সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে সাবেক ছাত্রদল নেতার গুলির অভিযোগ, গুলিবিদ্ধ ১
Published: 10th, June 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্থানীয় লোকজন ও যুবদল নেতা–কর্মীদের হাতে আটক নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে এক ছাত্রদল নেতা গুলি ছুড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এক যুবদলকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম মামুন হোসেন (৩৫)। তিনি ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল হোসেনের ছোট ভাই। তিনি মাঝিপাড়া এলাকার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত জায়েদুল ইসলাম ওরফে বাবু নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে মাঝিপাড়া এলাকায় ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন ওরফে খোকাকে আটক করেন স্থানীয় লোকজন। সেখানে যুবদল নেতা বাদল হোসেনের অনুসারী কর্মী-সমর্থকেরাও ছিলেন। সাব্বিরকে আটকের পর বাদলের বাড়ির দিকে নেওয়ার সময় হামলা চালান সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম ও তার লোকজন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
যুবদল নেতা বাদল হোসেন বলেন, ‘বাবু ছাত্রলীগ নেতা খোকার পক্ষ নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে গুলি করে। আমার ছোট ভাইয়ের কানে গুলি লেগেছে। তারে নিয়া আমরা হাসপাতালে। সে রাস্তা দিয়া যাচ্ছিল।’ গুলিবিদ্ধ মামুন ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শুনেছি, ছাত্রলীগের খোকাকে লোকজন ধরছিল। সেখানে গোলাগুলি হইছে; কিন্তু আমি সেখানে ছিলাম না। আমি বাসায় ছিলাম।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রূপগঞ্জে বিএনপির কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জায়েদুল ইসলামের সঙ্গে বাদল হোসেনের সমর্থকদের পুরোনো দ্বন্দ্ব রয়েছে।
ঘটনার পর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম। তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক ওই ছাত্রলীগ নেতা সাবেক ছাত্রদল নেতা জায়েদুলের বন্ধু। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে আটকের পর জায়েদুল সেখানে লোকজন নিয়ে এসে গুলি ছুড়েছে বলে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।
মেহেদী ইসলাম আরও বলেন, এ ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আটক ওই ছাত্রলীগ নেতাকে স্থানীয় লোকজন গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তার পা ভেঙে গেছে। চিকিৎসার জন্য তাঁকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাত নয়টা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব ক ছ ত রদল ন ত স থ ন য় ল কজন জ য় দ ল ইসল ম ব দল হ স ন য বদল এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।