একটি চীনা প্রবাদ অনুযায়ী, ‘নদীকে না দেখলে নদীও তোমায় দেখবে না। আর নদী দেখা বন্ধ করলেই... সব শেষ।’ সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পিয়াইন নদীর বর্তমান চিত্র দেখলে প্রবাদটির যথার্থতা উপলব্ধি করা যায়। এই ভরা বর্ষা মৌসুমেও খরস্রোতা পিয়াইনের বুকে বইছে খরা। একসময়ের প্রমত্তা পিয়াইন নদী এখন ধু ধু বালুচর। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে বিস্তৃত জনপদে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সময় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের অধিকাংশ পানি প্রবাহিত হতো পিয়াইন নদী দিয়ে। এ কারণে সচল নদীপথ হিসেবে এক সময়ে পিয়াইন নদীই সীমান্ত এলাকার লোকজনের ব্যবসা বাণিজ্য ও যোগাযোগের একমাত্র ভরসাস্থল ছিল। বর্তমানে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে পিয়াইন নদী দিয়ে ভরা বর্ষা মৌসুমেও নৌকা নিয়ে চলাচল করা দুষ্কর।
উৎসমুখ ভরাট হওয়ায় পিয়াইন নদী এখন মৃতপ্রায়। দীর্ঘ সময় ধরে এ অবস্থা বিরাজ করলেও নদীকে বাঁচাতে নেই কোনো উদ্যোগ। স্বাধীনতার আগে এমনকি পরেও পিয়াইন নদী নিয়ে নানা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ অর্ধশত বছরেও আলোর মুখ দেখেনি পিয়াইন নদী প্রকল্প।
স্থানীয় সংগ্রামপুঞ্জির বাসিন্দা সিলেট জেলা বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক স্টালিন তারিয়ান বলেন, ‘বহু বছর আগে পিয়াইন নদীতে ছিল ভরা যৌবন। নদীর বুক চিরে স্বচ্ছ জলের ধারা বয়ে যেত। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা পিয়াইনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতেন। নদীর পানি নানান কাজে ব্যবহার করতেন আশপাশের বাসিন্দারা। এখন পিয়াইন মরে গেছে। নদীটি বাঁচাতে কারও কোনো তৎপরতা নেই।’
পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.

রফিকুল ইসলাম বলেন, পিয়াইন নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি ডাউকি নদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্রতি বছরই তাঁর পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও জাফলং চা বাগানের ক্ষতি করছে। দ্রুত পিয়াইন নদী খননে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। 
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক 
রঞ্জন দাশ জানান, সুরমা ও কুশিয়ারা খনন প্রকল্পের সঙ্গে পিয়াইন নদীর ২৪ কিলোমিটার খনন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে পিয়াইনসহ অন্যান্য নদনদী খনন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ শুরু হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নদ

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসমুখ ভরাট, ভরা বর্ষাতেও ধু ধু বালুচর

একটি চীনা প্রবাদ অনুযায়ী, ‘নদীকে না দেখলে নদীও তোমায় দেখবে না। আর নদী দেখা বন্ধ করলেই... সব শেষ।’ সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পিয়াইন নদীর বর্তমান চিত্র দেখলে প্রবাদটির যথার্থতা উপলব্ধি করা যায়। এই ভরা বর্ষা মৌসুমেও খরস্রোতা পিয়াইনের বুকে বইছে খরা। একসময়ের প্রমত্তা পিয়াইন নদী এখন ধু ধু বালুচর। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে বিস্তৃত জনপদে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সময় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের অধিকাংশ পানি প্রবাহিত হতো পিয়াইন নদী দিয়ে। এ কারণে সচল নদীপথ হিসেবে এক সময়ে পিয়াইন নদীই সীমান্ত এলাকার লোকজনের ব্যবসা বাণিজ্য ও যোগাযোগের একমাত্র ভরসাস্থল ছিল। বর্তমানে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে পিয়াইন নদী দিয়ে ভরা বর্ষা মৌসুমেও নৌকা নিয়ে চলাচল করা দুষ্কর।
উৎসমুখ ভরাট হওয়ায় পিয়াইন নদী এখন মৃতপ্রায়। দীর্ঘ সময় ধরে এ অবস্থা বিরাজ করলেও নদীকে বাঁচাতে নেই কোনো উদ্যোগ। স্বাধীনতার আগে এমনকি পরেও পিয়াইন নদী নিয়ে নানা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ অর্ধশত বছরেও আলোর মুখ দেখেনি পিয়াইন নদী প্রকল্প।
স্থানীয় সংগ্রামপুঞ্জির বাসিন্দা সিলেট জেলা বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক স্টালিন তারিয়ান বলেন, ‘বহু বছর আগে পিয়াইন নদীতে ছিল ভরা যৌবন। নদীর বুক চিরে স্বচ্ছ জলের ধারা বয়ে যেত। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা পিয়াইনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতেন। নদীর পানি নানান কাজে ব্যবহার করতেন আশপাশের বাসিন্দারা। এখন পিয়াইন মরে গেছে। নদীটি বাঁচাতে কারও কোনো তৎপরতা নেই।’
পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পিয়াইন নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি ডাউকি নদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্রতি বছরই তাঁর পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও জাফলং চা বাগানের ক্ষতি করছে। দ্রুত পিয়াইন নদী খননে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। 
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক 
রঞ্জন দাশ জানান, সুরমা ও কুশিয়ারা খনন প্রকল্পের সঙ্গে পিয়াইন নদীর ২৪ কিলোমিটার খনন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে পিয়াইনসহ অন্যান্য নদনদী খনন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ শুরু হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ