ধরে নগরের পাঁচলাইশ থানাধীন নিরিবিলি নামক একটি ভবনে বসবাস করছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

গুগল লেন্সেও ব্যবহার করা যাবে জেমিনির ভাইরাল ন্যানো বানানা মডেল

গত মাসে জেমিনি এআই অ্যাপে ছবি সম্পাদনার নতুন এআই মডেল ‘ন্যানো বানানা’ যুক্ত করেছে গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ডিপমাইন্ড। বিভিন্ন তারকার সঙ্গে কৃত্রিমভাবে বাস্তবসম্মত সেলফি তোলার সুযোগ থাকায় অল্প সময়ের মধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে নতুন এআই মডেলটি। আর তাই এবার নিজেদের এআই মোড ও গুগল লেন্সেও ন্যানো বানানা মডেল ব্যবহারের সুযোগ চালু করেছে গুগল।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট নাইনটুফাইভগুগল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের মধ্যে যাঁরা সার্চ ল্যাবসের এআই মোডে অংশ নিয়েছেন, তাঁরা বর্তমানে এআই মোড ও গুগল লেন্সে ন্যানো বানানা মডেল ব্যবহার করতে পারছেন। ফলে তাঁরা গুগলের এআই মোডের পাশাপাশি গুগল লেন্সের মাধ্যমে সহজে এআইনির্ভর ছবি সম্পাদনার পাশাপাশি নতুন ছবি তৈরি করতে পারছেন।

নতুন এ সুবিধা চালুর পর এআই মোডের প্রম্পট বক্সের নিচের বাঁ পাশে একটি ‘প্লাস’ আইকন যুক্ত করা হয়েছে। প্লাস আইকনটিতে চাপ দিলে দেখা যাবে ‘গ্যালারি’, ‘ক্যামেরা’ ও ‘ক্রিয়েট ইমেজ’ নামের তিনটি অপশন। ‘ক্রিয়েট ইমেজ’ অপশন বেছে নিলে প্রম্পটে ‘ডেসক্রাইব ইউর ইমেজ’ বার্তা দেখা যাবে। এরপর বার্তা লিখে বা নিজের কোনো ছবি আপলোড করে তা সম্পাদনার পাশাপাশি নতুন ছবি তৈরি করা যাবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে ছবিগুলো ডাউনলোড ও শেয়ারও করতে পারবেন। গুগল লেন্সে ন্যানো বানানা এআই মডেল ব্যবহার করতে হলে প্রথমে ‘ক্রিয়েট’ ট্যাব নির্বাচন করতে হবে।

গুগলের তথ্যমতে, চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ন্যানো বানানা মডেল ব্যবহার করে ৫০ কোটির বেশি ছবি সম্পাদনা করা হয়েছে। জনপ্রিয় এআই মডেলটির মাধ্যমে এবার গুগল লেন্স বা এআই মোড থেকেও সহজে এআইনির্ভর ছবি সম্পাদনার পাশাপাশি নতুন ছবি তৈরি করা যাবে। তবে এআই মোড ও গুগল লেন্সে ন্যানো বানানা মডেল ব্যবহারের সুযোগ সব দেশের ব্যবহারকারীদের জন্য চালু করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে গুগল আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ