রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক মাহমুদুল হক জামিনে মুক্ত
Published: 22nd, June 2025 GMT
রংপুরে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুল হকের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে রংপুর মহানগর দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) মার্জিয়া ইসলাম এ আদেশ দেন।
পরে সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। মাহমুদুল হকের আইনজীবী রোকনুজ্জামান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
রোকনুজ্জামান বলেন, আজ দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন আদালত-১–এ (হাজীরহাট আমলি আদালত) মাহমুদুল হকের জামিন আবেদন করা হয়েছিল। সেখানে জামিন শুনানির তারিখ আগামী মঙ্গলবার ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু মাহমুদুল হক শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ জন্য গত বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুরের বিপরীতে মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জামিনের আবেদন করা হয়। বিচারক মানবিক বিবেচনায় মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগপত্র দেওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
আরও পড়ুন‘স্ট্রোক করে মৃত্যুর’ ১০ মাস পর হত্যা মামলা, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কারাগারে২০ জুন ২০২৫মাহমুদুল হকের কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় তাঁর স্ত্রী মাসুবা হাসান, ছেলে মাইমুন মিহরান, আইনজীবী শামীম মাল মামুন, রোকনুজ্জামান, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক শাহরিয়ার তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। পরে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুল হককে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুনজুলাই অভ্যুত্থানে প্রতিবাদী শিক্ষক কেন কারাগারে, প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের১৯ ঘণ্টা আগেআইনজীবী শামীম আল মামুন বলেন, মাহমুদুল হক অসুস্থ। দুপুরে জামিন আবেদন অসুস্থতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। জেলখানা কর্তৃপক্ষও তাঁর অসুস্থতার বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছে। মাহমুদুল হকের শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আদালত জামিন দিয়েছেন। কারামুক্ত মাহমুদুল হককে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, ‘তিন দিন পর স্যারকে পেয়ে আমরা উচ্ছ্বসিত। কিন্তু যেভাবে তাঁর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এগুলোর সঠিক তদন্তের দাবি জানাই।’
আরও পড়ুনরোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গ্রেপ্তারের ঘটনায় সেই ওসির বদলি৫ ঘণ্টা আগেগত বৃহস্পতিবার বিকেলে মাহমুদুল হককে রংপুর নগরের ধাপ ইঞ্জিনিয়ারপাড়া এলাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে হাজীরহাট থানা-পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। মাহমুদুল হক রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গত আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে ৩ জুন হাজীরহাট থানায় ৫৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন নগরের রাধাকৃষ্ণপুর মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা আমেনা বেগম। মাহমুদুল হক ওই মামলার ৫৪ নম্বর আসামি।
আরও পড়ুন‘বাচ্চা প্রশ্ন করছে—আমার বাবার কী অপরাধ, আমি কী বলব তাকে’২০ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
মাটির নিচের কারাগারে আটক রাখা হয়েছে ফিলিস্তিনিদের
ইসরায়েল গাজার কয়েক ডজন ফিলিস্তিনিকে একটি ভূগর্ভস্থ কারাগারে আটকে রেখেছে। সেখানে তারা কখনো দিনের আলো দেখতে পায় না, এমনকি পর্যাপ্ত খাবার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে কমপক্ষে দুইজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন যাদের কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটক রাখা হচ্ছে। এদের মধ্যে একজন নার্স এবং একজন তরুণ খাদ্য বিক্রেতা। ইসরায়েলের পাবলিক কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার ইন এর আইনজীবীরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানুয়ারি থেকে এই দুই ব্যক্তিকে ভূগর্ভস্থ রাকেফেট কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। অন্যান্য ইসরায়েলি আটক কেন্দ্রে যেভাবে নির্যাতন করা হয় বন্দিদের ঠিক তেমনই তাদের নিয়মিত মারধর করা হয়।
রাকেফেট কারাগারটি ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক কারাগার। এটি সংগঠিত অপরাধীদের রাখার জন্য খোলা হয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছর পরে এটি অমানবিক বলে অভিযোগ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবরের হামলার পর অতি-ডানপন্থী নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এটিকে পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেন।
কারাগারের সেলগুলো, আঙ্গিনা এবং আইনজীবীদের একটি সভাকক্ষ-সবকিছুই ভূগর্ভস্থ, তাই বন্দিরা এখানে প্রাকৃতিক আলো ছাড়াই বাস করে।
কারাগারটি প্রাথমিকভাবে কয়েকটি উচ্চ-নিরাপত্তা বন্দির জন্য তৈরি করা হয়েছিল যারা পৃথক কক্ষে অবস্থান করত। ১৯৮৫ সালে এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় ১৫ জন আটক ছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, প্রায় ১০০ জন বন্দিকে সেখানে রাখা হয়েছে।
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে সম্মত যুদ্ধবিরতির অধীনে, ইসরায়েল গাজা থেকে ১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে যাদের অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখা হয়েছিল। সেইসাথে ইসরায়েলি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
তবে, আটকের পরিমাণ এতটাই ব্যাপক যে, সেই গণমুক্তির পরেও, কমপক্ষে এক হাজার জন এখনো একই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের হাতে আটক রয়েছে।
পাবলিক কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার ইন বলেছে, “যদিও যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে, (গাজার ফিলিস্তিনিরা) এখনো আইনিভাবে বিতর্কিত এবং সহিংস যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বন্দি রয়েছে যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করে এবং নির্যাতনের সমান।”
ঢাকা/শাহেদ