পীরগঞ্জে এনসিপির সমন্বয় কমিটি গঠনের ২০ দিন পর তিন নেতার পদত্যাগ
Published: 25th, June 2025 GMT
রংপুরের পীরগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটি গঠনের ২০ দিন পর তিন নেতা পদত্যাগ করেছেন। আজ বুধবার বিকেলে পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
পদত্যাগ করা তিন নেতা হলেন উপজেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য তৌফিক হোসেন, মোক্তাদি কেমি ও জাহাঙ্গীর আলম। তাঁরা দাবি করেন, দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। অন্যদিকে যাঁরা দলের শৃঙ্খলা ও আদর্শ রক্ষা করেননি, তাঁদের পদ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য তাঁরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে ৫ জুন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে পীরগঞ্জে ২৫ সদস্যের উপজেলা সমন্বয় কমিটি অনুমোদন করা হয়। কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে পদ পান এ এস মজনু। যুগ্ম সমন্বয়কারী হন রাকিব মিয়া, রাকিবুল ইসলাম ও মোদাব্বেরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তৌফিক হোসেন বলেন, ‘এই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া আমাদের ব্যক্তিগত মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও ন্যায়বোধের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সাংঘর্ষিক। আমরা গঠিত সমন্বয় কমিটি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কমিটিতে এমন ব্যক্তিদের রাখা হয়েছে, যাঁদের অতীত কর্মকাণ্ড বিতর্কিত। দলের জন্য কাজ করা ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের মূল্যায়ন না করে উপেক্ষা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নয়, একক সিদ্ধান্তে কমিটি গঠন করেছে। দলের শৃঙ্খলা ও আদর্শ রক্ষা করেননি, এমন ব্যক্তিদের সমন্বয়ক পদ দেওয়া হয়েছে।’ জুলাই আন্দোলনে সাহসিকতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়া নারী সংগঠকদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়।
তবে অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করে প্রধান সমন্বয়কারী এ এস মজনু বলেন, গণতান্ত্রিক নিয়ম মেনে কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিতর্কিত কাউকে রাখা হয়েছে, এমন অভিযোগ কেউ করেননি। সংগঠনের অনেক নারী আছেন, যাঁরা জাতীয় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ও জাতীয় যুবশক্তিতে যুক্ত হবেন। তাই তাঁদের কমিটিতে রাখা হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমন বয়ক প রগঞ জ পদত য গ কম ট ত য় কম ট গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘মব’–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি বাম জোটের
‘মব’ তৈরি করে লালমনিরহাটে বাবা–ছেলেকে মারধর এবং ঢাকায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সেই সঙ্গে মব–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে তারা।
বুধবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিষদের সভা থেকে এ দাবি জানানো হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেনের (প্রিন্স) সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, ২২ জুন লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দরিদ্র নরসুন্দর বাবা ও ছেলেকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় মব (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) সৃষ্টিকারী লোকজন। একই দিনে আওয়ামী লীগের প্রহসনের নির্বাচনে সহযোগিতাকারী সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে মব তৈরি করে জুতার মালা পরানো হয় ও মারধর করা হয়।
এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নেতারা বলেন, আইনের শাসনের বিরোধী ও গণতন্ত্রের পক্ষে হুমকিস্বরূপ এসব মব–সন্ত্রাস বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সভায় আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাস অতিবাহিত হলেও অব্যাহত মব–সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা সীমাহীন, যা কোনোক্রমে মেনে নেওয়া যায় না। শুধু সরকার নয়, সেনাপ্রধান মবের বিরুদ্ধে বলার পরও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে না। ফলে দেশের জনগণ আতঙ্কিত। তাঁরা অভিযোগ করেন, মব–সন্ত্রাসে সরকার নীরব থাকলেও, জনগণের বাক্স্বাধীনতা দমন করছে।
সভায় নেতারা বলেন, বর্তমান সরকার এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে বন্দরের টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে লিজ দেওয়া, রাখাইনে করিডর দেওয়াসহ ইত্যাদি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এর প্রতিবাদে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ রোডমার্চের ডাক দিয়েছে। চট্টগ্রামে রোডমার্চের প্রচার চলাকালে ২৩ জুন পুলিশ প্রচারকাজে নেতা–কর্মীদের বাধা দেয়। এ ধরনের আচরণ গণতন্ত্র পরিপন্থী।
সভায় রোডমার্চের প্রচারকাজে বাধা সৃষ্টির তীব্র নিন্দা জানিয়ে ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ সফল করার আহ্বান জানানো হয়।