সরাসরি: ওআইসির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে ইস্তাম্বুলে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Published: 21st, June 2025 GMT
ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতে নিজেদের পক্ষে কূটনৈতিক সমর্থন আদায়ে ইউরোপ সফরে রয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। সফরের অংশ হিসেবে তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রয়েছেন এখন। সেখানে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
শনিবার (২১ জুন) আলজাজিরার খবরে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
ইরানি বার্তা সংস্থার তাসনিম নিউজের প্রতিবেদনে বৈঠকের বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থাটি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করা হয়েছে; তিনি বলেছন, “ইরানের প্রস্তাবে এই বৈঠকে আমাদের দেশের ওপর জায়নবাদী শাসনের হামলার বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচনা করা হবে।”
আরো পড়ুন:
রাশিয়া বারবার ইসরায়েলকে আশ্বস্ত করেছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে না: পুতিন
ইরানের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশে ইরাকে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গ এই বৈঠকে প্রায় ৪০ জন কূটনীতিকের অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।
আব্বাস আরাগচি ইউরোপীয় দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। এরই মধ্যে ইউরোপকে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরায়েলের হামলা বন্ধ না হলে আলোচনার টেবিলে বসবে না ইরান। অবশ্য এই বিষয়ে ইউরোপীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়া এখনো জানা যায়নি।
বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি এর আগে ইসরায়েলের হামলা নিন্দা জানিয়ে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। তবে ওআইসির এই আহ্বান কানে তোলেনি ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রকে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে নামাতে ব্যতিব্যস্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার সরকার। অবশ্য, ট্রাম্প সর্বশেষ বলেছেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ইরান ও ইসরায়েলের সংঘাত নিরসনে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। একই সঙ্গে সংঘাত থামিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে বোঝাপড়ার পক্ষে মত তৈরি করার চেষ্টা করছেন তিনি।
১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল; যেখানে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যদিও তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল না ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ইরাক মডেলে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।
ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে অনেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২১ জুন পর্যন্ত ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল র ক টন ত ক য ক তর ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর আকাশপথ অবরোধে ভয়াবহ ক্ষতিতে পড়বে ইসরায়েল
আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো যদি সমন্বিতভাবে ইসরায়েলের জন্য আকাশপথ অবরোধ করে, তবে তার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাগত প্রভাব কী হতে পারে—সে বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মালিকানাধীন একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান।
গত বুধবার আল হাবতুর রিসার্চ সেন্টার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের হামলাই এমন সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রেরণা বা অনুঘটক হতে পারে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো ওই হামলায় ছয়জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন কাতারের নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তবে হামাসের কোনো শীর্ষ নেতা নিহত হননি।
গত সোমবার কাতারের রাজধানীতে জরুরি বৈঠকে বসে ৫৭ সদস্যের ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও আরব লীগ। বৈঠকে ইসরায়েলের হামলার জবাবে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আল হাবতুর রিসার্চ সেন্টারের বিশ্লেষণে বলা হয়, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের জন্য দেশটির বিরুদ্ধে আকাশপথে অবরোধ আরোপ করা হলে তেল আবিবের অর্থনীতির নানা খাতে ভয়াবহ ক্ষতি হবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর ফলে ইসরায়েলের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪ দশমিক ৮ থেকে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এতে দেশটি মন্দার মুখে পড়বে।
গবেষণাকেন্দ্রটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সমন্বিত আকাশপথ অবরোধে নতুন আঞ্চলিক নিরাপত্তাকাঠামো তৈরি হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্র একটি কূটনৈতিক সংকটে পড়বে। দেশটিকে ইসরায়েলকে বাঁচানো আর আরব দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব—দুটির একটি বেছে নিতে হবে।ওআইসির বড় বড় সদস্য যেমন তুরস্ক, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া যদি এ অবরোধে যোগ দেয়, তবে ইসরায়েল এশিয়া ও আফ্রিকার প্রবৃদ্ধিশীল বাজারগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হারাবে। এতে পূর্ব ও দক্ষিণমুখী ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাবে।
প্রতিবেদন বলছে, বিকল্প রুটে যেতে হলে প্রতিটি ফ্লাইটের সময় চার থেকে ছয় ঘণ্টা বাড়বে। এতে প্রতি ফ্লাইটে ৩০ হাজার থেকে ৬০ হাজার ডলার পর্যন্ত খরচ বাড়তে পারে। ইসরায়েলের বিমান সংস্থা এল-আলের আয়ের ৬০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। আর এটা ‘রক্ষণশীল অনুমান’।
আকাশপথ অবরোধে ইসরায়েলের পর্যটনশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হীরার মতো উচ্চ মূল্যের ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো সময়-সংবেদনশীল পণ্যের রপ্তানিও ব্যাহত হবে।
এমন পরিস্থিতিতে অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তি বাতিল হতে পারে এবং ইসরায়েলভিত্তিক গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম অন্যত্র চলে যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনীতির বাইরে এ ধরনের পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলের ভূরাজনীতির চিত্র মৌলিকভাবে পাল্টে দেবে।
২০২০ সালের ৩১ আগস্ট তোলা ছবিতে তেল আবিবের কাছে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ইসরায়েলি বিমান সংস্থা এল-আলের একটি উড়োজাহাজ