কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি ভুয়া মামলা আদালতে উপস্থাপনের ঘটনায় যুক্তরাজ্যের এক উচ্চ আদালতের বিচারক আইনজীবীদের সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, যাচাই না করে এমন তথ্য আদালতে পেশ করলে তা শুধু বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য হুমকি ও আইনজীবীদের জন্যও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

হাইকোর্টের বিচারপতি ভিক্টোরিয়া শার্প সম্প্রতি দেওয়া এক রায়ে জানান, দুটি ভিন্ন মামলায় আইনজীবীরা এআই দিয়ে তৈরি তথ্য ব্যবহার করে এমন কিছু মামলার দৃষ্টান্ত আদালতে উপস্থাপন করেছেন, যেগুলোর বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। রায়ে বলা হয়, কাতার ন্যাশনাল ব্যাংকের সঙ্গে প্রায় ৯ কোটি পাউন্ড মূল্যের একটি আর্থিক বিরোধের মামলায় এক আইনজীবী আদালতে ১৮টি মামলার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেন। পরে তদন্তে দেখা যায়, প্রতিটি মামলাই ভুয়া। কোনোটিরই বাস্তবিক অস্তিত্ব নেই। ওই মামলার আবেদনকারী হামাদ আল হারুন আদালতে বলেন, তিনি ভুলবশত একটি উন্মুক্ত এআই টুল ব্যবহার করে এসব ভুয়া তথ্য তৈরি করেন এবং আদালতে উপস্থাপন করেন। এ জন্য দায় নিজের ওপর নিয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তাঁর নিয়োজিত আইনজীবী আবিদ হুসাইন এ বিষয়ে দায় নেননি।

বিচারপতি শার্প বলেন, এটা বিস্ময়কর যে একজন আইনজীবী তাঁর মক্কেলের সরবরাহ করা তথ্য যাচাই না করে আদালতে উপস্থাপন করেছেন। বাস্তবতা হলো, আইনি গবেষণার ক্ষেত্রে মক্কেলকে নয়, আইনজীবীকেই নির্ভরযোগ্য হতে হয়।

রায়ে আরেকটি ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়। লন্ডনের হারিঙ্গে বোরো কাউন্সিলের বিরুদ্ধে এক ভাড়াটের আবাসনসংক্রান্ত দাবির মামলায় আইনজীবী পাঁচটি মামলা উল্লেখ করেন, যেগুলো পরে ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। ওই মামলায় নিয়োজিত ব্যারিস্টার সারা ফোরে দাবি করেন, তিনি এআই ব্যবহার করেননি। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, তিনি কীভাবে এই ভুল তথ্য সংগ্রহ করেছেন, সে বিষয়ে তিনি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

এ দুই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের তাঁদের পেশাগত নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা। যদিও এখন পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিচারপতি শার্প রায়ে বলেন, আদালতে ভুয়া বা মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করা শুধু আদালত অবমাননার আওতায় পড়ে না, বিচারপ্রক্রিয়াকেও বিপথে পরিচালনার মতো গুরুতর অপরাধ করে। চরম ক্ষেত্রে এর শাস্তি হিসেবে আজীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।

শার্প আরও বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে উপকার বয়ে আনতে পারে। তবে এর ব্যবহার অবশ্যই পেশাগত দায়িত্ববোধ, নৈতিকতা ও যথাযথ নিয়ন্ত্রণের আওতায় হতে হবে। নইলে বিচারব্যবস্থার ওপর জনআস্থা ক্ষুণ্ন হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ব চ রপত আইনজ ব কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল 

বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”

গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।

তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড