আইসিসি হল অব ফেমে ধোনি, ইতিহাস গড়ে জায়গা পেয়েছেন পাকিস্তানি নারী ক্রিকেটারও
Published: 10th, June 2025 GMT
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের দুই দিন আগে ঘোষণা করা হলো আইসিসি হল অব ফেমে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হওয়া সাত ক্রিকেটারের নাম। এ পর্যায়ে জায়গা করে নেওয়া সাত ক্রিকেটার হলেন এম এস ধোনি, ম্যাথু হেইডেন, ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, হাশিম আমলা, গ্রায়েম স্মিথ, সারা টেলর ও সানা মীর।
গতকাল লন্ডনের অ্যাবে রোড স্টুডিয়োতে এক গালা ইভেন্টে নামগুলো ঘোষণা করেছেন আইসিসিপ্রধান জয় শাহ। এ তালিকায় থাকা সানা মীর পাকিস্তানের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে এ সম্মানে ভূষিত হলেন।
২০০৫ সালে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক হয় সানা মীরের। পাকিস্তান নারী দলের ১২০টি ওয়ানডের ৭২টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ১০৬ টি-টোয়েন্টির ৬৫টিতে নেতৃত্বের ভার ছিল তাঁর কাঁধে।
পাকিস্তানের হয়ে ২০১০ ও ২০১৪ সালে এশিয়ান গেমসে সোনার পদকও জিতেছেন সানা। আর ব্যক্তিগতভাবে ওয়ানডেতে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার হিসেবে তিনি নিয়েছেন ১৫১ উইকেট। ২০১৮ সালে বোলারদের ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে সবারও ওপরে ছিলেন সানা।
আরও পড়ুনপিসিবির হল অব ফেমে ইনজামাম, মিসবাহ, মুশতাক ও আনোয়ার১০ জানুয়ারি ২০২৫ইতিহাস গড়ে হল অব ফেমে জায়গা পাওয়া নিয়ে সানা মীর বলেছেন, ‘শৈশবে স্বপ্ন দেখতাম, একদিন আমাদের দেশে একটি নারী ক্রিকেট দল থাকবে। আর আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি।
সেই সব কিংবদন্তির পাশে আমাকে রাখা হয়েছে, যাঁদের আমি ব্যাট বা বল হাতে নেওয়ার অনেক আগে থেকে আদর্শ মনে করতাম। এটা এমন একটা মুহূর্ত, যা আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি। এই সম্মান পেয়ে আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আশা করি, এর প্রতিদান ক্রিকেটকে কোনো না কোনোভাবে ফিরিয়ে দিতে পারব।’
সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ধোনি দেশকে অসামান্য সব সাফল্য এনে দিয়েছেন। তাঁর হাত ধরেই ওয়ানডেতে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা পুনরুদ্ধার করে ভারত। ২০১১ সালে ওয়ানডেতে বিশ্বকাপ জেতার আগেই অবশ্য টি-টোয়েন্টিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।
২০০৭ সালের সেই ট্রফিও আসে ধোনির হাত ধরেই। দুই সংস্করণে বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি ধোনির নেতৃত্বে ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও জেতে ভারত। ব্যক্তিগতভাবে ওয়ানডেতে ৩৫০ ম্যাচ খেলে ৫০.
হল অব ফেমে জায়গা পেয়ে ধোনি নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন এভাবে, ‘আইসিসি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হওয়া একটি বড় সম্মান। এটি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের অবদানের স্বীকৃতি। কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের পাশে নিজের নাম থাকা এক অসাধারণ অনুভূতি। এটি এমন এক অর্জন, যা আমি সারা জীবন লালন করব।’
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ম্যাথু হেইডেন আগ্রাসী ও বিধ্বংসী ব্যাটিং স্টাইলের কারণে বেশ পরিচিত ছিলেন। ২০০৭ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে ট্রফি জেতানোর পথে ৩টি সেঞ্চুরি করেন হেইডেন। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে ৩০টি টেস্ট সেঞ্চুরি নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করেন বর্তমানে ধারাভাষ্যকার হিসেবে পরিচিত এই ক্রিকেটার।
হল অব ফেমে জায়গা পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুজন। একজন হাশিম আমলা, যিনি লম্বা সময় ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং স্তম্ভ ছিলেন। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ওঠা এই ব্যাটসম্যান ব্যক্তিগতভাবে অনেকগুলো মাইলফলকেরও মালিক। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি তাঁর (২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১১)। তিন সংস্করণ মিলিয়ে তাঁর সেঞ্চুরির সংখ্যা ৫৫।
আমলার দক্ষিণ আফ্রিকান সতীর্থ গ্রায়েম স্মিথ মাত্র ২২ বছর বয়সে অধিনায়কত্ব পেয়ে আলোড়ন তুলেছিলেন ক্রিকেটে। বাঁহাতি এই ওপেনার দক্ষিণ আফ্রিকাকে রেকর্ড ১০৯ টেস্টে নেতৃত্ব দেন, যার ৫৩টিতে দল জয়ও পেয়েছে। স্মিথ এখন পর্যন্ত একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি ১০০ ম্যাচের বেশি দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। টেস্টে রেকর্ড গড়া স্মিথ ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৫০ ম্যাচে।
আরও পড়ুনহঠাৎ অবসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ১ ঘণ্টা আগেসাবেক নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টোরির ক্রিকেট ক্যারিয়ারও অনবদ্য। তিনি সেই তিন ক্রিকেটারের একজন, যাঁরা টেস্টে ৪ হাজার রান করার পাশাপাশি ৩০০ উইকেটও নিয়েছেন। ২০০৯ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে রানার্সআপ হওয়া নিউজিল্যান্ড অধিনায়কও ছিলেন এই স্পিনিং অলরাউন্ডার।
হল অব ফেমে জায়গা পাওয়া অন্য ক্রিকেটার হলেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি নারী ক্রিকেটার সারাহ টেলর। ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম সেনানী ছিলেন টেলর। এ ছাড়া ঘরের মাঠে ২০১৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁর করা ৪৫ রান দলের জয়ে বড় ভূমিকাও রেখেছিল। উইকেটরক্ষক হিসেবে সব সংস্করণ মিলিয়ে তাঁর ডিসমিসাল সংখ্যা ২৩২।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প আইস স উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘কাম্বলিকে বলেছিলাম মেয়েদের কাছে যেয়ো না, সে বলেছিল আমি কিং’
ভারতের ক্রিকেটে বড় আক্ষেপের নাম বিনোদ কাম্বলি। কেউ কেউ তাঁকে শচীন টেন্ডুলকারের চেয়েও প্রতিভাবান মনে করতেন, শুরুটাও ছিল বেশ আশাজাগানিয়া। কিন্তু টেন্ডুলকার ক্রিকেট–বিশ্বে সর্বকালের সেরাদের একজন হয়ে উঠলেও কাম্বলিকে এখনকার ভারতীয় সমর্থকদের অনেকেই হয়তো চেনেন না।
প্রথম চার টেস্টে দুটি ডাবল সেঞ্চুরি এবং টেস্টে দ্রুততম ১০০০ রানে পৌঁছানো ব্যাটসম্যানদের একজন হয়ে ওঠা কাম্বলি কীভাবে ক্রিকেট-দুনিয়া থেকে ধীরে ধীরে মুছে গেলেন, এবার সেটির কিছুটা উঠে এসেছে যোগরাজ সিংয়ের কথায়। ভারতের এই সাবেক ক্রিকেটার বলেছেন, কাম্বলিকে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন থেকে সরে আসতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরামর্শ পাত্তা না দিয়ে ঔদ্ধত্য দেখিয়ে কাম্বলি বলতেন, ‘আমি কিং।’
কাম্বলি ও টেন্ডুলকার দুজনের বেড়ে ওঠা মুম্বাইয়ের একই স্কুল থেকে। ১৯৮৮ সালে মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে হ্যারিস শিল্ড টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে সেন্ট জেভিয়ার্সের বিরুদ্ধে সারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরের হয়ে তাঁরা দুজন তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬৬৪ রানের অপরাজিত জুটি গড়েছিলেন, যা সে সময় যেকোনো ধরনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল।
বিনোদ কাম্বলি যখন মাঠ মাতাচ্ছিলেন।