অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক প্রত্যাখ্যান, শনিবার ‘মার্চ টু এনবিআর’
Published: 25th, June 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী শুক্রবারের মধ্যে এনবিআরের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানকে অপসারণ না করলে শনিবার ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার ও সহসভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা। তারা বলেন, গত ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, কর ও শুল্ক ক্যাডার কর্মকর্তাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে এনবিআরকে স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়ন আলাদা করার কাঠামোটি রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের পরামর্শের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। এর আগ পর্যন্ত অধ্যাদেশটি কার্যকর হবে না। কিন্তু একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ গঠন করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। অর্থাৎ সরকারের অবস্থান বদলেছে, যা প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ। এছাড়া অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ইন্ধনে এনবিআরে আন্দোলন চলছে। তবে কে বা কারা এই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী- তা তদন্ত করার দাবি তুলেছে ঐক্য পরিষদ।
আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এনবিআরের চলমান সমস্যা সমাধানে অর্থ উপদেষ্টা ড.
এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানকে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমলা আখ্যা দিয়ে ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেন, তাকে (চেয়ারম্যান) অপসারণের মধ্য দিয়েই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের যাত্রা শুরু হবে। এ জন্য আজ বৃহস্পতিবারও দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগে সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম-বিরতি চলবে।
আন্দোলনে যুক্ত থাকায় কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অবসর বা বদলিসহ যেকোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে সবাই সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করবে বলে হুমকি দিয়ে ঐক্য পরিষদ।
গত ২১ জুন সংবাদ সম্মেলনে দ্বিতীয় দফায় প্রথম কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। সরকার গত ১২ মে এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করে। এর বিরোধিতা করে গত ২৬ মে পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতির আন্দোলন করেন এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। আর ২৫ মে রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। এর ফলে ২৬ মে কলম বিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। তবে চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও তাকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
গত ২০ জুন এনবিআর কাঠামোগত সংস্কার কার্যক্রমে সমন্বয় করার জন্য ছয় সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে রাজস্ব বোর্ড। এনবিআর সদস্য (কর, লিগ্যাল ও এনফোর্সমেন্ট) ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকীকে এই কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ঐক্য পরিষদ বলছে, তাদের কোনো প্রতিনিধি না রেখে বিতর্কিত সদস্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনব আর কর মকর ত ন ত কর ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোট্জ এর সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরো পড়ুন:
ভুয়া তথ্য প্রচার ঠেকাতে গণমাধ্যমের ভূমিকা জরুরি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈঠকে শেখ হাসিনার রায় পরবর্তী জনমত ও সার্বিক পরিস্থিতি, জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি ও প্রস্তুতি, বন্দি প্রত্যর্পণ, সাইবার অপরাধ এবং দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকারে জার্মান রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ ও জার্মানি পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। অদূর ভবিষ্যতে এ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে বলে আশা করছি।”
নির্বাচনের তারিখ ও প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা আশা করি, নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে নির্দিষ্ট দিন-তারিখ ঘোষণা করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন যে তারিখই নির্ধারণ করুক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।”
শেখ হাসিনার রায়-পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। ছোটখাটো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত। কেউ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাইলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।”
অপরাধের মাত্রা সম্পর্কে তিনি বলেন, “অপরাধ বাড়ছে না; নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। মানুষ এখন স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারছে, যা বিগত ১৫ বছরের কথিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সম্ভব হয়নি।”
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান এবং জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আন্যা কেরস্টেন উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী