সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদে ‘মব সৃষ্টি করে’ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজিবির সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির। আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জাকারিয়া কাদির বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জাদুকাটা নদে ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে কিছু কুচক্রী মহল এবং অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করছেন। এতে ব্যাপকভাবে নদীর পাড় ভাঙনের ফলে তীরের দিকে লাউড়েরগড় এলাকায় বিজিবির বিওপিসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দারা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা আছে।

আরও পড়ুনসুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু লুট ঠেকাতে বাঁশের বেড়া১৩ অক্টোবর ২০২৫

বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে জাদুকাটা নদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। মূল সমস্যা হচ্ছে, ইজারার সীমানা নির্ধারণের পর কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও কুচক্রী মহল দখল করা খাসজমি থেকে বালু উত্তোলনের পরিকল্পনা নেয়। পরে দেড় থেকে দুই হাজার নৌকা নিয়ে ১৫–২০ হাজার শ্রমিক একসঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন। বিশেষ করে গভীর রাতে ইজারাবহির্ভূত এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজিবি এককভাবে প্রাণপণ চেষ্টা করছে যেন অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা যায়।

বিজিবি জানায়, জেলা প্রশাসনের সহায়তায় নিয়মিত টাস্কফোর্সের অভিযান চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি লাউড়েরগড় বিওপিতে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য ও নৌযান মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সেটি অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের নৌকা ও শ্রমিকের তুলনায় অনেক কম। ব্যাপারটি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই সঠিক সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় দুটি বালুমহাল তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদে অবস্থিত। মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় গত পাঁচ মাস এ দুটি মহালে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকার পর চলতি মাস থেকে আবার বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। কিন্তু শুরুতেই নদের সীমান্তবর্তী লাউড়েরগড় এলাকায় ইজারা সীমানার বাইরে গিয়ে একটি পক্ষ জোর করে বালু উত্তোলন করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদের পাড় কেটে বালু উত্তোলনের ফলে আশপাশের গ্রামসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।

এই দুটি বালুমহাল এবার জেলা প্রশাসন থেকে প্রায় ১০৭ কোটি টাকায় ইজারা দেয়। কিন্তু মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় ইজারাদারদের মহাল বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। চলতি মাসে প্রশাসন ইজারাদারদের মহাল দুটি বুঝিয়ে দিলে সেখানে আবার বালু উত্তোলন শুরু হয়।

আরও পড়ুনযাদুকাটা নদে নিলামবহির্ভূত এলাকা থেকে বালু তোলার অভিযোগ২০ মে ২০২১.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

রাকসু: আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতা আমান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন উপলক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগাঠনিক সম্পাদক মো. আমানউল্লাহ আমান।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাকে আড্ডা দিতে দেখা যায়।

আরো পড়ুন:

‘রাকসু নির্বাচনে গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে সাইবার ইউনিট’

রাকসু নির্বাচন: একটি ভোটের জন্য ১৪ সেকেন্ড বরাদ্দ

সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে বসে রয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান। তার সঙ্গে রাবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ফার্সি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তাহের রহমানসহ শাখা ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে অবস্থান করতে দেখা যায়।

এদিকে, রাকসুর নির্বাচন উপলক্ষে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া কয়েকদিন ধরে হলগুলোতে যাতে কোনো বহিরাগত না থাকে, সেজন্য তল্লাশি কার্যক্রম চালায় নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান বলেন, “আশ্চর্য! সে কীভাবে ভেতরে ঢুকল, তা আমাদের জানা নেই। প্রতিটি গেটে চেকপোস্ট রয়েছে, আমরা কঠোর নিরাপত্তা দিচ্ছি। তারপরও কীভাবে সে প্রবেশ করল, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”

রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, “উনি ঢুকলেন কীভাবে? উনার তো আসার কথা না এখানে। আচ্ছা, বিষয়টা আমি দেখছি।”

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রদল নেতা আমানউল্লাহ আমানকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলে তিনি সাড়া দেননি। হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ