শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজ শেষেই নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এমন গুঞ্জন ভাসছে চারিদিকে। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের পরই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে শান্তর।
এমন গুঞ্জনের মাঝে আজ (সোমবার) কলম্বোতে টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি অনুশীলনের আগে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অধিনায়কত্ব ছাড়ার প্রসঙ্গে শান্ত সরাসরি কিছু না বললেও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আলোচনা তো আগে থেকেই হচ্ছে, আলোচনা হোক, হতে থাক। আমি এই বিষয়ে এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ, সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট ম্যাচ রয়েছে। টেস্ট ম্যাচটাতে ভালোভাবে কন্ট্রিবিউট করতে চাই, একজন অধিনায়ক হিসেবে, একজন ব্যাটার হিসেবে। এই মুহূর্তে আলোচনাটা আলোচনার জায়গায় থাক।’
ক্রিকবাজের বরাতে জানা গেছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টের পর কিংবা সিরিজ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্তটি জানাতে পারেন শান্ত। যদিও বিষয়টি এখনও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে আলোচনার মধ্যেই রয়েছে। শান্তর ঘনিষ্ঠ এক সূত্র ‘ক্রিকবাজ’-কে জানায়, ‘আমি মনে করি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পর তিনি টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আর থাকবেন না। আমি তাকে অনেক দিন ধরে চিনি, এবং যতদূর আমি বুঝতে পারি তার সাথে যা ঘটেছে তাতে তিনি খুশি নন।’
তবে শান্ত বলছেন, ‘এই মুহূর্তে এরকম কোনো কিছু প্লান নেই।’ একই সঙ্গে টাইগার অধিনায়ক সমর্থকদের মাতামাতি না করতে অনুরোধ করেছেন, ‘সবার কাছে একটা অনুরোধ থাকবে খুব বেশি আলোচনা সমালোচনা মাতামাতির দরকার নেই। খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা টেস্ট ম্যাচ সামনে আশা করব এটা কিভাবে ভালো খেলা যায় সেটা নিয়ে চিন্তা করতে।’
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে এ ধরনের আলোচনা যে দলের জন্য কতটা অস্বস্তিকর এবং মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন শান্ত। এমন পরিস্থিতিতে এমন আলোচনা কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মনে করেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘কঠিন (সিরিজের মাঝখানে এই ধরনের আলোচনা)। এটা এটা আসলে এরকম হওয়া উচিত না। সত্যি বলতে এই ধরনের আলোচনাই হওয়া উচিত না। ইভেন শুধু টেস্ট ম্যাচের সময় না, কোনো ফরম্যাটের সময়ই এটা হওয়া উচিত না। আমি বলব যে এই ধরনের আলোচনা অন্তত সাত-আট দিন আগে থেকেই না হওয়া ভালো। বা তারও আগে। যত আগেই কমপ্লিট হয়ে যাবে ততই ভালো।’
অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত কখন নেওয়া উচিত সেই প্রসঙ্গেও শান্ত তুলে ধরেন তার মত, ‘ভালো খেলে কেউ কেউ দায়িত্ব ছাড়েন, আবার খারাপ খেললে সেটা করা যায় না এরকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বিষয়টি দলের ভালো-মন্দের ওপর নির্ভর করে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যে রানিকে ‘জীবন্ত দেবী’ হিসেবে গণ্য করা হতো
প্রাচীন মিশরের ১৮তম রাজবংশের একজন শক্তিশালী রানী এবং ফারাও আখেনাতেনের প্রধান রাজমহিষী ছিলেন রানি নেফারতিতি ছিলেন। এই নারী তার সৌন্দর্যের কারণে অধিক পরিচিত। এ ছাড়া ইতিহাসে তার অবস্থান শক্তিশালী হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, তিনি মিশরে একেশ্বরবাদী ধর্মীয় বিপ্লবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন।
নেফারতিতি নামের অর্থ ‘‘একজন সুন্দরী নারী এসেছেন’’। নেফারতিতির জন্ম আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১৩৭০ অব্দে।
আরো পড়ুন:
সঞ্চয় করার কিছু কার্যকর উপায়
আজ পুরুষদের রান্না করার দিন
জানা যায়, নেফারতিতির বাবা ছিলেন ফারাও আখেনাতেনের উপদেষ্টা এবং তিনিই কিশোর রাজকুমার আখেনাতেনের দেখাশোনা করতেন। বাবার সুবাদে শৈশবেই রাজকুমারের সঙ্গে পরিচয় হয় নেফারতিতির এবং অল্প বয়সেই তিনি আখেনাতেনের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে গড়ে তোলেন। ১৫ বছর বয়সে রাজকুমারের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। ক্রমে ফারাও আখেনাতেনের জীবনে অত্যন্ত গভীর প্রভাব বিস্তার করেন এই রানি।
আখেনাতেন মিশরের ঐতিহ্যবাহী বহু-ঈশ্বরবাদী ধর্ম পরিবর্তন করে ‘আতেন’ বা সূর্য দেবতার একেশ্বরবাদী পূজার প্রচলন করেছিলেন। এই ধর্মীয় পরিবর্তনে নেফারতিতি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং তাকে জীবন্ত দেবী হিসেবে গণ্য করা হতো।
আখেনাতেনের রাজত্বকালে নেফারতিতি একজন ফারাওয়ের মতোই ক্ষমতা এবং মর্যাদা ভোগ করতেন। অনেক ভাস্কর্য ও চিত্রে তাকে ফারাওদের মতো ক্ষমতা প্রদর্শন করতে দেখা যায়। বার্লিনের একটি জাদুঘরে সংরক্ষিত নেফারতিতির একটি মার্জিত এবং রঙিন আবক্ষ মূর্তি প্রাচীন মিশরীয় শিল্পের অন্যতম পরিচিত নিদর্শন।
আখেনাতেনের রাজত্বের প্রায় ১২ বছর পর হঠাৎ করেই নেফারতিতি ইতিহাস থেকে অদৃশ্য হয়ে যান। তার মৃত্যু সম্পর্কে খুব কম তথ্য জানা যায় এবং তার সমাধি আজও আবিষ্কৃত হয়নি, যা প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে একটি অনেক বড় রহস্য।
সূত্র: ব্রিটানিকা কিডস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি