এবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের পূর্বপরিচিত জাহাঙ্গীর হোসেনের নামে থাকা উত্তরায় আরও একটি প্লট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের (দুদক) পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৫ মে হারুন অর রশীদের পূর্বপরিচিত জাহাঙ্গীর হোসেনের একটি ১০ তলা বাড়ি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।

দুদক লিখিতভাবে আদালতকে বলেছে, হারুন ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। হারুনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন জাহাঙ্গীর হোসেন। তাঁর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি থাকেন রাজধানীর উত্তরা এলাকায়। জাহাঙ্গীর হারুনের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর নামে–বেনামে অনেক সম্পদ রয়েছে। উত্তরায় প্লট রয়েছে। আরও রয়েছে উত্তরায় সাড়ে আট কাঠা জমির ওপর ১০ তলা ভবন।

এর আগে গত ২৪ এপ্রিল জাহাঙ্গীরের ফ্ল্যাট ও তিনটি প্লট ক্রোকের আদেশ এবং গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হারুন ও তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, হারুনের নামে থাকা প্রায় ১০০ বিঘা জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আরও পাঁচটি ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হারুন অর রশীদ ও তাঁর স্ত্রী এবং হারুনের ভাইয়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর মামলা করে দুদক। মামলায় হারুনের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৮০৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

অন্যদিকে হারুনের ছোট ভাই এ বি এম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৭৬ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে ডিবির আচরণ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে হারুন অর রশীদকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) দায়িত্ব দেওয়া হয়। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুককে জাতীয় সংসদ এলাকায় মারধর করে আলোচনায় এসেছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সাবেক ডিজি আবুল কালামের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে উপ–আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সাবেক মহাপরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদকের অনুসন্ধানে বলা হয়েছে, আবুল কালাম আজাদ ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ১২ কোটি ৩৪ লাখ ৩৬ হাজার ১২৮ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক বলছে, ২০২২ সালে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে আবুল কালাম আজাদ ১৬ কোটি ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৪৬৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন এবং মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। অনুসন্ধানে দুদক দেখেছে, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১৮ কোটি ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬৩ টাকা। এর মধ্যে গ্রহণযোগ্য আয়ের হিসাব পাওয়া গেছে মাত্র ৬ কোটি ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২ টাকার বাকিটা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বলে প্রমাণিত হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ বিমানের পরিচালক (প্রশাসন) মো. মোমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও জ্ঞাত আয়ের বাইরে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আমলে নিয়ে কমিশনের বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সাবেক ডিজি আবুল কালামের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক