দৌলতদিয়ায় যৌনকর্মীকে হত্যার পর লাশ ওয়ার্ডরোবে রেখে পালাল খুনি
Published: 24th, June 2025 GMT
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পূর্ব পাড়া যৌনপল্লি থেকে এক যৌনকর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ যৌনপল্লির সরোয়ার মণ্ডলের বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের ওয়ার্ডরোব থেকে লাশটি উদ্ধার করে।
ওই যৌনকর্মীকে মুঠোফোন চার্জারের কেব্ল দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর ওয়ার্ডরোবের ভেতর রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। পুলিশ আলামত হিসেবে গলায় প্যাঁচানো মুঠোফোনের কেব্ল চার্জার, একটি মুঠোফোন, অ্যাশট্রে জব্দ করেছে।
এর আগে গতকাল সোমবার সকালে দৌলতদিয়া যৌনপল্লি-সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত ডোবার পাশে নজরুল ব্যাপারী (৩০) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে নজরুলের বাড়ি প্রায় ১০০ গজ দূরে।
সরেজমিন দেখা যায়, বাড়িতে যৌনকর্মীদের পাশাপাশি উৎসুক লোকজনের ভিড়। বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় পশ্চিম-উত্তর দিকে একটি কক্ষে ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করতেন ওই যৌনকর্মী।
বাড়ির ভাড়াটে এক যৌনকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আজ সকাল ৯টার দিকে তাকে (যৌনকর্মী) বাড়ির গেটে দেখেছি। এ সময় ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী এক যুবক তাঁর ঘরে প্রবেশ করেন। ঘণ্টাখানেক পর ওই যুবক ঘর থেকে বের হলেও সে (যৌনকর্মী) আর বের হয়নি। দুপুর গড়িয়ে গেলেও তাকে না দেখে আমরা সবাই খুঁজতে থাকি। বিকেল পাঁচটার দিকে ঘরের ওয়ার্ডরোব খুলতেই দেখি, তাকে মেরে উপুড় করে ফেলে রাখা। সঙ্গে সঙ্গে আমরা যৌনপল্লির পুলিশ বক্সে খবর দিই।’
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) উত্তম কুমার ঘোষ।
ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ওয়ার্ডরোবের ড্রয়ার থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর গলায় মুঠোফোনের চার্জার কেব্ল দিয়ে শ্বাস রোধ করে প্যাঁচানো দাগ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাস রোধ করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাহাবিরা যেভাবে মহানবী (সা.)-কে মানতেন
নবীজি (সা.) র আনুগত্য প্রদর্শনে সাহাবিগণ অনন্য সব দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন। প্রথমত তাঁর আনুগত্য মানে আল্লাহর আদেশ পালন। দ্বিতীয়ত তাদের অন্তরে নবীজির প্রতি যে ভালোবাসা ছিল, সেই ভালোবাসার আহ্বানে তারা সাড়া দিয়েছেন। মানুষ তার সহজে মানে, যাকে সে ভালোবাসে। আমরা মাত্র তিনটি উদাহরণ উপস্থাপন করছি।
১. জুমার দিন মসজিদের মিম্বরে উঠে নবীজি (সা.) বললেন, ‘বসো তোমরা।’ আবদুলাহ ইবনে মাসউদ (রা.) শোনামাত্র মসজিদের দরজায় বসে গেলেন। তিনি ‘বসো’ শব্দটি শুনে নিজেকে আর এক পা এগোনোর অনুমতি দেননি; যেখানে ছিলেন, সেখানেই বসে গেলেন। নবীজি তাকে দেখলেন যে, তিনি দরজার মুখে বসে গেছেন। বললেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, এগিয়ে এসো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১,০৯১)
২. আবু আবদুর রহমান ফাহরি (রা.) বলেন, নবীজির (সা.) সঙ্গে আমি হোনাইনের যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। গ্রীষ্মের দিনে আমরা প্রচণ্ড রোদের মধ্য দিয়ে চলছিলাম। একসময় সকলে গাছের ছায়ায় বসলাম। সূর্য হেলে পড়লে আমার বর্মটি পরলাম এবং ঘোড়ায় চড়ে নবীজির কাছে এলাম। তিনি তার তাঁবুতে ছিলেন। তাকে সালাম দিয়ে বললাম, আল্লাহর রাসুল, ‘আমাদের যাওয়ার সময় হয়েছে কি?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ এরপর তিনি ‘বেলাল’ বলে ডাক দিলেন। বেলাল (রা.) সামুরা গাছের নীচ থেকে ছুটে এলেন। তার ছায়া দেখে মনে হচ্ছিল যেন পাখির ছায়া। তিনি বললেন, ‘আমি হাজির।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৫,২৩৩)
আরও পড়ুনঅতিথিপরায়ণ সাহাবি উম্মু শুরাইক (রা.)০১ এপ্রিল ২০২৫পাখির ছায়া’ বলার কারণ হলো, নবীজির আওয়াজ শোনামাত্র বেলাল (রা.) এত দ্রুত এসেছেন, যেন তার দু’পা মাটিতে ছিল না, ছায়া দেখে মনে হচ্ছিল পাখির ছায়া।
৩. উসাইদ ইবনে জহির (রা.) বলেন, রাফে ইবনে খাদিজ (রা.) আমাদের কাছে এসে বললেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) তোমাদের একটি বিষয় নিষেধ করেছেন, যা তোমাদের জন্য উপকারী। তবে মনে রেখো, আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করা আরও বেশি উপকারী। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস: ৩,৮৯৭)
অর্থাৎ, আল্লাহর রাসুল যা বলেছেন, তাতে বাহ্যিক দৃষ্টিতে উপকারী বিষয় গ্রহণে নিষেধ করেছেন বোঝা গেলেও তাতে দ্বিধায় পড়েননি সাহাবিরা। বরং বুঝে নিয়েছেন যে, নিশ্চয় রাসুলের কথা মেনে নিলে আল্লাহ এর চেয়ে বেশি উপকার দেবেন।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.) কীভাবে বিবাদ মেটাতেন২০ জুন ২০২৫