শেষ নয়, আল-নাসরে নতুন অধ্যায়ের শুরু রোনালদোর
Published: 26th, June 2025 GMT
মাত্র এক মাস আগেও ইনস্টাগ্রামে নিজের কোটি ভক্তকে রোনালদো বলেছিলেন, “এই অধ্যায় শেষ। গল্পটা, এখনো লেখা বাকি।” অনেকেই ভেবেছিলেন, সৌদির ক্লাব আল-নাসরের সঙ্গে তার পথচলা বুঝি শেষ। কিন্তু বাস্তবতা হলো, নতুন করে চুক্তি নবায়ন করে সেই অধ্যায়ে তিনি যোগ করলেন আরেকটি রোমাঞ্চকর পর্ব।
বিশ্বজুড়ে অসংখ্য প্রস্তাব এলেও পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই পর্তুগিজ সুপারস্টার থেকে গেলেন আল-নাসরেই। ট্রান্সফার বিশ্লেষক নিকোলো শিরার তথ্যমতে, রোনালদোর চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল এই গ্রীষ্মেই। তবে শেষমেশ সৌদি কর্তৃপক্ষ তার মতো একজন তারকাকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
গত মে মাসে তার ইনস্টাগ্রাম বার্তায় চলে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রোনালদো। শিরোনাম হয়েছিল—এটা তার শেষ মৌসুম। কিন্তু সৌদি প্রো লিগে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) ব্যাপক আলোচনার পর তাকে রাজি করাতে সক্ষম হয়। রোনালদোকে নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিল আল-হিলাল ও আল-আহলির মতো ক্লাবগুলোও।
আরো পড়ুন:
কষ্টের জয়ে শেষ ষোলোতে ইন্টার, বরুসিয়াও নকআউট পর্বে
বার্ষিক বেতন ৪০ লাখ ডলার, রিয়াল ছেড়ে কোন ক্লাবে যাচ্ছেন মদ্রিচ?
২০২২ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়ার পর সৌদিতে পাড়ি জমানো এই তারকা এখন পর্যন্ত কোনো শিরোপা না জিতলেও ক্লাবটির সর্বোচ্চ তারকা হিসেবে ২০২৪-২৫ মৌসুমে ৪১ ম্যাচে ৩৫ গোল করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। যদিও আল-নাসর টেবিলের তৃতীয় স্থানে শেষ করেছে। চ্যাম্পিয়ন আল-ইত্তিহাদের থেকে ১৩ পয়েন্ট পিছিয়ে।
সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলেও আলো ছড়িয়েছেন রোনালদো। নেশনস লিগে জার্মানি ও স্পেনের বিপক্ষে গোল করে নিজ দেশ পর্তুগালকে চ্যাম্পিয়ন বানান।
আর্থিক দিক থেকেও তিনি অনন্য। ফোর্বস-এর সর্বকালের সর্বোচ্চ আয় করা অ্যাথলেটদের তালিকায় শুধু ফ্লয়েড মেওয়েদারের পেছনে আছেন রোনালদো। তার আল-নাসর চুক্তির আর্থিক মূল্য প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩.
এ যেন রোনালদোর ক্যারিয়ারের গল্পে নতুন মোড়। যেখানে “শেষ” বলে কিছুই নেই, শুধু পরিবর্তন আর অভিযাত্রার নামেই চলে রোনালদোর যাত্রা।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলের কলেজে কুমিল্লার বাসিন্দাকে সভাপতি করায় সমালোচনা
টাঙ্গাইল শহরের মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনীত করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের জামাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে। নজরুল ইসলামের পৈত্রিক বাড়ি কুমিল্লায়। এ নিয়ে টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্থানীয়দের মাঝে সমালোচনা হচ্ছে। এক জেলার বাসিন্দা আরেক জেলা শহরের কলেজের সভাপতি কীভাবে হয়, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
গভর্নিং বডি গঠনের জন্য অভিভাবক প্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি, হিতৈষী সদস্য, দাতা সদস্য ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্যে গত ৩০ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৩০ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। ৬ মে থেকে ৭ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়। ৮ মে মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। ১২ মে মনোনয়ন আপত্তি ও নিষ্পত্তি করা হয়। ১৩ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা হয়। ১৪ মে চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৮ মে কলেজ প্রাঙ্গনে ভোটারদের ভোট গ্রহণ করা হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার গত ২৩ জুন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নজরুল ইসলামকে সভাপতি ও মো. শফিকুল ইসলামকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনীত করে কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর চিঠি পাঠান।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে কলেজছাত্রীর ১ মাসেরও খোঁজ মেলেনি
জাল প্রবেশপত্র: সিলেটে ছাত্রীর ১ বছর কারাদণ্ড
জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব এম এ বাতেন বলেন, ‘‘যেহেতু কলেজটি টাঙ্গাইলের। সেই ক্ষেত্রে টাঙ্গাইলের কেউ যদি সভাপতি মনোনীত হতেন, তাহলে কলেজ, কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে পারতেন।’’
জেলা বিএনপির সভাপতি ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি প্রার্থী হাসানুজ্জামীল শাহীন বলেন, ‘‘মাহমুদুল হাসান কলেজটি টাঙ্গাইলের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান। যাকে মনোনীত করা হয়েছে, তার বাড়ি টাঙ্গাইলে না। তার শ্বশুর বাড়ি টাঙ্গাইলে। তার শ্বশুর আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি ভুল বুঝিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সভাপতি হয়েছেন। এটার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। টাঙ্গাইল একটি বড় জেলা। সেই জেলা যদি ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীরা সভাপতি হয়, তাহলে বিষয়টি নিন্দনীয়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘নজরুল ইসলামকে সভাপতি বাতিল করে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা যিনি কলেজ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে পারবেন, এমন ব্যক্তিদের সভাপতি করার আহ্বান জানাই। তিনি কলেজে আসলে টাঙ্গাইলের মানুষ এর প্রতিবাদ জানাবে।’’
জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, ‘‘আওয়ামী পরিবারের সদস্য নজরুল ইসলামকে মাহমুদুল হাসান কলেজের সভাপতি মনোনীত করার আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ফ্যাসিস্টদের কোনো জায়গায় স্থান হবে না। প্রয়োজনে তাকে টাঙ্গাইলে প্রতিরোধ করা হবে।’’
জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন জেলা শাখার সভাপতি ফাতেমা রহমান বীথি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি নিন্দা জানাই। টাঙ্গাইল সৎ, যোগ্য ও কলেজ এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবেন এমন ব্যক্তিদের মনোনীত করার দাবি করছি।’’
মাহদুল হাসান কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে আমরা চিনতাম না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিপূর্বে দুই বার এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করেছিল। এবার তিনি সভাপতি হলেও আমরা প্রতিষ্ঠান থেকে তার নাম প্রস্তাবনায় পাঠাইনি। আমরা সভাপতি পদে তিন জন ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য পদে তিন জনের নাম পাঠিয়েছিলাম।’’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/কাওছার/বকুল