সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ওপর হামলার ঘটনাটি বর্বর ও নির্দয়: মাহমুদুর রহমান মান্না
Published: 27th, June 2025 GMT
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার ওপর হামলার ঘটনাটি পৃথিবীর মানুষ দেখলে বাংলাদেশের মানুষকে অসভ্য ও বর্বর সম্বোধন করবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্যের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মান্না এই মন্তব্য করেন। ‘চাই ক্ষমতার দাপটমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটিতে মান্না মব ভায়োলেন্সের সমালোচনা করেন।
মান্না বলেন, ‘সেদিন নূরুল হুদার ওপর যে হামলা হলো, বিশ্বাস করুন আপনাদের কেমন লেগেছে জানি না। আমি টিভিতে যখন দেখলাম, সাধারণ লোকজন তাঁর গালে থাপ্পড় দিচ্ছে, জুতা দিয়ে বাড়ি দিচ্ছে। এত বড় নির্দয় ও বর্বর ঘটনা আমি খুব কম দেখেছি। সারা পৃথিবীর মানুষ দেখলে বলবে, বাংলাদেশের মানুষগুলো অসভ্য বর্বর। এগুলো বন্ধ করতে হবে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নূরুল হুদা এত বড় অপরাধ করেছে, তার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে। বিচার করে সেই শাস্তি দেন। কিন্তু এ রকম করে জনগণের নামে হই হই করে হুজুগের ওপর যে কারও গায়ে হাত তোলা হলে একসময় নিরীহ মানুষগুলো পর্যন্ত পর্যুদস্ত হবে, হেনস্তা হবে। অপমান হবে। এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ হওয়া উচিত।’
মান্না বলেন, ‘আমি মব জাস্টিস বলি না। এটা মব ভায়োলেন্স। একেবারে একধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। কোনো একটা প্রতিষ্ঠানের প্রতি কোনো মানুষের প্রতি বিক্ষোভ। লোক জড়ো করছে। মব তৈরি করছে। হামলা করছে। এ রকম হতে পারে না। আমরা আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি। আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান নাম নিয়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হেফাজত আমির এ কথা বলেন। জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘জাতীয় উলামা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম-উলামা অংশ নেবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলামি রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে।’
মুন্সিগঞ্জের জামি’আ ইসলামিয়া হালীমিয়া মাদ্রাসার প্রধান ও মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে লড়তে মরব, কিন্তু বিভক্ত হব না ইনশা আল্লাহ।’ তিনি বলেন, ১৬ নভেম্বরের কাদিয়ানিবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। যারা কাজ করতে চায়, তাদের বাধা দেব না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হব না, ইনশা আল্লাহ।’
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ প্রমুখ।