ফেনীর মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ মেরামতে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বণিকপাড়া গ্রাম এলাকায় ২০ মিটার ভাঙা অংশে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে।

পাউবো-ফেনীর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, ভারী বর্ষণ বন্ধ থাকায় ও নদীতে পানি কমায় মুহুরী নদীর ২০ মিটার ভাঙন অংশ মেরামতে জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। বৃষ্টি ন হলে আজ শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে ভাঙন অংশের মেরামতকাজ শেষ হবে। তিনি আরও বলেন, পাশের সিলোনিয়া নদীর বাঁধের যে অংশে ভেঙেছে, সেটি সংস্কারে নদীর পানি কমার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। গোসাইপুর অংশে ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করতে কয়েক দিন সময় লাগবে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বণিকপাড়া গ্রামের সহদেব বৈদ্যের বাড়ি-সংলগ্ন মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের একটি স্থান ও সিলোনীয়া নদীর গোসাইপুর এলাকা অংশে বাঁধ ভেঙে যায়। এতে উপজেলার ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়। গ্রামগুলো হলো উত্তর বড়ইয়া, দক্ষিণ বড়ইয়া, বিজয়পুর, বণিকপাড়া, বসন্তপুর, জগৎপুর, গোসাইপুর, করইয়া, নীলাক্ষী।

ফুলগাজীর উত্তর বড়ইয়া গ্রামের বাসিন্দা মরণ চন্দ্র জানান, তাঁর বাড়িসংলগ্ন মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ঘরে গত বৃহস্পতিবার রাতে পানি ঢুকে। এতে ঘরের মালামালসহ বিভিন্ন জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে। গতকাল রাত থেকে ঘরের পানি নামতে শুরু করেছে। বাঁধের স্থায়ী সংস্কার না হলে ভাঙা অংশ দিয়ে আবারও পানি ঢুকে ঘর প্লাবিত হতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির আহমেদ বলেন, প্রতিবছর বর্ষাকালে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া, সিলোনিয়া নদীর মাটির বেড়িবাঁধ বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। পাউবো শুধু দায়সারাভাবে জোড়াতালি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। এ অঞ্চলের মানুষ তিনটি নদীর বেড়িবাঁধের স্থায়ী সমাধান চায়।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, বাঁধের সংস্কারের দায়িত্ব পাউবোর। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তদারকি করা হচ্ছে। পাউবোকে বলা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের অংশগুলো শনাক্ত করে দ্রুত প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়া জন্য।

পাউবো ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীতে টেকসই বাঁধ নির্মাণে নতুন একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দের সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার মানুষ প্রতিবছর বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে পরিত্রাণ পাবেন।

আজ শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ফেনীতে। আগামী কয়েক দিন ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান ফেনী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (উচ্চমান সহকারী) মজিবুর রহমান। দুপুর পর্যন্ত মুহুরী নদীতে পানি ছিল ৯ মিটার। এই নদীর বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ভারী বর্ষণ বন্ধ থাকায় ও পাহাড়ি ঢলের চাপ না থাকায় মুহুরী নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে অধিকাংশ বাড়িঘর ও গ্রামীণ সড়ক থেকে পানি নেমে গেলেও নিম্নাঞ্চলে এখনো পানি জমে রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম র মত নদ র ব উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গাছের ওপর বজ্রপাত, সেখান থেকে কিংবদন্তি পেলেন ‘ওয়ান্ডারবয়’ ব্যাট

ঘটনাটা গত মঙ্গলবার রবার্ট রেডফোর্ডের মৃত্যুর পরদিন। লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্সের মাঠ ডজার স্টেডিয়ামে ব্যাটিং কেজের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাউল ইবানেজ ও চেজ ইউটলে। দুজনই বেসবলের সাবেক অলস্টার। এক দর্শনার্থী তাঁদের সামনে ‘রয় হবস’ নামটা উচ্চারণ করতেই রাউল বললেন, ‘দ্য ন্যাচারাল’, ইউটলে সায় দিলেন, ‘আমার পছন্দের সিনেমা।’

রেডফোর্ড হবস চরিত্রে অভিনয়ের সময় ইবানেজের বয়স ১২ বছর। ইউটলে আরও ছোট। হাইস্কুলে থাকতে প্রতিটি ম্যাচের আগেই নাকি ‘দ্য ন্যাচারাল’ দেখতেন মেজর বেসবল লিগে (এমএলবি) ১৯ বছর কাটানো ইবানেজ। তাঁর মতো যুক্তরাষ্ট্রের হাজারো কিশোর কিংবা তরুণের মানসপটে ছাপ রেখেছেন হবস। বাংলাদেশে বেসবলের পরিচিতি প্রায় নেই। তবে খেলাধুলাপ্রেমী হলে রেডফোর্ডের ‘দ্য ন্যাচারাল’ সিনেমাটা মনে অন্য রকম ছাপ রাখতে পারে।

ফ্যান্টাসি ও বেসবল নিয়ে বানানো এ সিনেমার বিভিন্ন কার্ড রেডফোর্ডের মৃত্যুর পর ভাসছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার বাজেটে বানানো এই সিনেমা ১৯৮৪ সালে মুক্তি পাওয়ার পর ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার আয় করে। নিউইয়র্ক টাইমসের দাবি, এ সিনেমা হিট হওয়ার পরই হলিউডে ফিরে আসে বেসবলভিত্তিক সিনেমার জনরা।

রয় হবস চরিত্রে অভিনয় করেন রবার্ট রেডফোর্ড

সম্পর্কিত নিবন্ধ