২০২৬ সালের ১ জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে নির্ভুল পাঠ্যবই পৌঁছে দিতে সরকার সর্বোচ্চ অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার।

তিনি বলেছেন, “পাঠ্যবইয়ের পূর্বের ভুলভ্রান্তি যেন আর না থাকে, সেই লক্ষ্যে সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।”

বুধবার (২৫ জুন) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন’ সংক্রান্ত বিশেষ এক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপদেষ্টা নিজেই।

আরো পড়ুন:

ইকসু গঠন ও আইন প্রণয়নের দাবি ইবির ২ ছাত্র সংগঠনের

পদ্মায় গোসলে নেমে ২ কলেজ ছাত্রের মৃত্যু

উপদেষ্টা বলেন, “২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ছাপা বইগুলোতে বানান ও ব্যাকরণগত ভুল, ছাপার অসঙ্গতি এবং তথ্যগত বিভ্রান্তি ধরা পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রাথমিকভাবে ১২৩টি পাঠ্যপুস্তক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পৃথকভাবে পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত পাওয়ার পর এনসিটিবি সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সংশোধনের কাজ করবে।”

উপদেষ্টা আরো বলেন, “শিক্ষা হলো বৈষম্য দূর করার অন্যতম শক্তিশালী হাতিয়ার। তাই পাঠ্যবই উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে যারা সরাসরি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন, সেই শিক্ষকদের মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

এ লক্ষ্যে সারা দেশের শিক্ষক সমাজকে সংশ্লিষ্ট পাঠ্যবই পর্যালোচনায় অংশ নিতে আহ্বান জানান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “শিক্ষকরা নির্ধারিত ফরমে ও সময়সীমার মধ্যে নির্ধারিত ই-মেইলে তাদের মতামত জমা দিতে পারবেন। এনসিটিবি খুব শিগগিরই এই প্রক্রিয়া চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, “শ্রেণিকক্ষের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতেই কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। সময় নিয়ে, আলোচনা করে, লাইন বাই লাইন দেখে এটি নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে গণিত ও রসায়নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানের সর্বাধুনিক সংস্করণের ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।”

এনসিটিবির চেয়ারম্যান সভায় জানান, ইতোমধ্যে কিছু পাঠ্যপুস্তকে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড.

সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া বলেন, “প্রতিটি বই রিভিউ করতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট সময় ও পদ্ধতি ঠিক করতে হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম দস্তগীর কাজী ইংরেজি পরিভাষার যথাযথ ও মানসম্পন্ন ব্যবহারের ওপর জোর দেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাঠ্যবই উন্নয়নের এই কার্যক্রমে শিক্ষক ছাড়াও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সম্পৃক্ত করা হবে।

শেষে সবার সুচিন্তিত মতামত ও বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণই ভবিষ্যতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করাবে বলে আশাবাদও ব্যক্ত করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বই দ র মত মত প ঠ যবই এনস ট ব উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

না বুঝে ডাউনলোড অনুমতি ঝুঁকিপূর্ণ

সাইবার চক্রের নতুন হাতিয়ার এপিকে। সংক্ষেপে বললে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন প্যাকেজ বা এপিকে। নব্য ঘরানার সাইবার আক্রমণে বিশেষভাবে ফাইলটি শনাক্ত করেছেন গবেষকরা। কয়েকটি পন্থায় এপিকে ফাইল ডাউনলোডে বিভ্রান্তের প্রচেষ্টা চলে সব সময়।

ল্যাপটপ, স্মার্টফোন বা স্মার্ট ডিভাইসে এমন ফাইল ডাউনলোড করলেই হ্যাকাররা তাৎক্ষণিক উদ্দেশ্য পূরণ করে। হতে পারে তা আর্থিক বা একেবারে ব্যক্তিগত।

প্রথমেই স্মার্ট ডিভাইসটি চলে যাবে প্রতারক চক্রের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে। ঠিক তখন থেকেই শুরু ব্ল্যাকমেইল। অনেকে আবার সরাসরি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইবে ফটো বা ভিডিও গ্যালারিতে। অর্থাৎ যা কিছু সম্ভব, নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রচেষ্টা করবে।

বিশেষ চক্রটি আগে কোনো ব্যাংক-বীমা বা অন্য কোনো পরিষেবা দাতার সার্ভিস নাম ভাঙিয়ে এসএমএস বা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ছড়াত। ওই সব লিঙ্কে নীরব ঘাতক হয়ে থাকত ম্যালিশিয়াস, যা ক্লিক করলেই বিপদ অনিবার্য।

ব্যাংক বা পরিষেবার সুনির্দিষ্ট লোগো, সিল ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলার অনেক ঘটনাই সামনে আসছে। কখনও আবার অন্যসব সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে চলছে অবিরাম প্রচেষ্টা।

বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজনে সাইবার বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, নিজের ব্যবহৃত স্মার্ট ডিভাইসে অবশ্যই অনুমোদিত অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিম্যালওয়্যার সচল রাখতে হবে। ফলে অনেকাংশে ক্ষতিকর এপিকে ফাইল ডাউনলোড করার আগে ডিভাইস থেকে ওয়ার্নিং মেসেজ দৃশ্যমান হবে, যা ক্ষতির ঝুঁকি এড়াতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে।

কিছুদিন ধরে বিশেষ উদ্দেশ্যে টার্গেটকে কখনও রিওয়ার্ড পয়েন্ট জিতবে, কখনও অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এপিকে ফাইল ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। আক্রান্ত ওই ফাইল স্মার্ট গ্যাজেটে কোনোভাবে রান করাতে পারলেই ঝুঁকি বাড়বে। ডিভাইসে ঘটবে ক্ষতিকর অনুপ্রবেশ।

সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সহজলভ্য এপিকে ফাইল আকারে কম জায়গা নেয়, যার আকার অনেক সময় কিলোবাইট হয়।

আবার অনেক সময় মেগাবাইট হয়। ফলে একবার ওই ফাইলের ফাঁদে পড়ে ক্লিক করলে খুব দ্রুত তা ইনস্টল হয়ে যাবে নিজস্ব ডিভাইসে। আর ঝটপট তা আক্রান্ত ডিভাইসে সক্রিয় হবে কোনো না কোনো অ্যাপের মধ্যে। হঠাৎ ফোন অস্বাভাবিক আচরণ করলে তাৎক্ষণিক ফোনটি আগে বন্ধ করতে হবে। তাতে ওই ফাইলের কার্যক্রম মাঝপথে থেমে যাবে। 

ভুক্তভোগী অনেকের ধারণা, ফাইলটি কোনো ব্যাংকের দাপ্তরিক সাইট বা হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো হয়েছে। তাই ডিভাইসে ইনস্টল হলে সমস্যা হবে না। বিপত্তির শুরু ঠিক সেখানেই। তাই ব্যাংকিং নোটিফিকেশন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ