দাম্পত্য জীবনের ইতি টানছেন ভারতীয় টিভি তারকা লতা সাবরেওয়াল ও সঞ্জীব সেঠ। এক বিবৃতিতে ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের
লতা সাবরেওয়াল ইনস্টাগ্রামে একটি আবেগঘন পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি আর আমার স্বামী (মি. সঞ্জীব সেঠ) আলাদা হয়ে গেছি। তাঁর ঔরসে আমার একটি পুত্রসন্তান জন্ম হয়েছে, এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি তাঁর ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শুভকামনা জানাই। সবাইকে অনুরোধ করব—আমার ও আমার পরিবারের মানসিক শান্তির কথা বিবেচনা করে কেউ এ বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না বা ফোন করবেন না। কৃতজ্ঞতা।’
‘ইয়ে রিশতা’র সেট থেকেই প্রেমের শুরু
টেলিভিশনের দীর্ঘদিন চলা ধারাবাহিক ‘ইয়ে রিশতা ক্যা কহলাতা হ্যায়’-এ অক্ষরার (হিনা খানের চরিত্র) বাবা-মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন লতা ও সঞ্জীব। সেখান থেকেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে, ২০০৯ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। তাঁদের একটি ছেলে আছে—আরভ। এটি সঞ্জীব সেঠের দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে তিনি ১৯৯৩ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত অভিনেত্রী রেশম তিপনিসের সঙ্গে সংসার করেছেন। সেই সংসারে তাঁদের রয়েছে একটি কন্যা রিশিকা ও এক পুত্র মানব। ২০১৩ সালে এই জুটি ‘নাচ বালিয়ে ৬’-এও অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে তাঁদের রসায়ন দর্শকদের মন জয় করেছিল।
টিভির পর্দা পেরিয়ে বলিউডেও লতা
লতা সাবরেওয়াল ‘ইশ্ক বিশ্ক’, ‘বিবাহ’, ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’র মতো বলিউড ছবিতেও অভিনয় করেছেন। তবে তার সবচেয়ে বেশি পরিচিতি এসেছে রাজশ্রী গোয়েল মহেশ্বরীর চরিত্রে ‘ইয়ে রিশতা ক্যা কহলাতা হ্যায়’ ও ‘ইয়ে রিশতে হ্যায় প্যায়ার কে’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে। এ ছাড়া তিনি ‘ইশ্ক মে মারজাওয়া’, ‘নাগিন’, ‘ঘর এক স্বপ্না’র মতো ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন। ২০২১ সালে লতা ঘোষণা করেন, তিনি টেলিভিশন ছেড়ে এখন থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে বেশি মনোযোগ দেবেন।
অন্যদিকে সঞ্জীব সেঠ ‘আশীর্বাদ’, ‘কারিশমা কা কারিশমা’, ‘ও রেহনে ওয়ালি মহলোঁ কি’র মতো ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। বড় পর্দায় তাঁর অভিষেক হয়েছে জুনায়েদ খানের ‘মহারাজ’ ছবিতে, যেখানে ছিলেন জয়দীপ অহলাওয়াতও। তাঁকে সামনে দেখা যাবে ‘দে দে পেয়ার দে ২’ ছবিতে—যেখানে মুখ্য ভূমিকায় আছেন অজয় দেবগন আর মাধবন, রাকুল প্রীত সিং ও জিমি শেরগিল।
আরও পড়ুনউড়োজাহাজ দুর্ঘটনার দিন থেকে নিখোঁজ, ডিএনএ পরীক্ষায় খোঁজ মিলল নির্মাতার২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ব সংগীত দিবস উদযাপনে দুই আয়োজন
একটাই দিন। একটি বিশেষ উপলক্ষ। কিন্তু দুইটি ভিন্ন ভেন্যুতে আয়োজনের ভাবনা ছিল একই- ‘সুরের ছোঁয়ায় শান্তি ও সুস্থতা’। ২১ জুন ছিল বিশ্ব সংগীত দিবস। সংগীতের মাধ্যমে বিশ্বজনীন সংহতি, সাম্য ও মানবতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ায় ছিল দিবসের লক্ষ্য।
জাতীয় নাট্যশালায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যানারে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, অন্যদিকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সৃষ্টি বিশ্বময়’-এর নিবেদনে এক মরমি পরিবেশনা। দুই মঞ্চে দুই রকম সুর, তবে চেতনায় অভিন্ন।
বিশ্ব সংগীত দিবস উপলক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শুক্রবার বিকেলে এক আন্তরিক আয়োজন করে ‘সৃষ্টি বিশ্বময়’। যার শিরোনাম ছিল ‘সুরের ছোঁয়ায় শান্তি’। মূল উদ্দেশ্য, সংগীতকে মানুষের কাছে একটি নিরাময় শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা, যাকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে যুদ্ধহীন এক মানবিক সমাজ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ। তিনি বলেন, ‘সংগীতের শক্তি এমনই যে, তা হৃদয়ের অন্ধকার দূর করে মননে আলোক ছড়াতে পারে। সংগীতই পারে হানাহানিমুক্ত পৃথিবীর পথে মানুষকে নিয়ে যেতে।’
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক বাসুদেব ধর ও সদস্যসচিব অলক দাশগুপ্ত। আয়োজনের সূচনায় চর্যাপদের পদ, আবৃত্তি ও আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের এক ব্যতিক্রমধর্মী কম্পোজিশন পরিবেশন করেন লাইসা বিনতে কামাল, রত্না দত্ত, সন্দীপা বিশ্বাসসহ একঝাঁক তরুণ শিল্পী। নৃত্য পরিবেশন করেন অংকিতা অথৈ। এছাড়া একক সংগীত, দলীয় পরিবেশনা ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন বর্ষা রাহা, রজত শুভ্র, ফয়সাল আহমেদ, সানোয়ারা জাহান নিতু, ব্যান্ডদল ‘ব্রেথলেস’সহ অনেকেই।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত হয় আরেক আয়োজন-‘সুরের সম্মিলন’। সন্ধ্যায় নাট্যশালার সম্মুখে জাতীয় সংগীতের সুর ও বেলুন উড়িয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন। সঙ্গে ছিলেন একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান ও বিশিষ্ট সংগীতশিল্পীরা।
সভাপতির বক্তব্যে ওয়ারেছ হোসেন বলেন, ‘যে দেশে যত বেশি সাংস্কৃতিক চর্চা হয়, সে দেশে যুদ্ধ ও সহিংসতা টিকে থাকতে পারে না। সংগীত মানুষের হৃদয়ের কালো দাগ মুছে দিতে পারে।’
শোভাযাত্রার পর মূল মিলনায়তনে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। প্রথমে ছিল যন্ত্রসঙ্গীত ও কণ্ঠসংগীতের কোলাজ পরিবেশনা। এরপর মঞ্চে আসে আদিবাসী ব্যান্ড ‘চিম্বুক’ ও ‘বম শিল্পীগোষ্ঠী’। পরে জনপ্রিয় তারকা শিল্পীদের সমবেত পরিবেশনায় মুখর হয় মিলনায়তন। শেষ পর্বে কোলাজ ব্যান্ডের পরিবেশনায় জমে ওঠে সমাপ্তি অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, বিশ্ব সংগীত দিবসের সূচনা হয় ১৯৮২ সালে ফ্রান্সে, তৎকালীন সংস্কৃতি মন্ত্রী জ্যাক ল্যাং ও সংগীত পরিচালক মরিস ফ্লেয়োরে’র উদ্যোগে। ২১ জুন, গ্রীষ্মের দীর্ঘতম দিনে, সংগীতকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে এই দিবস উদযাপন শুরু হয়, যা এখন বিশ্বব্যাপী পালিত হয়।