একদিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানীসহ আশপাশের মানুষ গ্রামের বাড়ি ফিরছে। এতে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভোর থেকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাট এলাকায় ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে ভোগান্তির নৌপথ খ্যাত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে এবার ভোগান্তি নেই। স্বস্তিতেই ফেরি বা লঞ্চে করে নদী পার হয়ে গন্তব্যের দিকে ছুটছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল জেলার মানুষ। 

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয় জানায়, পদ্মাসেতু চালুর পর থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রী অর্ধেক হয়ে গেছে। তবে ঈদসহ যে কোনো উৎসবে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়ে যায়। এ নৌরুটে পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় বিগত কয়েকটি ঈদে যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছেছে। এবারের ঈদেও নদী পারাপারে ভোগান্তি নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার পান্না লাল নন্দী জানান, ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে নৌপথ পারাপারে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। সাধারণ যাত্রীদের পারাপারের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ২০টি ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ১৩টি লঞ্চ চলাচল করছে।  

আরো পড়ুন:

৩৫ মণের ‘কালো মানিক’ নিয়ে খালেদা জিয়ার বাড়ির পথে কৃষক সোহাগ

ঈদযাত্রা: উত্তরে গাড়ির চাপ, নেই যানজট, স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে মানুষ

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা ঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ জানান, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে পাঁচটি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। ঘাট এলাকায় ভিড় থাকলেও চাপ নেই। 

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ে বাণিজ্য শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক সালাম হোসেন জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে নৌবহরে পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় যাত্রী ও যানবাহন চালকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। পানি বৃদ্ধির কারণে পদ্মা নদীতে স্রোত বেড়েছে। ফলে ফেরির ট্রিপে সময় কিছুটা বেশি লাগছে।

তিনি আরো জানান, রাতভর যানবাহন ও যাত্রীর বেশ চাপ ছিল। তবে সকালের দিকে অপেক্ষামাণ সব যানবাহন পারাপার করা হয়েছে। এখন ঘাট এলাকায় পরিবহন বাস, ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি রানিংয়ে আছে। পশুবাহী ট্রাকগুলো ফেরিতে উঠে নদী পার হচ্ছে। নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। এবারের ঈদে যাত্রীরা স্বস্তিতে নৌপথ পারাপারে হতে পারছে বলে জানান তিনি। 
 

ঢাকা/চন্দন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ লতদ য় স বস ত

এছাড়াও পড়ুন:

দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত

তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর পন্টুনের কবজা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ঘাটটি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বর্তমানে দৌলতদিয়ায় শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু আছে। এতে যানবাহন পারাপারে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় ও ঘাট-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। সন্ধ্যার পর এর তীব্রতা আরও বাড়ে। রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহ পরান দৌলতদিয়ায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফেরিটি প্রচণ্ড বেগে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ধাক্কা দিলে কবজা ভেঙে যায়। এর পর থেকে ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এর আগে ২৩ আগস্ট থেকে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চারটি ঘাটের মধ্যে কেবল ৪ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন এবং জরুরি কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।

দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্টে (৩ নম্বর ঘাট) দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির নিরাপত্তা পরিদর্শক ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বলেন, গতকাল রাতে ফেরি শাহ পরান ঘাটে ভেড়ার সময় প্রচণ্ড ধাক্কায় পন্টুনের কবজা ভেঙে যায়। তখন থেকে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়।

এদিকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েক দিন ধরে সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় চালকসহ যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী গাড়ি আটকে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। আমাদের চারটি যাত্রীবাহী বাস চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছে। বাসগুলো ফেরিতে উঠতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।’

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে অনেক বেশি সময় লাগছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও কিছু জরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি আপাতত পার করা যাচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৭ জনকে বেলার চিঠি, বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধের অনুরোধ
  • ভাঙ্গায় আন্দোলন: দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি
  • দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত