গাজার বিধ্বস্ত শহরগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও শক্ত করছে হামাস। গতকাল মঙ্গলবার সশস্ত্র গোষ্ঠীটি গাজায় অভিযানে নেমেছে। বিরোধীদের সহযোগিতা করেছে, এমন অভিযোগে কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে তারা।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসকে নিরস্ত্র করার অঙ্গীকার করেছেন। গাজা যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের একটি পরিকল্পনায় ফিলিস্তিন ভূখণ্ডটিতে এখন যুদ্ধবিরতি চলছে।

গত শুক্রবার থেকে গাজায় এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, সোমবার হামাস অন্তত ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। আরও চার জিম্মির মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গাজায় আটক আরও চারজন বন্দীর মরদেহ ইসরায়েলে আনা হয়েছে।

এদিকে হামাস তাদের আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চোখ বাঁধা ও মাটিতে হাঁটু গেড়ে থাকা আটজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে রাস্তায় গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। হামাস ওই ব্যক্তিদের ‘বিরোধীদের সহযোগী ও অপরাধী’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

হামাসের একটি নিরাপত্তা ইউনিট গাজায় অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী ও অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। হামাসের অভিযোগ, এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর কেউ কেউ ইসরায়েলের সমর্থন পেয়েছে।

ভিডিও ফুটেজটি খুব সম্ভবত সোমবার সন্ধ্যার। এই ভিডিও থেকে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামাসের বিভিন্ন নিরাপত্তা ইউনিট এবং অন্যান্য সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

গাজা নগরী থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর গাজার উত্তরাঞ্চলে হামাস সরকারের কালো মুখোশধারী সশস্ত্র পুলিশ আবার রাস্তায় পাহারা দিতে শুরু করেছে।

আমরা তীব্র গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি এবং নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এটি সমর্থন করি।.

...মোহাম্মদ, গাজার বাসিন্দা

সোমবার যখন ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্ত হওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের বাসে করে গাজায় আনা হয়, তখন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসাম ব্রিগেডের যোদ্ধারা জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করেছিল।

আরও পড়ুনইসরায়েলের আরও ৪ জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করল হামাস৩ ঘণ্টা আগেগাজায় একটি সড়কে কয়েকজনকে গুলি করে হত্যার একটি ভিডিও হামাস প্রকাশ করেছে। ছবিটি ওই ভিডিও থেকে নেওয়া

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সশস ত র গ ষ ঠ ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

দাউদকান্দিতে মৎস্য চাষ প্রকল্পের কার্যালয়ে ডাকাত দলের হামলা, ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে গৌরীপুর প্লাবনভূমির মৎস্য চাষ প্রকল্পের কার্যালয়ে ডাকাত দল হানা দিয়েছে। এ সময় এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হন। আমিরাবাদ বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন এলাকায় গত সোমবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।

আহত আমির হোসেনকে (৪৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি গৌরীপুর ইউনিয়নের মাইথারকান্দি গ্রামের আবদুল আউয়ালের ছেলে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ডাকাত দল হামলা চালিয়ে ১০ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।

গৌরীপুর প্লাবন ভূমির মৎস্য চাষ প্রকল্পের ইজারাদার নুরু মিয়া সাংবাদিকদের জানান, সোমবার রাতে মৎস্য প্রকল্পে মাছ ধরার কার্যক্রম চলছিল। মৎস্য প্রকল্পের কার্যালয়ে আসা ২০ জনের বেশি পাইকার নগদ টাকায় মাছ কিনে নিয়ে যান। বকেয়া টাকাসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকার দেনদেন হয়। কিছু টাকা রাতেই পাওনাদারদের দেওয়া হয়। দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ৮ থেকে ১০ জন মুখোশ পরে অস্ত্র নিয়ে পিকআপ ভ্যানে করে মৎস্য চাষ প্রকল্পের কার্যালয়ে হামলা চালায়। কার্যালয়ে ৩০ জনের বেশি মৎস্যচাষি, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক ছিলেন। তাঁদের মারধর করে ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় ডাকাতেরা। বাধা দিলে আমির হোসেনকে গুলি করে ডাকাত দল।
আহত আমির হোসেনকে প্রথমে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

হাসপাতালের চিকিৎসক নয়ন দে প্রথম আলোকে বলেন, আহত আমির হোসেনের বাঁ ঊরুসহ একাধিক স্থানে গুলি লেগেছে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ আমির হোসেনের ভাই বাদশা মিয়া জানান, ডাকাত দল শর্টগান দিয়ে গুলি ছোড়ে। মৎস্য চাষ প্রকল্পের কার্যালয়ে আমির হোসেনের বাঁ ঊরুতে একাধিক গুলি লাগে। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দাউদকান্দি মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্ত করা হচ্ছে। মৎস্য প্রকল্প নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্বের জের আছে কি না, তা–ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডাকাতি ও গুলিবিদ্ধের ঘটনায় থানায় এখনো অভিযোগ দায়ের করেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ