অভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর
Published: 12th, June 2025 GMT
হঠাৎ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনেতা সমু চৌধুরীর একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে দেখা গেছে, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের একটি মাজারে গামছা পরা অবস্থায় গাছের নিচে শুয়ে আছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ছবিটা ছড়িয়ে পড়লে অনেকে জানতে চান, কী হয়েছে অভিনেতার? ছবিটি আসল নাকি কোনো শুটিংয়ের?
বিষয়টি নিশ্চিত হতে ছোটপর্দার অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘ ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথম আলো। নিশ্চিত হওয়া যায়, ঘটনা সত্য—অসুস্থ অবস্থায় গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের একটি মাজার থেকে সমু চৌধুরীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে কথা হয় অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক অভিনেতা রাশেদ মামুন অপুর সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে আজ দুপুরে জানান, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে ওই স্থানে একজনকে পাঠানো হয়েছে। বিকেল চারটায় তিনি প্রথম আলোর কাছে সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অপু প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমু দাদাকে পাওয়া গেছে। উনি কিছুটা অসুস্থ। আমরা পাগলা থানার সহায়তা চেয়েছি। থানায় নিয়ে এলে আমরা ঢাকা থেকে ওনাকে আনার জন্য গাড়ি পাঠাব, এরপর ঢাকায় এলে বাকি ঘটনা জানতে পারব।’
সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন পাগলা থানার ওসি ফেরদৌস আলম। তিনি বলেন, ‘অভিনেতা সমু চৌধুরীকে আনতে আমাদের টিম সেখানে পৌঁছেছে। তিনি কিছুটা অসুস্থ। থানায় আনার পর বাকিটা বলতে পারব।’
নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন সমু চৌধুরী। ১৯৯৫ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘আদরের সন্তান’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক। এরপর ‘দোলন চাঁপা’, ‘শত জনমের প্রেম’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘দেশ দরদী’, ‘মরণ নিয়ে খেলা’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘যাবি কই’, ‘সুন্দরী বধূ’সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত