কুমিল্লার সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম মারা গেছেন
Published: 31st, May 2025 GMT
কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ-সদস্য ও কুমিল্লা বিভাগীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল (অব.) এম আনোয়ারুল আজিম (৭৮) মারা গেছেন। (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। আজ শনিবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন, গুণগ্রাহী, শুভানুধ্যায়ীসহ দলীয় নেতাকর্মী রেখে যান।
বিএনপির এ বর্ষীয়ান ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ কর্নেল (অব.
কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া সমকালকে বলেন, আজ শনিবার মরহুমের পাঁচটি নামাজে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে এরই মধ্যে প্রথম জানাজা সকাল সাড়ে ১০টায় মহাখালী নিউ ডিওএইচএস, দ্বিতীয় জানাজা দুপুর ১২টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তৃতীয় জানাজা বাদ আছর লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, চতুর্থ জানাজা বাদ মাগরিব মনোহরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠ এবং পঞ্চম ও শেষ জানাজা বাদ এশা মরহুমের নিজ বাড়ি মনোহরগঞ্জ উপজেলার শরিফপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। পরে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
শোক প্রকাশ
এদিকে কর্নেল (অব.) এম আনোয়ারুল আজিমের মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এএফএম তারক মুন্সীসহ দলীয় নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কর্নেল (অব.) এম আনোয়ারুল আজিম ১৯৪৭ সালে মনোহরগঞ্জ উপজেলার শরিফপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তিনি বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। পরে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ২০০১ সালে সাবেক তৎকালীন কুমিল্লা-১০ আসন (বর্তমানে কুমিল্লা- ৯ আসন) থেকে বিএনপির মনোনয়নে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে তিনি বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এমপ ব এনপ র স র ল আজ ম কর ন ল
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লার ৪টি আসনের সীমানায় বড় পরিবর্তন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের ২৬১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৩৯টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (৩০ জুলাই) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
নতুন খসড়ায় কুমিল্লা জেলার সংসদীয় মানচিত্রে বড় পরিবর্তন এসেছে কুমিল্লা-১, কুমিল্লা-২, কুমিল্লা-১০ ও কুমিল্লা-১১ আসনে। বাকি সাতটি আসনের সীমানা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের খসড়া অনুযায়ী, কুমিল্লা-১ আসনে আগে দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলার কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে নতুন সীমানা অনুযায়ী এখন দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে গঠিত হয়েছে কুমিল্লা-১ আসন। তিতাস উপজেলাকে সরিয়ে সেখানে যুক্ত করা হয়েছে মেঘনা।
আরো পড়ুন:
সংসদ ভবনে প্রযুক্তির ছায়ায় নয়া অধ্যায়
সাত মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি জাফর
কুমিল্লা-২ আসনের পুরনো গঠন ছিল মেঘনা ও তিতাস উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে। কিন্তু খসড়া অনুযায়ী, সেখানে এখন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে হোমনা ও তিতাস উপজেলা। ফলে মেঘনা স্থান পরিবর্তন করে কুমিল্লা-১-এ স্থান পেয়েছে, আর হোমনা নতুন করে যুক্ত হয়েছে কুমিল্লা-২ তে।
কুমিল্লা-৯ আসন গঠিত হয়েছে লাকসাম ও লালমাই উপজেলা নিয়ে, যা পূর্বে ছিল লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা।
কুমিল্লা-১০ আসনে এসেছে সবচেয়ে বড় রদবদল। আগের কাঠামোতে সদর দক্ষিণ, লালমাই ও নাঙ্গলকোট উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল এই আসন। কিন্তু খসড়ায় সদর দক্ষিণ ও লালমাই বাদ পড়ে এখানে যুক্ত করা হয়েছে মনোহরগঞ্জ উপজেলা। ফলে নতুনভাবে কুমিল্লা-১০ এখন গঠিত হয়েছে নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে।
কুমিল্লা-১১ আসনেও বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে এটি ছিল একমাত্র চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নিয়ে। খসড়া অনুযায়ী এখন এতে যুক্ত করা হয়েছে সদর দক্ষিণ উপজেলা। ফলে কুমিল্লা-১১ গঠিত হয়েছে চৌদ্দগ্রাম ও সদর দক্ষিণ উপজেলা নিয়ে।
বাকি ৭টি আসনের সীমানায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। কুমিল্লা-৩ আসনে বরাবরের মতোই রয়েছে মুরাদনগর উপজেলা। কুমিল্লা-৪ আসনও অপরিবর্তিত থেকে দেবিদ্বার উপজেলা নিয়েই গঠিত হয়েছে। কুমিল্লা-৫ আসন আগের মতোই গঠিত হয়েছে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নিয়ে। কুমিল্লা-৬ আসন গঠিত হয়েছে আদর্শ সদর উপজেলা, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এবং কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা নিয়ে, যা পূর্বেও একই ছিল। কুমিল্লা-৭ আসনের সীমা অপরিবর্তিত থেকে কেবল চান্দিনা উপজেলাকেই অন্তর্ভুক্ত করেছে। কুমিল্লা-৮ আসন গঠিত হয়েছে বরুড়া উপজেলা নিয়েই, যার সীমানায় কোনো হেরফের হয়নি।
এই সীমানা পুনর্নির্ধারণে ভোটার সংখ্যা, ভৌগলিক সংযোগ এবং প্রশাসনিক সীমারেখা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তবে এই সীমানা নিয়ে যদি কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দল আপত্তি জানাতে চান, তাহলে ১০ আগস্ট পর্যন্ত লিখিতভাবে আবেদন করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে কমিশন চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই সীমানা পুনর্নির্ধারণকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষ করে কুমিল্লার মতো রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল জেলায় আসন পুনর্গঠনের ফলে নির্বাচনী কৌশল, দলীয় অবস্থান ও প্রার্থী মনোনয়নেও আসতে পারে দৃশ্যমান প্রভাব।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ৩৯টি আসনে আংশিক ও কিছু ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন এনে সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়ার বিরুদ্ধে কেউ আপত্তি জানাতে চাইলে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ থাকবে। আপত্তি যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত সীমানা ঘোষণা করা হবে।
ঢাকা/রুবেল/বকুল