Prothomalo:
2025-10-15@09:21:40 GMT

টনসিলের উপসর্গ ও অস্ত্রোপচার

Published: 15th, October 2025 GMT

আমাদের দেশে অনেকেই টনসিলের দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণে ভুগে থাকেন। টনসিলের প্রদাহকে ‘টনসিলাইটিস’ বলা হয়। সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার কারণে টনসিলের প্রদাহ হয়। টনসিলের সংক্রমণে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়। বিশেষত স্কুলগামী শিশুরা এর বড় ভুক্তভোগী। এ জন্য প্রায়ই শিশুদের স্কুল কামাই হয়।

উপসর্গ

টনসিলে প্রদাহের প্রধান উপসর্গ হলো গলায় ব্যথা। কেউ কেউ বছরে অনেকবার টনসিলের প্রদাহে আক্রান্ত হন। অনেকেই বছরের পর বছর টনসিলের প্রদাহে ভুগে থাকেন। অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে টনসিল ও গলার লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে যায়, অনেক শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়।

দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের ফলে টনসিল এত বড় হয়ে যায় যে শ্বাসপ্রশ্বাসে ও খেতে অসুবিধা হয়। বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বেশি হয়। দীর্ঘমেয়াদি টনসিলের প্রদাহে রিউমেটিক ফিভার এবং হার্ট ও কিডনিতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। সর্বোপরি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি টনসিলের প্রদাহে রিউমেটিক ফিভার এবং হার্ট ও কিডনিতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

কখন অস্ত্রোপচার করাবেন

টনসিলের তীব্র প্রদাহ ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি টনসিলের প্রদাহে যাঁদের বছরে চার–পাঁচবারের বেশি সংক্রমণ হয় বা বছরের পর বছর ভুগে থাকেন, তাঁদের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। টনসিল বড় হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসে অসুবিধা, রাতে ঘুমের ব্যাঘাত, টনসিলে ফোড়া, হঠাৎ একদিকের টনসিল অনেক বড় হলে যদি ক্যানসার সন্দেহ হয়, টনসিলে টিবি বা অন্যান্য কারণে টনসিল অস্ত্রোপচার করাটা দরকার।

অস্ত্রোপচারের যত পদ্ধতি

টনসিল অপারেশনের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। যেমন ডিসেকশন মেথড, ইলেকট্রোকোটারি, লেজার, কোবলেশন, আলট্রাসনিক ইত্যাদি। ডিসেকশন মেথড বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। এ পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারের সময় কিছু রক্তপাত হয় এবং রক্তনালি সেলাই করে দিতে হয়। লেজার, কোবলেশন ও আলট্রাসনিক উপায়ে টনসিলের অস্ত্রোপচার অনেক উন্নতমানের কিন্তু ব্যয়বহুল। এতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ শল্যবিদ (সার্জন) প্রয়োজন।

কোবলেশন টনসিল অস্ত্রোপচারের সুবিধা

এই অস্ত্রোপচার সেলাইবিহীন ও রক্তপাতহীন। ব্যথা তুলনামূলক কম। নিরাপদ ও আধুনিক পদ্ধতি। অত্যন্ত কম সময় লাগে। অস্ত্রোপচারের পরই রোগী খেতে পারেন। সকালে অস্ত্রোপচার করা হলে সন্ধ্যার মধ্যে রোগী বাসায় ফিরতে পারবেন। শুধু টনসিলেরই অস্ত্রোপচার করতে হয়। এ ক্ষেত্রে টনসিলের আশপাশের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। দ্রুত আরোগ্য লাভ এর একটি বড় সুবিধা। রোগী দ্রুতই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। বর্তমানে বাংলাদেশে দক্ষ শল্যবিদেরা এ পদ্ধতিতে টনসিল অস্ত্রোপচার করতে সক্ষম।

ডা.

এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপসর গ

এছাড়াও পড়ুন:

চুলকানি শুধু অ্যালার্জি বা চর্মরোগ নয়, হতে পারে মারাত্মক সব রোগের লক্ষণ

লিভারের রোগ

লিভার বা যকৃতের দীর্ঘমেয়াদি রোগ হলে চুলকানি হয়। কোলেস্ট্যাটিক লিভার ডিজিজ যেমন অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস, প্রাথমিক পিত্তনালির প্রদাহ বা প্রাইমারি বিলিয়ারি কোলানজাইটিস, প্রাইমারি স্ক্লেরসিং কোলানজাইটিস রোগেও চুলকানি অন্যতম প্রধান উপসর্গ। পিত্তরস ও পিত্ত অ্যাসিড রক্তে জমে ত্বকের স্নায়ু উত্তেজিত করে, এই চুলকানি রাতে বেশি হয়।

কিডনির রোগ

দীর্ঘমেয়াদি রোগ বিশেষ করে ডায়ালাইসিস করতে হয় এমন রোগীদের মধ্যে এ রকম চুলকানি দেখা যায়। সাধারণত এটি সারা শরীরে হয়। বেশি হয় রাতে। রাতের ঘুম নষ্ট করে।

রক্তের রোগ

রক্তশূন্যতায় শরীর চুলকাতে পারে, বিশেষ করে আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতায়। পলিসাইথেমিয়া নামে রক্তের এক বিশেষ রোগ, যেটিতে রক্তের হিমোগ্লোবিন ও লোহিত রক্তকণিকা বেড়ে যায়, তাতেও চুলকানি হতে পারে। গোসলের পর বা গরম পানিতে চুলকানি এটির একটি সাধারণ উপসর্গ। রক্তের ক্যানসারের ক্ষেত্রেও অনেক সময় চুলকানি প্রাথমিক সতর্কসংকেত। অন্যান্য কিছু রক্তের ক্যানসারেও চুলকানি হতে পারে।

আরও পড়ুনওষুধেও চুলকানি পুরো নিরাময় হচ্ছে না?২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪আরও যেসব রোগের লক্ষণ

ডায়াবেটিসে চামড়া শুষ্ক হয়। শুষ্ক ত্বকে চুলকানি হতে পারে। ডায়াবেটিসে বারবার ছত্রাক বা ফাঙ্গাসজনিত সংক্রমণ হতে পারে।

থাইরয়েডের রোগে বিশেষ করে হাইপোথাইরয়েডিজম হলে চুলকানি দেখা দিতে পারে। ত্বকের শুষ্কতার জন্য এটি হয়।

গর্ভাবস্থায় কারও কারও পিত্তরস জমে শরীর চুলকায়, বিশেষ করে হাত-পায়ের তালুতে চুলকানি বেশি থাকে।

এইডস হলে বা এইচআইভি সংক্রমণে শরীর চুলকাতে পারে।

হেপাটাইটিস সি ভাইরাস সংক্রমণে চুলকানির সঙ্গে ভাসকুলাইটিস থাকতে পারে।

কৃমি হলে বা পরজীবীর সংক্রমণেও চুলকানি দেখা দেয়।

স্নায়ুজনিত কিছু রোগ যেখানে প্রান্তিক স্নায়ু ও সংবেদনে সমস্যা হয়, সেগুলোতে চুলকানি হতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, ডিপ্রেশনে চুলকানি দেখা যায়।

আরও পড়ুন বিশেষ স্থানে চুলকানি হলে কী করবেন১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪মনে রাখতে হবে

চুলকানির কিছু বৈশিষ্ট্য যা জটিল রোগের দিকে ইঙ্গিত করে। এর মধ্যে অন্যতম সারা শরীর চুলকানো।

কোনো দৃশ্যমান ত্বকের চিহ্ন বা র‍্যাশের অনুপস্থিতি, রাতে চুলকানি বেড়ে যাওয়াও খারাপ লক্ষণ।

নির্দিষ্ট সিস্টেমিক উপসর্গের সঙ্গে থাকা যেমন জন্ডিস, কিডনি ফেইলিউর, ওজন কমা, রক্তশূন্যতা, লিম্ফনোড ফোলা ইত্যাদি।

চুলকানি শুধু অ্যালার্জি বা চর্মরোগ নয়, লিভার, কিডনি, রক্ত, হরমোন, ইনফেকশন ও স্নায়ুজনিত সমস্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে।

আরও পড়ুনসারা শরীরে চুলকানি, অ্যালার্জি না স্ক্যাবিস বুঝবেন কীভাবে?১৩ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুলকানি শুধু অ্যালার্জি বা চর্মরোগ নয়, হতে পারে মারাত্মক সব রোগের লক্ষণ