দর্শনার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির মিলনায়তনে ভাঙচুর
Published: 10th, June 2025 GMT
এক দর্শনার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার হামলা ও ভাঙচুর করেছেন স্থানীয় লোকজন। এর আগে হামলার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ‘শাহজাদপুরের সর্বস্তরের জনগণ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়।
৮ জুন রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে এক দর্শনার্থীকে আটকে মারধর করা হয়। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। মারধরের শিকার দর্শনার্থী মো.
স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসেন মো. শাহনেওয়াজ। ৮ জুন বিকেলে স্ত্রী ও ভাতিজাকে নিয়ে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে ঘুরতে যান তিনি। এ সময় দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য নিয়ে টিকিট দেওয়া হয়। কিন্তু মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের জন্য টাকা নিয়েও টোকেন দেওয়া হয়নি। পরে কাছারিবাড়ি দেখা শেষে বের হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের টিকিট দেখতে চান প্রধান ফটকে দায়িত্বরত কর্মচারী। কিন্তু মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা টোকেন দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় শাহনেওয়াজের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান ওই কর্মচারী। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে কাস্টোডিয়ানসহ কাছারিবাড়ির কর্মীরা গিয়ে কিল–ঘুষি মারতে মারতে শাহনেওয়াজকে প্রধান ফটকের সামনে থেকে কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। এরপর তাঁকে সেখানে আটকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। পরে খবর পেয়ে শাহনেওয়াজের অভিভাবক ও বিএনপির স্থানীয় নেতারা তাঁকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় শাহনেওয়াজ কাস্টোডিয়ানসহ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় ওই দিন রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এই হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে ‘শাহজাদপুরের সর্বস্তরের জনগণ’–এর ব্যানারে আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শাহজাদপুরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ানের কার্যালয়সহ মিলনায়তনের দরজার কাচ ভাঙচুর করেন।
খবর পেয়ে শাহজাদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুশফিকুর রহমান ও থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান ৮ জুনের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেন। তবে আজকের ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
শাহনেওয়াজের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছলাম আলী প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি মিলনায়তনে হামলা ও ভাঙচুরের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রব ন দ র ক ছ র ব ড় ম রধর র
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুর পাড় এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
আগামী দুই দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে সড়ক অবরোধ সহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে মানববন্ধন থেকে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এতে করে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের উভয় পাশে যানবাহন বন্ধ হয়ে যানজটের সৃস্টি হয়।
বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুস্ঠিত হয়। ১১ টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন আজ দুপুরের পর এলাকাবাসীর সাথে নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলবেন তাদের সমস্যার কথা শুনবেন এবং দ্রুতই তা সমাধানের জন্য কাজ করবেন।
এ সময় লালপুর পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মোসলেম উদ্দিন মুসা বলেন জলাবদ্ধতার কারনে মুসুল্লিরা নামাজ পরতে পারছেনা,কর্মজীবিরা কাজে যেতে পারছেনা,স্কুল -কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা,নোংরা পানির কারনে ঘরে ঘরে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পরেছে।
আমাদের কে আশ্বাস করেছিলো সেনাবাহিনী কতৃক যে পাম্প বসানো হয়েছিলো সেটা চালু হলে আমাদের দ্ঃূক কস্ট লাঘব হবে। কিম্ত সে পাম্প চালু হলেও আমাদের কস্ট শেষ হয়নি। সেই পাম্প আমাদের কোন কাজে আসেনি।
আমরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি দিয়েছি তারা এসে দেখেও গেছে কিন্ত আজো সমস্যার সমাধান করা হয়নি। বিগত সরকারের আমলে তখনকার চেয়ারম্যান, এমপি সাহেবের নিকট গিয়েছি। শামীম ওসমান এসে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। তা শুধু কথার কথাই ছিলো। কিন্ত কোন কাজে আসেনি।
ইউপি সদস্য মাঈনুদ্দিন জানায়, দীর্ঘদন যাবৎ আমরা এই সমস্যা আছি। মৃত মানুষের লাশ পযন্ত দাফন করতে পারছিনা। মসজিদের ভিতরে পানি নামাজ পরতে পারছিনা। রাস্তায় বের হতে পারছিনা।
আমাদের কোরবানী ঈদে পশু কোরবানী দিতে হয় ছাদের ওপরে নতুবা অন্য এলাকায় গিয়ে। এ সব কিছুই সরকারের সকল বিভাগের কর্মরত কর্তার জানে। কিন্ত শুধু আশ্বাস পেয়ে গেছি। কোন সমাধান পাইনি তাই আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে আমাদেরকে।
আমরা দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছি। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ফতুল্লায় এতো উন্নয়ন হয়, কিন্তু লালপুর পৌষাপুকুর পাড়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছেনা। আমরা চাই এই জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান হোক।
ব্যবসায়ী হাবিব জানায়, আমাদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাসিনা সরকারের আমলে আমাদের কোন কাজ হয় নাই। আমরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারক লিপি দিয়েছি। কিন্ত কোন কাজ হয়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোন প্রকার টেক্স আর দিবোনা।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, লালপুর- পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী, আজাদুর রহমান আজাদ,আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক রফিক, লালপুর আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সভাপতি মো. জনি, শামীম।