দৌলতদিয়ায় ডুবোচরে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়লেন নদীতে, লঞ্চ ভাঙচুর, চালককে মারধর
Published: 6th, June 2025 GMT
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটগামী একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ নদীর ডুবোচরে ধাক্কা খেয়ে চার থেকে পাঁচজন যাত্রী নদীতে পড়ে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা লঞ্চের সামনের কাচ ভাঙচুর ও মাস্টার পলাশ মিয়াকে মারধর করেন। আজ শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে যাত্রী বোঝাই করে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে লঞ্চ এমভি ব্ল্যাকবার্ড। নদীর বেশির ভাগ অংশ পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটের বিপরীতে ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে লঞ্চটির পেছনের অংশ ঘুরে যায়। এ সময় চার থেকে পাঁচজন যাত্রী নদীতে ছিটকে পড়ে যান। এ কারণে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা লঞ্চের সামনের কাচ ভাঙচুর ও মাস্টারকে মারধর করেন। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিক নদীতে পড়ে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করে টেনে নৌকায় তোলেন। একজন যাত্রী সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে কয়েকজন অভিযোগ করেন। প্রায় ৩০ মিনিট পর বিকল্প আরেকটি লঞ্চের সাহায্যে ডুবোচর থেকে উদ্ধারের পর লঞ্চটি ঘাটে নোঙর করা হয়।
লঞ্চঘাটে কর্তব্যরত আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার বলেন, দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটের সামনে থাকা চর বর্ষায় তলিয়ে গেছে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই চরের সঙ্গে লঞ্চের ধাক্কা লাগলে কয়েকজন নদীতে পড়ে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা লঞ্চের সামনের কাচের অংশ ভেঙে ফেলেন ও মাস্টারকে মারধর করেন।
লঞ্চযাত্রী রাজবাড়ীর মো.
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের টার্মিনাল সুপারভাইজার শিমুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। তিনজন যাত্রী নদীতে পড়ে যাওয়ার সংবাদ পাই এবং তাঁদের উদ্ধার করা হয়। কোনো যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন, এমন খবর পাইনি।’ নিখোঁজ থাকলে অন্য যাত্রীদের কেউ বা তাঁর স্বজনেরা অবগত করতেন বলে মনে করেন তিনি। কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত লঞ্চটি ঘাটেই নোঙর করে রাখা হবে।
গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনমাস্টার আবদুর রহমান বলেন, পাঁচজন যাত্রী পদ্মা নদীতে পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ইতিমধ্যে চারজনকে উদ্ধার করেছেন। এর মধ্যে দুজনকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। এখনো একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন। তাঁর সন্ধানে ডুবুরি দল কাজ শুরু করেছে।
দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা লঞ্চের সামনের কিছু অংশ ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া চালককে মারধরের চেষ্টা করলে পুলিশ যাত্রীদের নিবৃত্ত করে। লঞ্চের চালক ও সহকারী নিরাপদ হেফাজতে আছেন। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে। এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রী নিখোঁজ নেই বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন দ লতদ য় র কর ন ড ব চর এ সময় ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ
ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করতে যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের অঙ্ক হতে পারে ৪৫০ কোটি ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে স্পেনের একটি আদালতের সর্বশেষ রায়ের পর এমন অবস্থান নিয়েছে রিয়াল।
সুপার লিগের পরিকল্পনা আটকে দিয়ে উয়েফা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করেছে বলে এর আগে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা উয়েফার আপিল বুধবার মাদ্রিদের প্রাদেশিক আদালত খারিজ করে দেন। একই আদালত স্প্যানিশ লিগ লা লিগা এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের আপিলও খারিজ করেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদালত সিজেইউ রায় দিয়েছিল, ২০২১ সালে উয়েফা ও ফিফা যে নিয়মগুলো প্রস্তাবিত সুপার লিগ ঠেকাতে ব্যবহার করেছিল, তা ইউরোপীয় আইনের পরিপন্থী। সেই রায় আপিলের পরও বহাল থাকায় রিয়াল মাদ্রিদ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই রায়ে ‘আনন্দিত’, কারণ এটি ‘ক্লাবের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দাবি করার পথ খুলে দিয়েছে।’
আপিল খারিজের পর বিবৃতি দিয়েছে উয়েফাও। ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থাটি বলেছে, সর্বশেষ এই রায় ‘২০২১ সালে ঘোষিত এবং ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত ‘সুপার লিগ’ প্রকল্পকে বৈধতা দেয় না। একই সঙ্গে এটি উয়েফার ২০২২ সালে গৃহীত ও ২০২৪ সালে হালনাগাদ করা বর্তমান অনুমোদন-নিয়মকেও খর্ব করে না, যেগুলো এখনো কার্যকর রয়েছে।’
আদালতের রায় বিস্তারিত পর্যালোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছে উয়েফা। আর লা লিগা জানিয়েছে, তারা আদালতের নতুন রায়কে সম্মান জানালেও এর গুরুত্বকে খাটো করে দেখছে। লিগ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘এই সিদ্ধান্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতা কাঠামো অনুমোদন বা সমর্থন করে না, আর ২০২১ সালে ঘোষিত প্রাথমিক প্রকল্প সম্পর্কেও কিছু বলে না, যা পরবর্তীতে আয়োজকেরা পরিবর্তন করেছে।’
২০২১ সালের এপ্রিলে স্পেন, ইতালি ও ইংল্যান্ডের ১২টি ক্লাবের অংশগ্রহণে চালু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সুপার লিগ প্রকল্প ভেস্তে যায়। প্রথমে ইংলিশ ক্লাবগুলো, পরে ধীরে ধীরে ইতালি ও স্পেনের ক্লাবগুলো সুপার লিগ থেকে সরে আসে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ এবং আয়োজক কর্তৃপক্ষ এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট এ নিয়ে উয়েফার সঙ্গে আলোচনা ও আইনি লড়াই চালিয়ে যায়।
মাদ্রিদভিত্তিক দৈনিক এএস জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ ও সুপার লিগের আয়োজক সংস্থা এ২২-এর আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রস্তুত করছেন। এই পত্রিকার সূত্রমতে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪,৫০০ মিলিয়ন ইউরো, যা আর্থিক ক্ষতি, সম্ভাব্য লাভ হারানো এবং ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে যোগ করা হচ্ছে।