কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের প্রতি অনাস্থা শিক্ষক সমিতির
Published: 21st, May 2025 GMT
কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হিসেবে আখ্যায়িত করে তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে শিক্ষক সমিতি। দ্রুত তাকে পদত্যাগ করার দাবি জানিয়েছেন তারা। এছাড়া একজন যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার জন্যও সরকারের কাছে দাবি জানান শিক্ষকরা। এসব দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষক সমিতি। বুধবার দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সাধারণ সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় শিক্ষক সমিতি।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, ‘উপাচার্য দাপ্তরিক কাজের কথা বলে ১৯ মে ঢাকায় যান। শিক্ষকদের বলেছিলেন পরদিন ফিরে আসবেন। কিন্তু এখনও ক্যাম্পাসে ফিরে আসেননি। তিনি কুয়েটের যে গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন তা ফেরত পাঠিয়েছেন। তিন দিন ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও উপাচার্য কর্ণপাত করেননি। তিনি সবার দাবির প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়েছেন। উপাচার্য তার অনুপস্থিতিতে যাকে রুটিন ওয়ার্ক করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন তিনি বুধবার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে লিখিতভাবে তাকে জানিয়ে দিয়েছেন। এ অবস্থায় কুয়েট এখন অভিভাবক শূন্য।’
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষকদের রাস্তায় নামতে হবে, এটা খুবই দুঃখজনক। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শিক্ষকরা উপাচার্যের কক্ষ ও প্রশাসনিক ভবন চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের এক গ্রুপ এসে তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন। তবে গত ৩ মাস ধরে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের অপর গ্রুপ আপাতত চুপচাপ রয়েছে। তারা কী করবে তা বুঝে উঠতে পারছে না।
প্রসঙ্গত, ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পর থেকে কুয়েটে বন্ধ রয়েছে ক্লাস ও পরীক্ষা। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী। এখনও শুরু হয়নি নতুন ব্যাচের ক্লাস।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ