টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 26th, May 2025 GMT
টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) বিকেলে টাঙ্গাইল শহিদ মিনারের সামনে জেলা নারী ও শিশু যৌন নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
নারী ও শিশু যৌন নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের সদস্য মোনালিসা মুন্নির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফাতেমা রহমান বিথী, সদস্য আদিবা হুমায়রা, গণসংহতি আন্দোলন জেলার অন্যতম সংগঠক তুষার আহমেদ, শিক্ষক স ম আজাদ, সমাজকর্মী নাহার চাকলাদার, জেলা ছাত্র ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক প্রেমা সরকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘‘ধর্ষণ সংঘটিত হওয়ার পিছনে ক্ষমতা, বিচারহীনতা, প্রাতিষ্ঠানিক-সামাজিক শিক্ষার অভাবই দায়ী। আরো গুরুত্বপূর্ণ যে কারণ, সেটি হলো ধর্ষণের পর স্থানীয়ভাবে মীমাংসার প্রবণতা। আমরা বলতে চাই, ধর্ষণ কোনো মীমাংসার বিষয় নয়। এটি ফৌজদারি অপরাধ এবং আদালতেই এর বিচার করতে হবে।’’
আরো পড়ুন:
আবরার ফাহাদের নামে সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
নটরডেমের শিক্ষার্থী ধ্রুবর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি
বক্তারা আরো বলেন, ‘‘নারী ও শিশুর প্রতি যৌন সহিংসতা এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। নাগরপুরে ঘটে যাওয়া এই নির্মম ঘটনা শুধু একটি পরিবারের ওপর নিপীড়ন নয়, এটি সমগ্র সমাজের বিবেকের ওপর আঘাত।’’ তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনার তদন্ত দাবি করেন এবং ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ জনগণ অংশ নেয়। সমাবেশ থেকে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী বিদ্যালয়ের ওয়াশরুমে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনার পাঁচদিন পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান মিজানকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুল চলাকালীন ওই ছাত্রী ওয়াশরুমে যায়। এ সময় পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা মিজানুর রহমান দরজা বন্ধ করে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে, চাকু দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
ঢাকা/কাওছার/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি ইবি শিক্ষার্থীদের
পবিত্র ঈদুল আযহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে ২৩ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এ দীর্ঘ ছুটিতে আগামী ৪ জুন থেকে ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার বিষয়ে ভাবছে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। তবে ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় ‘ছুটির নামে হল বন্ধের প্রহসন মানি না’, ‘শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা আর না’, ‘ঢাবি, রাবি, জাবি পারলে ইবি কেন নয়?’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যা-কার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
আরো পড়ুন:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-এ পা
লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতি বছর ঈদে ইবির সব হল দীর্ঘদিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। যা শিক্ষার্থীদের জন্য চরম ভোগান্তির। ছুটিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কেনো বন্ধ করা হবে? বহু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত যারা ঈদুল আজহা উদযাপন করেন না। ছুটির সময় হলে বন্ধ থাকলে তাঁদের নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
তারা বলেন, ছুটির পরপরই ৪৭তম বিসিএসসহ একাধিক সরকারি ও বেসরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী হলে থেকে এসব পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হল বন্ধ হলে তাদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে। এছাড়া স্নাতকোত্তর ও গবেষণামূলক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চলমান থিসিস, গবেষণা প্রকল্প এবং ল্যাবরেটরি কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। হল বন্ধ হলে এসব কাজ অনিশ্চয়তায় পড়বে।
তারা আরও বলেন, ঈদের পরপরই বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল, মধ্যবর্তী মূল্যায়ন ও প্রেজেন্টেশন থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসেই সেগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের পড়াশোনায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য হল খোলা রাখা প্রয়োজন। দূরবর্তী অনেক শিক্ষার্থী বন্ধে ক্যাম্পাসে থাকেন। কিন্তু হল বন্ধ করে দিলে তাদের থাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর আগে বিভিন্ন সময়ে হল খোলা রাখার বিষয়ে আমাদের বলেছেন। কিন্তু এখন তারাই হল বন্ধ করে দিচ্ছেন। আমরা বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল খোলা রাখার দাবি জানাই।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে স্মারকলিপি নিয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের দাবি তুলে ধরেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কোষাধ্যক্ষ বলেন, “তোমরা যারা হলে থাকতে চাও, তারা তোমাদের হলের প্রধ্যক্ষকে চাহিদার কথা জানাও। তারা প্রাধ্যক্ষ পরিষদকে জানাবে এবং প্রাধ্যক্ষ পরিষদ আমাদের সঙ্গে বসবে। হল খোলা রাখার বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ ইতিবাচক হলে আমরাও ইতিবাচক।”
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল গফুর গাজী বলেন, “হল খোলা রাখার বিষয়ে আমরা পজিটিভ। ছুটিতে যারা হলে থাকতে চায়, তাদের লিখিতভাবে স্ব-স্ব হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন দিতে বলেছি। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষার্থী যদি থাকতে চায়, তাহলে আমরা হল খোলা রাখব।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী