দুর্গাপূজা যাতে শান্তিপূর্ণ না হতে পারে, সে জন্যই খাগড়াছড়ির ঘটনা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 1st, October 2025 GMT
শারদীয় দুর্গাপূজা যেন শান্তিপূর্ণভাবে না হতে পারে, সে জন্যই খাগড়াছড়িতে ‘সহিংস ঘটনা ঘটানো’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, কিছু সন্ত্রাসী চেষ্টা করেছিল পূজা যাতে ভালোভাবে অনুষ্ঠিত না হয়। কিন্তু সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড প্রতিহত করে দেওয়া হয়েছে। পাহাড়েও পূজা ভালোভাবে হচ্ছে।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে গত শনিবার খাগড়াছড়িতে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় জুম্ম ছাত্র–জনতা। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত রোববার গুইমারার রামেসু বাজারে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছিল স্থানীয় একটি পক্ষ। এ সময় গুলিতে তিন পাহাড়ির মৃত্যু হয়। খাগড়াছড়িতে মঙ্গলবারও সারা দিন সড়ক অবরোধ করে জুম্ম ছাত্র-জনতা। পরে রাত ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
এমন পরিস্থিতিতে ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘খাগড়াছড়ির গুইমারা এলাকায় একটা ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্য ছিল দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে যেন হতে না পারে। কিছু সন্ত্রাসী চেষ্টা করেছিল পূজা যাতে ভালোভাবে অনুষ্ঠিত না হয়। কিন্তু সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড প্রতিহত করে দেওয়া হয়েছে।
পাহাড়েও পূজা ভালোভাবে হচ্ছে। সন্ত্রাসীরা সব জায়গায় চেষ্টা করবে। তাদের দেশে ও দেশের বাইরে কিছু মদদদাতা রয়েছে। তাদের বিষয়ে আপনারা সতর্ক থাকবেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিছু সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দুর্গাপূজায় আপনারা সব সময় সত্যি সংবাদ প্রচার করেন। কেউ যদি কোনো অসত্য সংবাদ দেয়, তা যেন প্রকাশ করা না হয়। যাচাই না করে কোনো সংবাদ দেবেন না। নতুন একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সঠিক সংবাদ সংশ্লিষ্টরা দিতে পারবেন।’
উপদেষ্টা বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। তাই সবাইকে এর পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। এখানে যেন কোনো ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেউ যেন জুতা পায়ে মণ্ডপে না ওঠে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শাটডাউনের বিপক্ষে জনজীবন
আওয়ামী লীগের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায় জনজীবনে তেমন কোনো চাপ সৃষ্টি হয়নি।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখারপুল, সচিবালয়, জিপিওসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে- যান চলাচল স্বাভাবিক, মানুষের চলাচল স্বাভাবিক এবং বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডও অন্যান্য দিনের মতোই চলছে।
আরো পড়ুন:
ঢাবি শিক্ষক এরশাদের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি ছাত্র ফ্রন্টের
ঢাবিতে কৃত্রিম বুদ্ধমত্তা-বিষয়ক জাতীয় প্রতিযোগিতা
সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার আধিক্য যেমন লক্ষ্য করা গেছে, বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীও দেখা গেছে। কোথাও যান সংকট হয়নি, বরং কিছু বাসে বাড়তি যাত্রীর চাপ ছিল।
গুলিস্তানে এক বেসরকারি অফিসকর্মী রিফাত হোসেন বলেন, “শাটডাউন বলে আজকে কিছুই বুঝলাম না। প্রতিদিন যেমন বের হই, আজও ঠিক তেমনই বের হয়েছি। রাস্তায় কোনো সমস্যা দেখিনি।”
চানখারপুলে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ মাহমুদা আক্তার বলেন, “শাটডাউনের নামে মানুষকে ভয় দেখানো ঠিক না। বাস কম হলেও চলাচল পুরোপুরি থেমে যায়নি। আমরা স্বাভাবিকভাবেই অফিসে যাচ্ছি।”
ঠিকানা পরিবহন শ্রমিক শহীদুল ইসলাম বলেন, “শাটডাউন ডেকেছে শুনেছি, কিন্তু রাস্তায় কোনো প্রভাব নেই। পুলিশের বাড়তি অবস্থানও দেখি নাই। গাড়ি চলছে, যাত্রীও আছে।”
সচিবালয়ের কাছে একজন সরকারি চাকরিজীবী হাসিবুল করিম বলেন, “শাটডাউনের মতো কর্মসূচি কখনোই জনস্বার্থের পক্ষে নয়। এতে ব্যবসার ক্ষতি হয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়। আজকে যানচলাচল প্রতিদিনের মতোই।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক
নিষিদ্ধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সতর্ক উপস্থিতি বিশেষভাবে দেখা যায়নি। নিয়মিত দায়িত্বপালন ছাড়া আলাদা কোনো প্রস্তুতি চোখে পড়েনি।
শাটডাউনের বিপক্ষে জনমতই শক্তিশালী
সরেজমিন চিত্র, সাধারণ মানুষের বক্তব্য এবং বিভিন্ন পরিবহন সংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট- রাজধানীবাসী শাটডাউনের পক্ষে নয়। বরং জনজীবন স্বাভাবিক রাখার পক্ষেই তাদের মত।
রাজধানীর ৩৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, ব্যস্ত সকাল, মানুষের স্বাভাবিক আনাগোনা এবং চলমান পরিবহন কার্যক্রম প্রমাণ করেছে- শাটডাউন ঢাকার জনজীবনে চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি বরং জনগণ নিষেধাজ্ঞামূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থানই দেখিয়েছে।
ঢাকা/আসাদ/ফিরোজ