কর পরিশোধ না করায় বেশ কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই তালিকায় রয়েছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী, নুসরাত ফারিয়া, সাবিলা নূর, চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ ও অভিনেতা আহমেদ শরীফসহ ২৫ জন। 

রোববার এনবিআর কর অঞ্চল-১২ এর সহকারী কর কমিশনার কাজী রেহমান সাজিদের সই করা চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সূত্র জানায়, গত ১৫ জুন তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে এই ২৫ জনের ব্যাংক হিসাব, বকেয়া কর, টিআইএন, পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।

যাদের হিসাব জব্দ করা হয়েছে তারা হলেন- হাজী কামাল উদ্দিন, গোলাম মাওলা, ওসমান গণি, আশরাফ হোসেন, মো.

জহিরুল হক, জাহিদুর রহমান সিদ্দিক, জোৎস্না বেগম, ইউসুফ আলী, সাব্বির হোসেন বাপ্পি, জামাল উদ্দিন চৌধুরী, আল আমিন চৌধুরী, ইরফান সেলিম, কাজী রুবায়েত হাসান, নুসরাত ফারিয়া, নাসিমা খান, নুসরাত ইয়াসমিন তিশা, সাবিলা নূর, রেজাউল করিম (বাপ্পারাজ), এ কে এম মোশারফ হোসেন, শবনম পারভীন, পারভীন জামান মৌসুমী, আহমেদ শরীফ, নৃত্তাঞ্চল, এ কে এম হুমায়ন কবির ও মো. মিকাইল হোসেন।

জানা গেছে, এদের মধ্যে সর্বনিম্ন ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কর বকেয়া রয়েছে।

এ বিষেয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআর কর অঞ্চল-১২-এর এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, অনেকদিন ধরেই তারা কর পরিশোধ করছেন না। যেহেতু অর্থবছর শেষ হচ্ছে তাই তাদের তালিকা করা হয়েছে। কর পরিশোধ হলে আইন অনুযায়ী তাদের ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়া হবে।

কর বকেয়া থাকায় যাদের নাম এসেছে তালিকায় তাদের মধ্যে বাপ্পারাজ, নুসরাত ফারিয়া, সাবিলা নূর ও শবনম পারভিনকে ফোন করে তাদের মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে নৃত্তাঞ্চলের প্রতিষ্ঠাতা নৃত্য শিল্পী শিবলী মোহাম্মদ সমকালকে বলেন, ২০১৩ ও ১৪ সালের করে বকেয়া ছিল। সেগুলো তিনি কিস্তিতে পরিশোধ করছেন। ২০২৪ ও ২৫ সালেও কর পরিশোধ করেছেন। তারপরও তালিকায় কেন তার প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে সেই বিষয়ে তিনি কিছু জানে না।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘চোখের সামনে বসতবাড়ি ভাইঙ্গা নিল, পোলাপান লইয়া কই যামু’

চার সন্তানকে বুকে জড়িয়ে এক রাতে ঘর ছাড়তে বাধ্য হন শেরপুর সদর উপজেলার গৃহিণী নাজমা বেগম (৪৬)। চোখের সামনে নিজেদের শেষ আশ্রয়স্থলটি নদীতে বিলীন হতে দেখেন। এই অবস্থায় কোথায় যাবেন, কী করবেন—কিছুই বুঝতে পারছেন না। এমন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভাগলঘর গ্রামের এই বাসিন্দা বলেন, ‘চোখের সামনে বসতবাড়ি ভাইঙ্গা নিল (ব্রহ্মপুত্র নদ), পোলাপান লইয়া কই যামু?’

আপাতত দিনমজুর স্বামী আবদুল্লাহ ও সন্তানদের নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন নাজমা। তবে ভবিষ্যতে কোথায় যাবেন, এই ভেবে চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন। ব্রহ্মপুত্র নদে বসতভিটা হারানোর এই কষ্ট কিংবা অসহায়ত্ব শুধু নাজমা বেগমের একার নয়, চরপক্ষীমারি ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাগলঘর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের একই দুর্দশা। পরিবারগুলোর অভিযোগ, সরকারি উদ্যোগে ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে তারা।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, চরপক্ষীমারি ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে দক্ষিণ ভাগলঘর গ্রামের একাংশে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গ্রামটির প্রায় ৫০০ মিটার এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যেই অনেকের বসতভিটা নদে পুরোপুরিভাবে বিলীন হয়ে গেছে। আবার কোথাও নদের পাড় ঘেঁষে থাকা শূন্য ভিটায় উঁকি দিচ্ছে বাঁশের খুঁটি। এগুলো এখন সেই দুঃসহ বাস্তবতার সাক্ষী যেন। অনেকে তড়িঘড়ি নিজেদের ঘর থেকে আসবাব সরিয়ে কোনোরকমে এখানে-সেখানে ছড়িয়ে রেখেছেন।

ব্রহ্মপুত্রের তীর থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে আছে ভাগলঘর দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ ও সামাজিক কবরস্থান। ভাঙন রোধ করা না গেলে যেকোনো সময় এগুলো নদে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী। এর মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উদ্যোগে ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার জন্য বালু ভরার কাজ চলতে দেখা যায়।

নদের ভাঙনকবলিত স্থানে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভাগলঘর গ্রামে

সম্পর্কিত নিবন্ধ