মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ইরান আর ‘কখনো’ পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করতে পারবে না।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সাম্প্রতিক হামলার পর ইরানের আর পারমাণবিক কর্মকাণ্ড পুনরুদ্ধারের ক্ষমতা আছে কিনা।

নেদারল্যান্ডসে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যাওয়ার আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “ইরান কখনো নিজে পুনর্নির্মাণ করতে পারবে না্ সেই জায়গাটি পাথরের নিচে, সেই জায়গাটি ধ্বংস হয়ে গেছে।”

আরো পড়ুন:

ইরানের হামলার আগে কাতারের ঘাঁটি থেকে সৌদিতে যুদ্ধবিমান ও রসদ সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতিতে কাতারের ‘কূটনৈতিক বিজয়’

ট্রাম্প মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, বিশেষ করে অভিযানে জড়িত পাইলটরা তাদের কাজ করেছেন, কল্পনার চেয়েয়ও তারা ভালো করেছেন।

শনিবার রাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকান যুদ্ধবিমান বোমা হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্যগুলোর একটি ছিল ফোর্দো, ইরানের দূরবর্তী পাহাড়ি এলাকার ভেতর লুকানো একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”: অর্থ ও ফজিলত

ইসলামে জিকির মুমিনের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ, যা আল্লাহর সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ দৃঢ় করে এবং মনকে শান্তি প্রদান করে। এর মধ্যে “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” একটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ জিকির, যা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত।

এই জিকিরটি মানুষের দুর্বলতা ও আল্লাহর সর্বশক্তিমান ক্ষমতার প্রতি ঈমান প্রকাশ করে। এটি কঠিন পরিস্থিতিতে, দুশ্চিন্তায় বা কোনো কাজ শুরুর আগে পড়া হয়, যা মুমিনকে আল্লাহর উপর ভরসা করতে উৎসাহিত করে।

অর্থ

“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” এর অর্থ:“কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা ছাড়া।”

অর্থাৎ, এটি মানুষের সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে যে, কোনো কিছুই মানুষের নিয়ন্ত্রণে নয়; সবকিছু আল্লাহর হাতে। এই কথার মাধ্যমে একজন মুমিন স্বীকার করে যে, সকল শক্তি ও সাফল্যের উৎস একমাত্র আল্লাহ।

এই জিকির মানুষকে আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে শেখায় এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করে। (তাফসির মা’আরিফুল কুরআন, মুফতি শফি উসমানী, পৃষ্ঠা: ৮/২৪৫, মাকতাবাতুল আশরাফ, ২০১০)

আরও পড়ুনসর্বশ্রেষ্ঠ জিকির লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ফজিলত

হাদিসে এই জিকিরের গুরুত্ব ও পুরস্কার সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়। আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়ে, তা জান্নাতের ধনসম্পদের মধ্যে একটি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২০২)

এই জিকিরের ফজিলতের মধ্যে রয়েছে:

গুনাহ মাফ: এটি পড়ার মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয় এবং আল্লাহর রহমত অর্জিত হয়।

মানসিক শান্তি: কঠিন পরিস্থিতিতে এই জিকির মনের উদ্বেগ দূর করে এবং আল্লাহর উপর ভরসা বাড়ায়।

জান্নাতের পথ: হাদিস অনুযায়ী, এটি জান্নাতে প্রবেশের একটি মাধ্যম।

সুরক্ষা: এটি শয়তানের ক্ষতি ও বদ নজর থেকে রক্ষা করে। (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৭১)

আরও পড়ুনতাওহিদ বলতে কী বোঝায়১২ জুলাই ২০২৫কখন পড়তে হবে?

এই জিকিরটি যেকোনো সময় পড়া যায়, তবে নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে এটি বিশেষভাবে উপকারী:

কঠিন পরিস্থিতিতে: দুশ্চিন্তা, ভয় বা চাপের সময় এটি পড়া মানসিক শক্তি প্রদান করে।

কাজ শুরুর আগে: যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার আগে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা।

সকাল-সন্ধ্যার জিকির: প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়মিত পড়া।

নামাজের পর: ফরজ নামাজের পর জিকিরের অংশ হিসেবে পড়া। (ফিকহুস সুন্নাহ, সাইয়্যিদ সাবিক, পৃষ্ঠা: ২০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৮)

“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু গভীর তাৎপর্যপূর্ণ জিকির, যা মানুষকে আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হতে শেখায়। এর অর্থ—“কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা ছাড়া”—মুমিনের ঈমানকে দৃঢ় করে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার গুরুত্ব তুলে ধরে। এই জিকির জান্নাতের ধনসম্পদ, গুনাহ মাফের কারণ এবং মানসিক শান্তির উৎস। আধুনিক জীবনে ব্যস্ততা, উদ্বেগ ও চাপের মাঝে এই জিকির নিয়মিত পড়ার মাধ্যমে আমরা আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করতে পারি।

আরও পড়ুনধৈর্য গড়ে তুলতে কোরআনের ৬ শিক্ষা১৩ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ