ভয়ানকভাবে প্লাস্টিক দূষণের মুখে পড়ছে পৃথিবী। মানুষের মস্তিষ্ক, রক্ত, বুকের দুধের পাশাপাশি নাড়ি ও ধমনিতেও প্রবেশ করছে প্লাস্টিক কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক। মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে মানুষের শরীরে। নতুন এক গবেষণায় স্ট্রোক বা মিনিস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঘাড়ের রক্তনালিতে প্লাস্টিক কণার পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। আর তাই মাইক্রোপ্লাস্টিকের সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ঘাড়ের প্রধান ধমনিতে ফ্যাটি প্লাক জমতে দেখা যায়। সুস্থ ধমনির ব্যক্তিদের তুলনায় যাঁদের ঘাড়ের ধমনিতে প্লাক বেশি রয়েছে, তাঁদের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিকের ঘনত্ব বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব প্লাস্টিক কণা স্ট্রোকের জন্য একটি সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। যাঁরা স্ট্রোক বা মিনিস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এই পার্থক্য বেশি স্পষ্ট ছিল।

আরও পড়ুনইনজেকশনে যাচ্ছে মাইক্রোপ্লাস্টিক১৯ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী রস ক্লার্ক বলেন, অনেক বছর সময় নিয়ে প্লাস্টিক ভেঙে যায় এবং তা মাটি ও পানির সঙ্গে মিশে গিয়ে খাদ্যশৃঙ্খলে জমা হতে পারে। অনেকে মনে করেন, মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক শুধু প্লাস্টিকের পাত্র, কাটিং বোর্ড, প্যাকেজিং, পানির বোতল ও অন্যান্য প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ব্যবহার করলে তৈরি হয়। কিন্তু মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রধান উৎস হচ্ছে, আমাদের খাবার ও পানীয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, স্ট্রোক, মিনিস্ট্রোক বা রেটিনায় রক্তপ্রবাহে বাধার কারণে অস্থায়ী দৃষ্টিশক্তি হারানো ব্যক্তিদের শরীরে প্লাস্টিকের ঘনত্ব ৫০ গুণের বেশি ছিল। তবে মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের মাত্রা ও আকস্মিক প্রদাহের লক্ষণের মধ্যে কোনো যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ক্লার্ক বলেন, নতুন তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের জৈবিক প্রভাব কেবল হঠাৎ প্রদাহ সৃষ্টি করার চেয়ে জটিল ও সূক্ষ্ম। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাসকুলার নিউরোলজিস্ট কারেন এল ফুরি বলেন, ‘নতুন গবেষণার ফলাফল বেশ চমকপ্রদ। আজ পর্যন্ত আমরা মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের সংস্পর্শে যে স্ট্রোক হতে পারে, তা ঝুঁকির কারণ বলে বিবেচনা করিনি।’

সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে র‌্যাব পরিচয়ে প্রতারণা: বরখাস্ত হওয়া সেনা সদস্য আটক

পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে শিবচরের মোল্লার বাজার এলাকায় র‌্যাব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে বরখাস্তকৃত এক সেনা সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক মো. আশিকুর রহমান (৩২) রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার মালশিরা গ্রামের মো. মকবুল হোসেনের ছেলে।

বুধবার (২১ মে) সকালে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাচ্চর মোল্লার বাজার এলাকায় চেকপোস্ট চলাকালীন সন্দেহজনক আচরণ করায় তাকে আটক করে শিবচর হাইওয়ে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নকিব আকরাম।

আরো পড়ুন:

খুলনায় ১৯ মামলার আসামি সাগর গ্রেপ্তার

র‌্যাব পুনর্গঠন হচ্ছে, উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিটি

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি মাইক্রোবাস থামানোর পর আশিকুর রহমান কোমরে পিস্তল ও হাতে ওয়াকি-টকি নিয়ে নেমে নিজেকে র‌্যাব সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন এবং বলেন, “আমাদের গাড়িতে একজন আসামি রয়েছে।” তিনি পুলিশ সদস্যদের কাছে একটি আইডি কার্ডও প্রদর্শন করেন। তবে কথাবার্তা ও পরিচয়পত্র যাচাই করার পর ভূয়া বলে নিশ্চিত হলে তাকে তাৎক্ষণিক আটক করে পুলিশ। 

এ সময় তার কাছ থেকে একটি ধাতব খেলনা পিস্তল, একটি ওয়াকি-টকি, দুটি ভুয়া আইডি কার্ড, একটি ঘড়ি, একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে শিবচর হাইওয়ে পুলিশ তদন্তের জন্য পদ্মা দক্ষিণ থানায় নিয়ে আসে। তবে মাইক্রোবাসে থাকা বাকি পাঁচজন ব্যক্তি পালিয়ে যায়। 

এ বিষয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নকিব আকরাম হোসেন জানান, আটক ব্যক্তি সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন এবং তিনি ভুয়া র‌্যাব পরিচয়ে প্রতারণার চেষ্টা করছিলেন। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে এবং পলাতকদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/আকাশ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ