বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো শানু মোস্তাফিজের শিল্প-সাহিত্য সংগঠন ‘পার’-এর ব্যতিক্রমধর্মী সাহিত্য আলোচনা।

শুক্রবার ‘বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি; শিল্পী, লেখকদের করণীয়’ শীর্ষক এই আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি, সাংবাদিক ও সাহিত্যপত্র ‘খনন’-এর সম্পাদক বাদল শাহ আলম।

দেড় ঘণ্টাব্যাপী উপস্থাপিত প্রবন্ধে তিনি বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ইতিহাসের নানা বাঁক ধরে শিল্প-সাহিত্যের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেন। প্রবন্ধটি ছিল তথ্যমূলক, গভীরভাবে চিন্তা উদ্রেককারী এবং উপভোগ্য।

আরো পড়ুন:

‘একবার নারী হন, হে প্রভু’

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

বর্তমানে দেশে সাহিত্যভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠান ক্রমেই কমে যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে ‘পার’-এর এই ঘরোয়া আয়োজন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

আয়োজকদের ভাষ্য অনুযায়ী, সৃজনশীল মানুষদের ভাবনা ও চর্চা সক্রিয় করতে এবং সময়ের প্রেক্ষিতে শিল্পের ভূমিকা পুনর্বিবেচনার জন্যই এই আয়োজন। বাদল শাহ আলমের বক্তব্য সেই চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করেছে।

প্রবন্ধে বাদল শাহ আলম সাহিত্যের আদিপর্ব থেকে শুরু করে মধ্যযুগ, রেনেসাঁ, ফরাসি বিপ্লব, মার্কসবাদ, রুশ ও চীনা বিপ্লব পর্যন্ত ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সমাজ ও শিল্প-সাহিত্যের পারস্পরিক প্রভাব তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “একজন লেখক-শিল্পীকে তার শিল্পকর্ম তৈরির আগে সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতি গভীরভাবে জানতে হবে এবং বুঝতে হবে। রাজনীতি ও অর্থনীতি জানা না থাকলে কেউ প্রকৃত লেখক হতে পারেন না।”

শেক্সপিয়ারের ‘হ্যামলেট’ ও ‘ম্যাকবেথ’ নাটকের উদাহরণ টেনে তিনি দেখান, কীভাবে সাহিত্যে সময় ও সমাজের চিত্র প্রতিফলিত হয়। “শেক্সপিয়ার রাজতন্ত্র ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা আজও আমাদের সমাজে ঘটছে”, বলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক সমসাময়িক পরিস্থিতির বিশ্লেষণে বাদল শাহ আলম বলেন, “প্যালেস্টাইন-ইসরায়েল, ইরান-ইসরায়েল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এসব আসলে খনিজ সম্পদ ও ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের লড়াই। এই পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের বোঝা দরকার, না হলে তাদের মূল্য চুকাতে হবে।”

ভারতের আদিবাসী ও মাওবাদীদের ওপর নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে তিনি অরুন্ধতি রায়ের লেখনী ও সক্রিয়তার কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের বায়ান্ন, একাত্তর এবং সাম্প্রতিক গণআন্দোলনের সময়ে লেখক-শিল্পীদের সক্রিয় অবস্থানও তুলে ধরেন।

রুশ বিপ্লবের প্রভাব নজরুল ইসলামের কবিতা ও গানে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে এবং তিরিশের পঞ্চপাণ্ডব কীভাবে সেই প্রভাব আত্মস্থ করে নতুন সাহিত্যধারা তৈরি করেন, তা ব্যাখ্যা করেন তিনি। বিষ্ণু দের কবিতা ও তিরিশের আন্দোলনের প্রসঙ্গও উঠে আসে তার আলোচনায়।

তিনি বলেন, “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ও কিছু গান ও কবিতা রচিত হয়েছে, যদিও পরিমাণে তা অল্প। কিন্তু এই সময়েই সৃষ্টি হতে পারে কালজয়ী সাহিত্য, গান, চলচ্চিত্র।”

ঢাকা/হাসান/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দল শ হ আলম পর স থ ত প রবন ধ র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জলবায়ু সহনশীল কৃষিতে প্রযুক্তির ছোঁয়া: ২৭ উপজেলায় সম্ভাবনার বার্তা

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির প্রসারে নতুন দিগন্ত খুলছে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট (সিএসএডব্লিউএম)’ প্রকল্প। আজ শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ির বিএআরসি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হলো এই প্রকল্পের জাতীয় কর্মশালা। 

কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইফুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক খন্দকার মোহাম্মাদ রাশেদ ইফতেখার। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা শাখা) মো. আবু জুবায়ের হোসেন বাবলু এবং বিডব্লিউডিবির পার্টনার প্রকল্প সিএসএডব্লিউএমপির প্রকল্প পরিচালক পীযূষ কৃষ্ণ কুণ্ডু। বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার সামিনা ইয়াসমিন।

মুক্ত আলোচনায় কৃষক প্রতিনিধি, গবেষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন। আলোচনায় প্রকল্পের আওতায় সৌরবিদ্যুৎচালিত সেচ, পলিনেট হাউস, ফার্ম হাউস, ফার্মার্স ক্লাইমেট স্মার্ট স্কুল, বারিদ পাইপ ইরিগেশন এবং ড্রোন প্রযুক্তির কার্যকারিতা তুলে ধরা হয়।

কৃষি সচিব ড. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘কর্মশালার আলোচনার ভিত্তিতে আমরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ করব। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ের প্রতিক্রিয়া ও বাস্তব চাহিদাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।’

বক্তারা জানান, ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্টের আওতায় দেশের ২৭টি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলার ১৯টি উপপ্রকল্প এলাকায় ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবও কমবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ