মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে তুরস্কে বৈঠকে বসতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

গতকাল সোমবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প এই আগ্রহ প্রকাশ করলেন।

অবশ্য ইস্তাম্বুলের বৈঠকে উভয় পক্ষ বড় পরিসরের আরেকটি বন্দিবিনিময়ে সম্মত হয়েছে। গত মে মাসের মাঝামাঝি দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি আলোচনা হয়েছিল। সেটিও অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইস্তাম্বুলে।

চলতি মাসের শেষদিকে ইস্তাম্বুল বা আঙ্কারায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ট্রাম্পের মধ্যে তৃতীয় দফার বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

চলতি মাসের শেষদিকে ইস্তাম্বুল বা আঙ্কারায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে একটি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

পুতিন এখন পর্যন্ত এমন বৈঠকে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন। তবে জেলেনস্কি বলছেন, এমন বৈঠকে বসতে তিনি রাজি আছেন।

আরও পড়ুনআরও বন্দিবিনিময় ও নিহত সেনাদের মরদেহ হস্তান্তরে রাজি রাশিয়া-ইউক্রেন৯ ঘণ্টা আগে

সংকট নিরসনের উপায় খুঁজতে শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনাকে একমাত্র কার্যকর উপায় বলে মনে করেন জেলেনস্কি।

ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিত বলেছেন, তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দ্রুত সমাপ্তি চান ট্রাম্প। প্রয়োজনে তিনি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসতে আগ্রহী। তবে তিনি চান, রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশের নেতারা, উভয় পক্ষ একসঙ্গে আলোচনার টেবিলে আসুক।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নতুন করে যুদ্ধবন্দী বিনিময় এবং প্রায় ১২ হাজার নিহত সেনার মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে রাজি হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন।

আরও পড়ুনট্রাম্পের বক্তব্যে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের’ ঝুঁকি বাড়ছে২৮ মে ২০২৫

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যকার এই বৈঠকের প্রশংসা করেছেন। তবে গতকালের আলোচনায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব মেনে নিতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তবে মস্কো বলেছে, তারা যুদ্ধে স্বল্পমেয়াদি বিরতি নয়, দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চায়। অন্যদিকে কিয়েভ অভিযোগ করছে, পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী নন।

আরও পড়ুনরাশিয়া কেন ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়১৯ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র ত রস ক র প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

পর্যটক বরণে প্রস্তুত হাওর ও পাহাড়

হ্রদ ও পাহাড়ে ঘেরা পার্বত্য জেলা রাঙামাটি। প্রতি ঈদের ছুটিতে পর্যটকের পদচারণায় মুখর থাকে জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলো। এবার ঈদুল আজহায় লম্বা ছুটি থাকায় পর্যটকের ভিড় বাড়বে বলে আশা হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট মালিকদের। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। ইতোমধ্যে শহরের হোটেল-মোটেলের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কক্ষ বুক হয়ে গেছে।

এদিকে ঈদের ছুটিতে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ছুটবেন হাজারো পর্যটক। ছুটি শুরুর আগেই শত শত ভ্রমণপিপাসু বুকিং করে রেখেছেন পর্যটকবাহী নৌযান। জানা গেছে, টাঙ্গুয়ার হাওরের বিলাসবহুল ৯০টি বোটসহ দেশীয় বোটগুলোও ইতোমধ্যে বুক হয়ে গেছে। বোট পরিচালনায় থাকা সবাই ব্যস্ত পর্যটক বরণে।

হাউসবোট ও দেশীয় বোট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ১০ দিনের ছুটিতে বিপুলসংখ্যক পর্যটক টাঙ্গুয়ায় আসবেন– এমন আশা থেকে বোটগুলো নতুন রং, পর্দা, বিছানার চাদরসহ নানা কাজ করে রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। ৯ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত প্রায় সব বোটই অগ্রিম ভাড়া হয়ে আছে। 

সুনামগঞ্জ হাউসবোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরাফাত আকন্দ বলেন, আমাদের ৯০টি হাউসবোটের প্রায় সব বুকিং শেষ। এবার সব বোটেরই অন্যান্য প্রস্তুতির পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, পর্যটকদের জন্য লাইফ জাকেট ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা সন্তোষজনক করেই বোট ঘুরবে টাঙ্গুয়ার হাওরে। সমিতির পক্ষ থেকে থাকছে কঠোর মনিটরিং। 

তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের ছুটিতে টাঙ্গুয়ায় পর্যটকের ভিড় হবে চিন্তা করেই পুলিশকে আলাদাভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নৌ-পুলিশ এবং ট্যুরিস্ট পুলিশও কাজ করবে হাওরে। ঘাটগুলোতে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের মোবাইল ফোন নম্বরগুলো টাঙিয়ে দেওয়া হবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম বললেন, টাঙ্গুয়ায় ভ্রমণ নীতিমালা মেনে সব বোট নিয়ে ঢুকতে বলা হয়েছে।

এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা ছুটে যান রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। পর্যটন ব্যবসায় জড়িতরা জানান, এবার টানা ১০ দিনের ছুটিতে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন হোটেল ও মোটেলগুলোতে অগ্রিম ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বুকড দিয়েছেন পর্যটকরা। ইতোমধ্যে রাঙামাটি সরকারি পর্যটন মোটেলে ৮০ শতাংশ রুম বুক হয়েছে। রাঙামাটিতে পর্যটনের আকর্ষণীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে ঝুলন্ত সেতু, রাজ বনবিহার, জেলা প্রশাসনের বাংলো, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি, পুলিশের পলওয়েল পার্ক, আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক। টানা বৃষ্টিতে কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্য আরও বেড়েছে, তাই দেখতে ছুটবেন পর্যটকরা।

মেঘ ও পাহাড়ঘেরা সাজেকে রিসোর্ট ও কটেজের অধিকাংশ কক্ষ বুক হয়েছে। হোটেল মতিমহলের ব্যবস্থাপক চন্দন দাশ জানান, এবার ঈদের ছুটিতে তাঁর হোটেলে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ অগ্রিম কক্ষ বুক হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্য বাকি কক্ষও বুক হয়ে যাবে। সাজেক কটেজ-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেববর্মণ জানান, সাজেকের কটেজ ও রিসোর্ট টানা ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

রাঙামাটি সরকারি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, ঝুলন্ত সেতুসহ পর্যটন স্থানগুলো নতুন করে সাজানো হয়েছে। পর্যটকদের জন্য পর্যটন মোটেলে নতুন সংযোজন হয়েছে সানরাইস ইকো পার্ক। এ পার্কে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।

(তথ্য দিয়েছেন রাঙামাটি অফিস এবং সুনামগঞ্জ ও তাহিরপুর প্রতিনিধি)

সম্পর্কিত নিবন্ধ