আল্লাহর ‘আল-আজিজ’ নামটি তাঁর অপরাজেয় ক্ষমতা, মহান সার্বভৌমত্ব এবং অপ্রতিরোধ্য শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যে কেউ ইজ্জত কামনা করে, তবে সমস্ত ইজ্জত আল্লাহর জন্য।’ (সুরা ফাতির, আয়াত: ১০)
এই নাম আমাদের শেখায়, প্রকৃত ইজ্জত একমাত্র আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর প্রতি সমর্পণের মাধ্যমে অর্জিত হয়।
নিশ্চয়ই সমস্ত ইজ্জত আল্লাহর জন্য।সুরা ইউনুস, আয়াত: ৬৫আল-আজিজ নামের অর্থআল্লামা সা’দি (রহ.
১. ইজ্জতুল কুওয়া: মানে শক্তির ইজ্জত। আল্লাহর শক্তি অতুলনীয়। তাঁর ক্ষমতার সামনে সৃষ্টির কোনো শক্তি তুচ্ছ।
২. ইজ্জতুল ইমতিনা: মানে অপ্রতিরোধ্যতার ইজ্জত। আল্লাহ স্বয়ংসম্পূর্ণ, কারও প্রয়োজন নেই। কেউ তাঁকে ক্ষতি বা উপকার করতে পারে না। তিনি ক্ষতিকারক, উপকারক, দানকারী, এবং প্রতিরোধক।
৩. ইজ্জতুল কাহর: প্রতিটি সৃষ্টির ওপর বিজয়ের ইজ্জত। সমস্ত সৃষ্টি তাঁর কাছে নত। তাঁর ইচ্ছা ছাড়া কিছুই ঘটে না। তিনি বলেন, ‘যা তিনি চান তা হয়, আর যা তিনি চান না তা হয় না।’ (আল-বদর, ফিকহুল আসমা, পৃ. ২৪৬)
পবিত্র কোরআনে ‘আল-আজিজ’ নামটি ৯২ বার উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায়ই তাঁর অন্যান্য নামের সঙ্গে যুক্ত, যেমন ‘আল-হাকিম’ বা ‘আল-গাফুর’। এটি তাঁর সর্বাঙ্গীণ ইজ্জতের প্রতীক।
আরও পড়ুনআল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নাম ‘আল্লাহ’০২ জুন ২০২৫পবিত্র কোরআনে ‘আল-আজিজ’ নামটি ৯২ বার উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায়ই তাঁর অন্যান্য নামের সঙ্গে যুক্ত, যেমন ‘আল-হাকিম’ বা ‘আল-গাফুর’।ইজ্জতের উৎসপ্রকৃত ইজ্জত একমাত্র আল্লাহর কাছে। ধন, পদ, স্বাস্থ্য বা জনপ্রিয়তার মাধ্যমে ইজ্জত খোঁজা ভুল। যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, সে অপরাজেয় শক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সমস্ত ইজ্জত আল্লাহর জন্য।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত: ৬৫)
আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে কখনো অপমানিত হতে হয় না, কিন্তু অন্যের কাছে চাওয়া অপমান বয়ে আনে।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দানের কারণে সম্পদ কমে না, ক্ষমার কারণে আল্লাহ বান্দার ইজ্জত বাড়ান এবং যে আল্লাহর জন্য নম্র হয়, তাকে আল্লাহ উন্নত করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৫৮৮)
ইজ্জত অর্জনের পথ হলো বিনয়ী হওয়া, ক্ষমা করা এবং মানুষের প্রতি উদার হওয়া। এ ছাড়া পবিত্র কোরআন নিয়মিত তিলাওয়াত করা, বোঝার চেষ্টা করা, চিন্তাভাবনা করা এবং তার বিধান মেনে চলাই ইজ্জতের পথ। পবিত্র কোরআনকে আল্লাহ ‘আল-আজিজ’ বলে অভিহিত করেছেন, কারণ এটি অপরাজেয় সত্য।
আরও পড়ুনআল্লাহর নামের ওপর ইমান আনতে হয় কেন১১ জুন ২০২৫তার বিধান মেনে চলাই ইজ্জতের পথ। পবিত্র কোরআনকে আল্লাহ ‘আল-আজিজ’ বলে অভিহিত করেছেন, কারণ এটি অপরাজেয় সত্য।আল-আজিজের প্রভাবআল-আজিজ নামের ইমান আনার ফল হলো বান্দার একমাত্র আল্লাহর কাছে নত হওয়া। সে তাঁর কাছেই আশ্রয় চায়, তাঁরই সুরক্ষা কামনা করে এবং তাঁর কাছেই ইজ্জত প্রার্থনা করে। এটি তাকে সৃষ্টির প্রতি নির্ভরতা থেকে মুক্ত করে এবং আল্লাহর সঙ্গে একটি অটুট সম্পর্ক গড়ে তোলে। যে আল্লাহকে তার আশ্রয় মনে করে, সে দুর্বল হলেও শক্তিশালী হয়, দরিদ্র হলেও সম্মানিত হয়।
একটি কবিতায় বলা হয়েছে: ‘আল্লাহর রশি দৃঢ়ভাবে ধরে থাকো, কারণ তিনিই একমাত্র নির্ভরযোগ্য আশ্রয়।’
বাস্তব জীবনে আল-আজিজআল-আজিজ নামটি আমাদের শেখায়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে—ধন, ক্ষমতা বা স্বাস্থ্য—ইজ্জত একমাত্র আল্লাহর কাছ থেকে আসে। যখন আমরা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই, তখন আল্লাহর ওপর ভরসা আমাদের অপরাজেয় করে।
যেমন একজন ব্যক্তি যিনি সমাজে দুর্বল বা অপমানিত, তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে এবং তাঁর বিধান মেনে ইজ্জত ফিরে পেতে পারেন। এটি আমাদের ধৈর্য, তাকওয়া এবং আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার গুরুত্ব শেখায়।
অনুবাদ: মনযূরুল হক
আরও পড়ুন‘হাউসে কাউসার’ উম্মতের জন্য আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত ১৬ জুন ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অপর জ য আম দ র র জন য র ওপর সমস ত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডসহ ১৪০০০ শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। আজ সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এক মতবিনিময় সভার আগে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
প্রাথমিক উপদেষ্টা বলেন, ‘আশা করি, সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি শুরু হবে। প্রকল্পের ক্রয়প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যারা বাস্তবায়ন করবে, তাদের প্রশিক্ষণও চলছে। আগস্টের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে সেপ্টেম্বরেই মাঠে নামা যাবে।’ তিনি আরও বলেন, দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে দেশজুড়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে বড় প্রকল্পটি ১৫০টি উপজেলার সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হবে, অন্য প্রকল্পটি কক্সবাজার ও বান্দরবানে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুনঅষ্টম শ্রেণিতে আবারও বৃত্তি পরীক্ষা ফিরছে, আছে প্রশ্নও২৮ জুলাই ২০২৫বিধান রঞ্জন রায় বলেন, প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেওয়াসহ প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ এবং পিএসসির মাধ্যমে ৩ হাজার প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নিম্নবিত্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানোন্নয়নে জোর দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষার বাইরে থাকলেও তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা চালু আছে।
সরকারি বিদ্যালয়ে সময় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১ বছরে মাত্র ১৮০ দিন স্কুল থাকে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংযোগ যদি না থাকে, তাহলে শেখার সুযোগ সীমিত হয়। তাই সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যালয়কে শিশুদের আনন্দঘন পরিবেশে রূপান্তর করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার্থীর তথ্য এন্ট্রি যাচাই ও অনুমোদন করার জরুরি নির্দেশনা০৩ আগস্ট ২০২৫এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, বিভাগীয় কমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান এবং পরিচালক (নীতিনির্ধারণ ও কার্যক্রম) মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
জেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে ‘প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। এতে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন অংশীজনের মতামত গ্রহণ করা হয়।
সভায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশ নেন। তাঁরা মাঠপর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষার বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন সমস্যা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫: প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ৫ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনবিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ই-ভিসা চালু করল যুক্তরাজ্য৭ ঘণ্টা আগে