মৌসুমী, নুসরাত ফারিয়া, সাবিলা নূর, বাপ্পারাজসহ ২৫ তারকার ব্যাংক হিসাব জব্দ
Published: 22nd, June 2025 GMT
কর পরিশোধ না করায় বেশ কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই তালিকায় রয়েছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী, নুসরাত ফারিয়া, সাবিলা নূর, চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ ও অভিনেতা আহমেদ শরীফসহ ২৫ জন।
রোববার এনবিআর কর অঞ্চল-১২ এর সহকারী কর কমিশনার কাজী রেহমান সাজিদের সই করা চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সূত্র জানায়, গত ১৫ জুন তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে এই ২৫ জনের ব্যাংক হিসাব, বকেয়া কর, টিআইএন, পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
যাদের হিসাব জব্দ করা হয়েছে তারা হলেন- হাজী কামাল উদ্দিন, গোলাম মাওলা, ওসমান গণি, আশরাফ হোসেন, মো.
জানা গেছে, এদের মধ্যে সর্বনিম্ন ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কর বকেয়া রয়েছে।
এ বিষেয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআর কর অঞ্চল-১২-এর এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, অনেকদিন ধরেই তারা কর পরিশোধ করছেন না। যেহেতু অর্থবছর শেষ হচ্ছে তাই তাদের তালিকা করা হয়েছে। কর পরিশোধ হলে আইন অনুযায়ী তাদের ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়া হবে।
কর বকেয়া থাকায় যাদের নাম এসেছে তালিকায় তাদের মধ্যে বাপ্পারাজ, নুসরাত ফারিয়া, সাবিলা নূর ও শবনম পারভিনকে ফোন করে তাদের মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে নৃত্তাঞ্চলের প্রতিষ্ঠাতা নৃত্য শিল্পী শিবলী মোহাম্মদ সমকালকে বলেন, ২০১৩ ও ১৪ সালের করে বকেয়া ছিল। সেগুলো তিনি কিস্তিতে পরিশোধ করছেন। ২০২৪ ও ২৫ সালেও কর পরিশোধ করেছেন। তারপরও তালিকায় কেন তার প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে সেই বিষয়ে তিনি কিছু জানে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের পর ৪৫ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ঝটিকা মিছিলের পর ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার তাঁদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের ভাষ্য, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড, জননিরাপত্তায় বিঘ্ন ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাসহ (ডিবি) থানা-পুলিশের সদস্যরা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন। শনিবার দুপুরে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
গতকাল বেলা দেড়টার দিকে বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঝটিকা মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বিকেলে ঝটিকা মিছিলের ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে ওই ঝটিকা মিছিল করতে দেখা যায়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পাপন লাল, বুড়িচং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর নুর তুষার, কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শের এ আলম, দাউদকান্দি উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহাগ মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা মুকবিল হোসেন, মুরাদনগরের পূর্ব ধইর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা শরিফ উদ্দিন, মুরাদনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. সম্রাট, লাকসামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাজী ইয়াছিন, নাঙ্গলকোটের একটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মশিউর রহমান ভূঁইয়া, পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি মজুমদার, কুমিল্লা নগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, ২২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো. আব্দুল হালিম, লালমাইয়ের বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অভি আহমেদ, বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, একই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন, দেবীদ্বারের জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়ন ও বরকান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মকবুলসহ ৪৫ জন।
জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার বুড়িচংয়ের কালাকচুয়া এলাকায় বেলা ১টা ৩০ মিনিট থেকে ৩১ মিনিট পর্যন্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সমর্থনে একটি ঝটিকা মিছিল হয়। ওই ঘটনার পরপরই জেলা ডিবি ও থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযুক্তদের আটক করেছে।
গ্রেপ্তার কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বিদেশে পলাতক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারসহ কিছু নেতা গোপনে অর্থ পাঠিয়ে সরকারবিরোধী কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করছেন। তাঁদের অর্থায়নেই কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে টাকার বিনিময়ে লোক ভাড়া করে এনে স্বল্প সময়ের ঝটিকা মিছিল করা হয়। মিছিলের বেশির ভাগ অংশগ্রহণকারী মুখ ঢেকে রেখেছিলেন, যাতে তাঁদের পরিচয় গোপন থাকে। পরে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা ডিবির ওসি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড, জননিরাপত্তায় বিঘ্ন ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে তাঁদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।