সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার ওপর হামলার ঘটনাটি পৃথিবীর মানুষ দেখলে বাংলাদেশের মানুষকে অসভ্য ও বর্বর সম্বোধন করবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্যের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মান্না এই মন্তব্য করেন। ‘চাই ক্ষমতার দাপটমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটিতে মান্না মব ভায়োলেন্সের সমালোচনা করেন।

মান্না বলেন, ‘সেদিন নূরুল হুদার ওপর যে হামলা হলো, বিশ্বাস করুন আপনাদের কেমন লেগেছে জানি না। আমি টিভিতে যখন দেখলাম, সাধারণ লোকজন তাঁর গালে থাপ্পড় দিচ্ছে, জুতা দিয়ে বাড়ি দিচ্ছে। এত বড় নির্দয় ও বর্বর ঘটনা আমি খুব কম দেখেছি। সারা পৃথিবীর মানুষ দেখলে বলবে, বাংলাদেশের মানুষগুলো অসভ্য বর্বর। এগুলো বন্ধ করতে হবে আমাদের।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নূরুল হুদা এত বড় অপরাধ করেছে, তার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে। বিচার করে সেই শাস্তি দেন। কিন্তু এ রকম করে জনগণের নামে হই হই করে হুজুগের ওপর যে কারও গায়ে হাত তোলা হলে একসময় নিরীহ মানুষগুলো পর্যন্ত পর্যুদস্ত হবে, হেনস্তা হবে। অপমান হবে। এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ হওয়া উচিত।’

মান্না বলেন, ‘আমি মব জাস্টিস বলি না। এটা মব ভায়োলেন্স। একেবারে একধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। কোনো একটা প্রতিষ্ঠানের প্রতি কোনো মানুষের প্রতি বিক্ষোভ। লোক জড়ো করছে। মব তৈরি করছে। হামলা করছে। এ রকম হতে পারে না। আমরা আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি। আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর বর র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

‘মাথায় সমস্যা’র চিকিৎসা নিতে এসে চিকিৎসকের ওপর চড়াও, ধরে দেওয়া হলো থানায়

‘মাথায় সমস্যা’ দেখা দেওয়ায় নারায়ণগঞ্জ থেকে এক তরুণকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলেন তাঁর মা–বাবা। শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আরিফ হোসেন নামের ওই তরুণকে নিউরোসার্জারির চিকিৎসক দেখাতে আনা হয়। সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফ চিৎকার করে চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন। এরপর ওই তরুণকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আরিফ ওই চিকিৎসকের ওপর চড়াও হলে তার প্রতিবাদে নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের অন্য চিকিৎসকেরা রোগীদের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ওই ওয়ার্ডে আসেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পরিচালকের নির্দেশে হাসপাতালে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা আরিফকে আটক করে শাহবাগ থানার পুলিশের সোপর্দ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, আরিফ হোসেনকে ডিএমপি অধ্যাদেশ আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার তাঁকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হবে।

আরিফ (১৮) সপরিবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিমপুর খিল মার্কেট এলাকায় থাকেন। তিনি সেখানে একটি প্রিন্টিং কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলেন তাঁর বাবা তাজউদ্দীন ও মা শিল্পী বেগম। ঘটনার পর তাঁরা হাসপাতালের পরিচালককে বলেন, নারায়ণগঞ্জের একজন চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁরা ছেলেকে এই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসক দেখাতে এবং সিটি স্ক্যান করাতে এসেছিলেন।

আরিফের অভিভাবকেরা জানান, এক সপ্তাহ আগে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় তাঁদের ছেলে মারধরের শিকার হয়েছিলেন। তার পর থেকে মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। তিনি ঠিকমতো কথা বলেন না, হঠাৎ রেগে যান। সেই ঘটনার পর থেকে চিকিৎসক দেখাচ্ছেন। এই কথা শোনার পর ও কাগজপত্র দেখে চিকিৎসকেরা শান্ত হন এবং কাজে ফিরে যান। ফলে ওয়ার্ডের চিকিৎসাসেবা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. আসাদুজ্জামান তখন বলেন, আরিফের মা-বাবা হাসপাতালে এসেই চিকিৎসককে এ কথা কেন জানালেন না। তাহলে তো এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ