এত নোংরামি করার পরও ভদ্রতার লাইন ক্রস করিনি: ইশরাকের বক্তব্য প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
Published: 25th, June 2025 GMT
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, ‘এত নোংরামি করার পরও গত দেড় মাসে একবারের জন্যও ভদ্রতার লাইন ক্রস করিনি। একবারও ব্যক্তি আক্রমণ করা কিংবা ছোট করে কথা বলিনি।’
‘আমার লড়াই, রাজপথ, রাজনৈতিক পথচলা কিংবা পরিবার কেউই আমাকে এই শিক্ষা দেয়নি’ উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ আরও বলেছেন, ‘আমি ধৈর্য ধরেছি, জবাব দিইনি বলে যে এসব অন্যায় জবাবহীন থেকে যাবে, এমনটা না। ইতিহাস সবাইকেই যার যার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলন এবং গতকাল নগর ভবনে দুই পক্ষের মারামারির প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া অত্যন্ত আপত্তিকর কিছু কথা বলেছেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আসিফ বলেছে বিএনপির এক নেতার ইন্ধনে ইশরাকের আন্দোলন হয়েছে। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ঢাকার হাজার হাজার ভোটারকে চরম অপমান করা হয়েছে। ঝড়, বৃষ্টি, তীব্র রোদ উপেক্ষা করে দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম করে আন্দোলন করা ঢাকার এই জনগোষ্ঠীকে একটি বাক্য উচ্চারণের মধ্য দিয়ে নাগরিক থেকে পশুর মর্যাদায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটার জন্য তাকে অবশ্যই নাগরিকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’
ইশরাক হোসেন এই বক্তব্য দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি বলেন, ‘অকারণে আমার ছবিতে জুতা মারার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? গুজবকে কেন্দ্র করে আমার পিতাকে “চালচোর” বলে স্লোগান দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? শুরুতেই সরকারপক্ষ থেকে সমাধানের চেষ্টা যারা দম্ভভরে প্রত্যাখ্যান করে ভোগান্তির জন্য দায়ী তারা ক্ষমা চেয়েছে?’
প্রশ্ন তুলে আসিফ মাহমুদ আরও লিখেছেন, ‘নগর ভবন বন্ধ করে এক কোটির বেশি নগরবাসীকে কষ্ট দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? নগর ভবন দখলকে কেন্দ্র করে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ এবং আহত হওয়ার ঘটনায় কেউ ক্ষমা চেয়েছে? ইশরাক হোসেনের বক্তব্য অনুযায়ী উপদেষ্টা পরিষদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের জন্য আমাকে বারবার ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ, আমার পরিবারকে আক্রমণ, জবাই করার স্লোগান দেওয়াসহ অব্যাহত মানহানির জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে?’
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ লেখেন, ‘কিন্তু আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে কারণ আমি বলেছি কয়েকজন নেতার প্ররোচনায় এই আন্দোলন হয়েছে। আমি সত্যি বলেছি, এবং সত্যি যে বলেছি এটা তিনিও জানেন। তাঁকে যে ট্র্যাপে ফেলা হয়েছে, ফর আ বেটার ন্যাগোসিয়েশন (নেগোসিয়েশন–সমঝোতা) ব্যবহার করা হয়েছে তা তিনি ভালো করেই জানেন এবং আমার পরিচিত একাধিক ব্যক্তির কাছে স্বীকারও করেছেন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
২০০১-এর সীমানা বহাল চান স্থানীয় বিএনপি নেতারা
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানাসংক্রান্ত খসড়া দ্রুত প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতাসহ বিভিন্ন আসনের বিক্ষুব্ধ প্রতিনিধিরা। এ দাবিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তারা।
বৈঠকে ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনের সময়কার সংসদীয় আসন পুনর্বহাল চেয়েছেন তারা। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সভাকক্ষে এ বৈঠক হয়। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সামনে মানববন্ধন করেছেন কুমিল্লা-২ সংসদীয় এলাকার বাসিন্দারা।
বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কুমিল্লা-৯ আসনের সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ১৯৮৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যেভাবে নির্বাচনী আসন ছিল, সেভাবে পুনর্বহাল করতে হবে। এটা আমাদের সর্বজনীন দাবি। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানাসংক্রান্ত খসড়া প্রকাশের আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা কাজ করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ তারা বৈঠক করতে আসেননি। বিভিন্ন আসন থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন। সবার দাবি, ২০০১ সালের সীমানা অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করা।
এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও মুন্সীগঞ্জের প্রতিনিধি আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, বৈঠকে সিইসি, নির্বাচন কমিশনার ও সচিব আশ্বস্ত করেছেন– এবার অনৈতিকভাবে আসন বণ্টন হবে না। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী আসন বিন্যাস করে উপহার দেবে কমিশন।
কুমিল্লা-২ আসন পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন এর আগে হোমনা ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-২ আসনটি আগের মতোই বহাল রাখার দাবিতে নির্বাচন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন বিপুলসংখ্যক এলাকাবাসী। ‘কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) নাগরিক সমাজ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও এই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে সেলিম ভূঁইয়া বলেন, মেঘনার সঙ্গে দাউদকান্দি উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ নেই। হোমনা ও মেঘনা এলাকার মানুষ একই সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। অন্যদিকে দাউদকান্দি থেকে তিতাস উপজেলার সৃষ্টি। তাই দাউদকান্দির সঙ্গে তিতাস মিলে কুমিল্লা-১ এবং হোমনার সঙ্গে মেঘনা মিলে কুমিল্লা-২ আসনটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সেভাবেই বহাল রাখতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল বাশারের সভাপতিত্বে ও মোজাম্মেল হক মুকুলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্থানীয় বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ, আ. অদুদ মুন্সী, সানাউল্লাহ সরকার, নজরুল ইসলাম, আব্বাস উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।