বন্দরে চাঞ্চল্যকর রাজিব হত্যা মামলায় ২ সহোদর গ্রেপ্তার
Published: 18th, May 2025 GMT
বন্দরে চাঞ্চল্যকর রাজিব হত্যা মামলার প্রধান আসামি আয়াত (২৮) ও সিফাত (২৩)'কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
গ্রেপ্তারকৃত ২ সহোদর বন্দর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের দেওয়ানবাগস্থ ছোটবাগ এলাকার মোস্তফা'র ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃতদের রোববার (১৮ মে) দুপুরে উল্লেখিত মামলা রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এর আগে গত শনিবার (১৭ মে) নারায়ণগঞ্জ'র ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকা হতে এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের তথ্য সূত্রে জানাগেছে, গত ৯ অক্টোবর, ২০২৪ ইং সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে বন্দর উপজেলার ছোটবাগ এলাকায় রাজিব হোসেন জয় (৩৪) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত রাজিব মদনপুরস্থ দেওয়ানবাগ পূর্ব পাড়ার হোসেন মাতবরের ছোট ছেলে। সে গার্মেন্টসে চাকুরি করত।
মামলার তথ্য সূত্রে জানা যায় যে, একই গ্রামের মোস্তফার ছেলে আয়াত ও সিফাত, মৃত রমজানের ছেলে মিরাজ, জাহাঙ্গীরের ছেলে মেহেদী ও চাঁনপর গ্রামের আব্দুল মতিন কানা মতিনের ছেলে জীবনসহ অন্যান্য বিবাদীদের সাথে ভিকটিম রাজিবের সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধসহ শত্রুতা চলে আসছিল।
ঘটনার দিন ভিকটিম মোঃ রাজিব হোসেন জয় মদনপুর বাজার হতে রিক্সা যোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে ছোটবাগস্থ সমাজ বিজ্ঞান বিল্ডিং এর সামনে রাস্তায় পৌছলে ওই সময় মেহেদী ও নিলয় ভিকটিমকে ফোন করে ছোটবাগ জনৈক হযরত আলীর বসত বাড়ির সামনে রাস্তায় গিয়ে তাদের সাথে দেখা করতে বলে।
তাদের কথামত ভিকটিম রিক্সা যোগে সন্ধ্যা অনুমান ০৬:৫৫ ঘটিকার সময় বন্দর থানাধীন ছোটবাগ সাকিনস্থ জনৈক হযরত আলীর বসত বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছলে পূর্ব হতে ঘটনাস্থলে ওৎ পেতে থাকা সকল বিবাদীগন তাদের পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভিকটিমের চলার পথ আটকিয়ে রিক্সা হতে জোর পূর্বক রাস্তায় নামিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে একে-অপরের সহায়তায় তাদের থাকা চাকু, সুইজ গিয়ার, চাইনিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে তাকে এলোপাথারি কুপিয়ে ও ঘাই মেরে বুকের ডান পাশের উপরের অংশে ছিদ্র যুক্ত জখম করে, ডান হাতের পেশিতে কাটা জখম করে, বাম হাতের পেশিতে কাটা রক্তাক্ত জখম করে।
কপালে কাটা রক্তাক্ত জখম করতঃ রাস্তার পাশে থাকা ইট দিয়ে ভিকটিমের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করিয়া মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং যে যার মত বীরদর্পে চলে যায়। এরই প্রেক্ষিতে নিহত ভিকটিম রাজিব হোসেন জয় এর পিতা বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামিদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা নজরদারি তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিএসসি, আদমজীনগর, নারায়ণগঞ্জ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল শনিবার (১৭ মে) নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন ফতুল্লা রেল স্টেশন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অত্র মামলার এজাহার নামীয় আসামি আয়াত ও সিফাতদ্বয়'কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র আইভীকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো আরও দুই মামলায়
কারাবন্দী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাসহ আরও দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম চৌধুরীর আদালতে শুনানি শেষে তাঁকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এর আগে আদালতে শুনানির জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানিতে গাজীপুর কাশিমপুর কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন সেলিনা হায়াৎ। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে করা মোট পাঁচটি মামলার মধ্যে তিনটিতে গ্রেপ্তার দেখানো হলো।
আদালত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদিন এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সেলিনা হায়াৎকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হত্যাসহ দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানানো হলে শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।
সেলিনা হায়াতের আইনজীবী এস এম সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ‘আইভী দলমত-নির্বিশেষে সবার জনপ্রিয় সাবেক মেয়র। তিনি আন্দোলনে কখনো মাঠে নামেননি। তাঁকে সব কটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। এতে আমাদের আইনিপ্রক্রিয়া চালাতে সহজ হবে।’
একটি মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। শামীম ওসমান আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছুড়লে বাদীর স্বামী রিকশাচালক তুহিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তুহিনের স্ত্রী আলেয়া আক্তার বাদী হয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলাটি করেন।
অন্য মামলার এজাহারে বলা হয়, একই দিন (২০ জুলাই) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। শামীম ওসমান আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হকার নাদিমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে তিনি বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই পা হাঁটু থেকে কেটে ফেলতে হয়। এ ঘটনায় নাদিমের বাবা দুলাল হোসেন বাদী হয়ে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর শামীম ওসমান ও তাঁর ভাতিজা আজমেরী ওসমান, সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।