নির্ভুল পাঠ্যবই নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 25th, June 2025 GMT
২০২৬ সালের ১ জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে নির্ভুল পাঠ্যবই পৌঁছে দিতে সরকার সর্বোচ্চ অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার।
তিনি বলেছেন, “পাঠ্যবইয়ের পূর্বের ভুলভ্রান্তি যেন আর না থাকে, সেই লক্ষ্যে সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।”
বুধবার (২৫ জুন) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন’ সংক্রান্ত বিশেষ এক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপদেষ্টা নিজেই।
আরো পড়ুন:
ইকসু গঠন ও আইন প্রণয়নের দাবি ইবির ২ ছাত্র সংগঠনের
পদ্মায় গোসলে নেমে ২ কলেজ ছাত্রের মৃত্যু
উপদেষ্টা বলেন, “২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ছাপা বইগুলোতে বানান ও ব্যাকরণগত ভুল, ছাপার অসঙ্গতি এবং তথ্যগত বিভ্রান্তি ধরা পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রাথমিকভাবে ১২৩টি পাঠ্যপুস্তক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পৃথকভাবে পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত পাওয়ার পর এনসিটিবি সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সংশোধনের কাজ করবে।”
উপদেষ্টা আরো বলেন, “শিক্ষা হলো বৈষম্য দূর করার অন্যতম শক্তিশালী হাতিয়ার। তাই পাঠ্যবই উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে যারা সরাসরি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন, সেই শিক্ষকদের মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
এ লক্ষ্যে সারা দেশের শিক্ষক সমাজকে সংশ্লিষ্ট পাঠ্যবই পর্যালোচনায় অংশ নিতে আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “শিক্ষকরা নির্ধারিত ফরমে ও সময়সীমার মধ্যে নির্ধারিত ই-মেইলে তাদের মতামত জমা দিতে পারবেন। এনসিটিবি খুব শিগগিরই এই প্রক্রিয়া চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, “শ্রেণিকক্ষের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতেই কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। সময় নিয়ে, আলোচনা করে, লাইন বাই লাইন দেখে এটি নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে গণিত ও রসায়নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানের সর্বাধুনিক সংস্করণের ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।”
এনসিটিবির চেয়ারম্যান সভায় জানান, ইতোমধ্যে কিছু পাঠ্যপুস্তকে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম দস্তগীর কাজী ইংরেজি পরিভাষার যথাযথ ও মানসম্পন্ন ব্যবহারের ওপর জোর দেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাঠ্যবই উন্নয়নের এই কার্যক্রমে শিক্ষক ছাড়াও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সম্পৃক্ত করা হবে।
শেষে সবার সুচিন্তিত মতামত ও বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণই ভবিষ্যতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করাবে বলে আশাবাদও ব্যক্ত করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বই দ র মত মত প ঠ যবই এনস ট ব উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলন যমুনা থেকে সরে গেছে, কিছুদিন পর গ্রামে নির্বাচনের কাছে দাঁড়াবে: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এখনো কেউ জুলাই সনদ স্বাক্ষর করার জন্য আদেশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। আর কেউ বলছে, আদেশ জারি করে জনগণের অভিপ্রায় পূর্ণ হয়েছে কিন্তু গণভোটের বিষয়ে তাদের কথা আছে।
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন। ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার রূপান্তর: একটি কৌশলগত রোডম্যাপ’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
পাঁচ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দলের আন্দোলনের সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আপনারা দেখবেন আর পাঁচ সাত দিন গেলেই ইনিয়ে–বিনিয়ে এই আন্দোলন এখন তো যমুনা থেকে সরে এসেছে আর কিছুদিন পর গ্রামে গিয়ে নির্বাচনের কাছে গিয়ে দাঁড়াবে। গতকাল শুনলাম যে আপাতত আমাদের আন্দোলন আর যমুনায় নেই। তো যাই হোক, এখন হয়তো মন যমুনায় অনেক কিছু চিন্তা করবে কিন্তু শেষমেষ নির্বাচনেই দাঁড়াতে হবে।’
সেমিনারে একটি পক্ষের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গত বছরের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির অর্ডারের মাধ্যমে সংসদ বাতিল করা হলো। তখন একটি পক্ষ জিজ্ঞাসাও করেনি সেখানে শেখ হাসিনার দস্তখত আছে কি না। এখন অনেকে আর্গুমেন্ট করছে, কেউ কেউ হাইকোর্টেও যাচ্ছে যে এই সরকারের পুরোপুরি বৈধতা নেই। তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। বিভিন্ন বাহানায় তারা একটা লিগ্যাল কেওয়াজ সৃষ্টি করবে, যাতে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হয় বা যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান না হতে পারে অথবা নির্বাচনই না হয়। তাতে তারা ক্ষমতা ভোগ করবে।’
যাদের কথা বলা হচ্ছে, তারা সরকারের কেউ নয় উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সরকারের নিয়ত মনে হয় ঠিক আছে। সরকারের নিয়ত নিয়ে কথা বলার মতো পরিস্থিতি এখনো আসেনি। সরকারের ভেতর কারও কারও ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে, তবে প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোনো কারণে সেটি না হলেও সেই কারণে তাঁকে ধন্যবাদ জানানো হবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক মোর্শেদ হাসান খান। এতে আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ।