বাংলাদেশের জন্য নতুন করে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বাংলাদেশের সরকারি খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে এ ঋণ দেবে। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ৩৭ পয়সা হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৬ হাজার ১১৮ কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, সরকারের শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করা ও প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিস্থাপকতা উন্নয়নে সহায়তা করবে এ ঋণ। সরকারি ও আর্থিক খাতের সংস্কারকে সমর্থন করবে এ ঋণ, যা টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ সংস্কারগুলো ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোর জন্য উন্নত পরিষেবার ভিত্তিও স্থাপন করবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেছেন, সরকার তার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো উন্মুক্ত এবং জবাবদিহিতামূলক করার জন্য উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ নিচ্ছে, যেন তারা জনগণকে আরো ভালো সেবা দিতে পারে। এই অর্থায়ন সরকারের নীতিমালা এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে, যাতে শক্তিশালী ও আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ে তোলা যায়, যা সবার উপকার করে। গত সপ্তাহে অনুমোদিত আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে, আমরা এ সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তা করছি।

সংস্থাটি জানায়, বর্তমানে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম, যা জনগণের কাছে মানসম্পন্ন পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে সীমিত করে। এই ঋণ কর্মসূচি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহের উন্নতির লক্ষ্যে সংস্কারগুলোকে সমর্থন করে। এই সংস্কারগুলো আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে কর প্রশাসন এবং নীতি নির্ধারণকে আরো স্বচ্ছ এবং দক্ষ করে তুলবে। এছাড়াও এটি কর ছাড় পরিচালনার জন্য আরো কৌশলগত, নিয়মতান্ত্রিক এবং স্বচ্ছ পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য সংস্কারগুলোকে সমর্থন করবে, যার জন্য সমস্ত ছাড়ের জন্য সংসদীয় অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা বলেছেন, এ অর্থায়ন নাগরিকদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ও শাসনব্যবস্থা এবং সরকারি খাতের কর্মক্ষমতা উন্নত করার জন্য বাংলাদেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কারকে সমর্থন করি। তথ্য ব্যবস্থার উন্নতি এবং সুবিধাভোগীদের উন্নত নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়ার মাধ্যমে সরকারি সম্পদ কার্যকরভাবে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোতে পৌঁছাবে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ধাক্কা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়।

এই অর্থায়নের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রতি মোট নতুন প্রতিশ্রুত ঋণ ৩ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তাকারী অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে ৪৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান, সুদমুক্ত এবং ছাড়মূলক ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স স ক রগ ল ব শ বব য র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাকসুতে শিবিরের ইশতেহার, ১২ মাসের ২৪ প্রস্তাবনা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে ইসলামি ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। প্রতি মাসে দুইটি করে দফা বাস্তবায়ন করতে চায় প্যানেলটি।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।

তাদের ইশতেহারের বিষয় গুলো হলো- জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন, মানসম্মত খাবারের নিশ্চয়তা, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের অধিকার সংস্কার, শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বারেপ, লাইব্রেরি ও রিডিং রুম সম্প্রসারণ ও সংস্কার, শিক্ষা কারিকুলাম আন্তর্জাতিকীকরণ, প্রশাসনিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন, চিকিৎসা কেন্দ্রর আধুনিকীকরণ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা, নিরাপদ ক্যাম্পস, পরিবহন ব্যবস্থা সহজীকরণ, নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা, টিচার্স ইভ্যালুয়েশন, তথ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, অন ক্যাম্পস জব, পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়ন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষা, সংস্কৃতির বৈচিত্র্যায়ন, হাইজেনিক স্যানিটাইজেশন, ক্রীড়া উন্নয়ন, সাহিত্য, প্রকাশনা ও সামাজিক সংগঠন, ক্লিন অ্যান্ড গ্রীন ক্যাম্পাস এবং অপরাধ দমন।

এছাড়া ইশতেহারে সাতটি বিষয়কে ‘হ্যাঁ’ বলে জোর দিয়েছে প্যানেলটি। সেগুলো হলো, শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ, আবাসন সংকট নিরসন, মানসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ ক্যাম্পাস, তথ্যসেবা ও আধুনিকায়ন, সকল অংশীজনের মাঝে সুসম্পর্ক বৃদ্ধি, সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ।

অন্যদিকে সাতটি বিষয়কে ‘না’ বলেছে এই প্যানেল। সেগুলো হলো- ৫০ টাকা হল ফি, হল দখল ও সিট-বাণিজ্য, ট্যাগিং ও ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি, ফ্লাটশেমিং-সাইবার বুলিং ও শারীরিক নির্যাতন, ধর্মীয় বিদ্বেষ, মাদক ও ছিনতাই, সন্ত্রাস ও সহিংসতা।

এ সময় সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “আমরা যেই ইশতেহারটা দিয়েছি তার একটি চার্ট আমরা ক্যাম্পাসে টানিয়ে দিব। প্রতি মাসে যেই দুইটা ইশতেহার পূরণ করা হবে, সেখানে আমরা টিক চিহ্ন দিয়ে দিব। আমরা কথা দিয়ে কথা রাখতে চাই। এটি আকাশ কুসুম কোনো প্রস্তাবনা নয় । আমরা এই সংস্কার বাস্তবায়ন করবো। এছাড়া এর জবাবদিহিতার জন্য আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকবো।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ