রাস্তাটি ভেঙে গিয়েছিল গত বর্ষায়। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় চাঁদা তুলে সেই রাস্তা সংস্কার করেন এলাকাবাসী। অথচ সংস্কারের নাম করে সরকারি প্রকল্পের টাকার অর্ধেক তুলে নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের শহরগোপীনপুরে এ ঘটনা ঘটে। 

এলাকাবাসীর ভাষ্য, প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তাটি শহরগোপীনপুর থেকে মহিষেরচালা পর্যন্ত গেছে। সেটি বর্ষায় ভেঙে যাওয়ায় গ্রামবাসী মাস পাঁচেক আগে সংস্কারের উদ্যোগ নেন। বাড়ি বাড়ি থেকে চাঁদা তুলে তা দিয়ে কাজ করেন তারা।

ওই গ্রামের মো.

শাহজাহান বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, সরকার পরিবর্তনের কারণে হয়তো রাস্তার কাজ হবে না। প্রায় পাঁচ মাস আগে কয়েকজন মিলে বাড়ি বাড়ি ঘুরে টাকা তুলি। এ কাজে সঙ্গে রাখা হয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামকে। ৮৫ হাজার টাকায় পুরো রাস্তা সংস্কার করা হয়। মাটি ফেলা হয় প্রায় ৯০ ট্রাক।’

লোকজনের অভিযোগ, সংস্কার করা রাস্তাটির নামই ২০২৪-২৫ অর্থবছরে টিআর বরাদ্দের তালিকায় তুলে দেন ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম। বরাদ্দ হয় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানায়, প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম ইতোমধ্যে প্রথম কিস্তির ৬৫ হাজার টাকা তুলে নেন। একই প্রকল্পে সম্পাদক দেখানো হয়েছে নাজমুল হাসানকে। তিনি নিজেও এ পদের বিষয়ে জানেন না। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সব সদস্যের সই থাকা বাধ্যতামূলক। 

নাজমুল হাসান বলেন, ‘লোক মারফত জানতে পারি, আমি ওই প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক। কত টাকা বরাদ্দ, তা-ও জানিনা। কোথাও কোনো কাগজে সই করিনি। রাস্তায় দু-তিন ট্রাক মাটি ফেলে শাক দিয়ে মাছ ঢাকা হয়েছে। পাহাড়ি মাটি ফেলায় সামান্য বৃষ্টিতেই সেখানে কাদার সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগ পোহাতে হয় মানুষকে।’ এ বিষয়ে তিনি ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি (শহিদুল) প্রকল্পটি নিয়ে ‘লাফালাফি’ করতে নিষেধ করেন।

এলাকাবাসীর সংস্কার করা রাস্তার নাম প্রকল্পের তালিকায় দিয়ে টাকা তোলায় বিষয় জানাজানি হলে গ্রামের লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। বক্তব্য জানতে ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। ধলাপাড়া ইউপির প্রশাসক বাহাউদ্দিন সারোয়ার রেজভীর দাবি, ‘এলাকাবাসী চাঁদা তুলে রাস্তা করেছেন, এ ধরনের কিছু আমার জানা নেই। সরেজমিন গিয়ে রাস্তায় মাটি ও বালু ফেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এনামুল হক বলেন, প্রকল্পের সভাপতিকে কাজ করার জন্য প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়, যা মোট টাকার অর্ধেক। কাজের অগ্রগতি ও কাগজপত্র দেখে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ছাড় হবে। কাজে কোনো অনিয়ম থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স স ক র কর প রকল প র এল ক ব স

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। 

নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়।  পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ