শতভাগ আবাসন, চাকসু নির্বাচন ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারসহ সাত দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবির। এ সময় আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা না গেলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

রবিবার (২৯ জুন) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সংগঠনটি।

সাত দফা দাবি বাস্তবায়নে আগামী ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত সংস্কার ক্যাম্পেইন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। এর মধ্যে, ১ জুলাই প্রতীকী সিট বণ্টন, ৩ জুলাই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময়, ৭ জুলাই গণস্বাক্ষর কর্মসূচি এবং ১০ জুলাই সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন।

আরো পড়ুন:

আন্দোলন নিয়ে ‘হতবাক’ শহীদ আবু সাঈদের পরিবার

জাবিতে ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে রাবি শিক্ষার্থী আটক

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাখা শিবির সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, “এ দেশের বুকে জুলাই নেমে এসেছিল, যখন মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল, যখন শিক্ষাঙ্গনে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, মাদক, অনৈতিকতা ও বেহায়াপনার সয়লাব, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য ও শিক্ষকদের একটা অংশ দলীয় দাসে পরিণত হয়েছিল। মানুষ ২ হাজার শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আশায় বুক বেঁধেছিল।”

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা তাদের সাথীদের লাশের বিনিময়ে একটি শিক্ষাবান্ধব নিরাপদ ক্যাম্পাস ও ন্যায্য অধিকার চেয়েছিল। আবারো আমাদের মাঝে জুলাই আসন্ন। কিন্তু ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা প্রশাসনের কাছে জুলাইয়ের বার্তা কী? শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে?”

তিনি আরো বলেন, “ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে আসছে। শত জুলুম-নিপীড়ন, গুম-খুন, হত্যা এবং মিডিয়া সন্ত্রাসের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ যত বেশি শিক্ষার্থীদের থেকে আমাদের দূরে সরাতে চেয়েছে, ছাত্রশিবির তার চেয়ে বহুগুণ বেশি ভালোবাসা পেয়ে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছে। শহীদদের আকাঙ্ক্ষা বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশিত একটি ক্যাম্পাস উপহার দিতে অধিকার সংশ্লিষ্ট সাত দফা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে চবি ছাত্রশিবির।”

তাদের সাত দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে; সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে অনতিবিলম্বে সেশনজট নিরসন এবং শিক্ষার আধুনিকায়ন নিশ্চিত করতে হবে; পর্যাপ্ত ও নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে; অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচন দিতে হবে।

বাকি দাবিগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ পুনর্নির্মাণ এবং আবাসিক হল ও অন্যান্য স্থাপনাসমূহ সংস্কার করতে হবে; জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনামলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার এবং জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতে হবে; বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অবৈধ নিয়োগের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।

এদিকে, এসব দাবিগুলো নিয়ে একটি বুকলেট প্রণয়ন করেছে চবি শাখা শিবির। সংবাদ সম্মেলনে বুকলেটের সারসংক্ষেপ পেশ করেন শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী।

সংবাদ সম্মেলন আরো উপস্থিত ছিলেন, শাখা শিবিরের দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ খালেদ, প্রচার সম্পাদক মো.

ইসহাক ভূঁঞা, অর্থ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজ উদ্দিন প্রমুখ।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ ত করত

এছাড়াও পড়ুন:

বাজুসের নতুন সভাপতি এনামুল হক খান

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনে (বাজুস) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভাস’র এনামুল হক খান। সংগঠনটির ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য তিনি দায়িত্ব পালন করবেন ।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে বাজুস কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাজুস নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, বৈধ প্রার্থীদের মধ্য থেকে কোনো প্রার্থী তাদের মনোনয়পত্র প্রত্যাহার না করায় বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা-২০২৫ এর ২৪(১) ধারা মোতাবেক বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচনযোগ্য পদের সমান হওয়ায় ৩৫ জন প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বাজুসের ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের একজন সিনিয়র সহ-সহভাপতি, ৩ জন সহ-সভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষ এবং ২৯ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছে। এদের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এখন থেকে আর কেউ থাকবেন না। ফলে সাধারণ সম্পদ পদে কেউ নির্বাচিত হননি। বাজুস প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সাধারণ সম্পদ পদ বিলুপ্ত করা হলো।

বাজুসের নবনির্বাচিত সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, আমরা সোনার ব্যবসা করি। মানুষকে বোঝাতে হবে ব্যবসায়ীরা কিন্তু চোরাকারবারী না। একটি আলোর পথ অন্যটি অন্ধকার পথ। আমরা আলোর পথে আছি। যারা চোরাকারবারী করে তারা কোনোদিন সোনা ব্যবসায় আসবে না। আর যারা সোনা ব্যবসা করে তারা কোনোদিন চোরাকারবারীতে জড়াবে না।

তিনি বলেন, আমাদের সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। সোনা আমদানির ব্যবস্থা আছে, কিন্তু এতো কঠিন প্রক্রিয়া যে, এই কঠিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সোনা আমদানি করতে গেলে যেই দাম দাঁড়ায়, সেই দাম দিয়ে কেউ সোনা কিনতে আগ্রহী না। আর এজন্য যতদিন সোনা আমদানি সহজ না হয়, ততোদিন পর্যন্ত ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে সোনা যে সহজে আসতো, সেটা চালু করার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করবো।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে ভ্যাট ৫ শতাংশ অথচ আমাদের পাশের দেশে ভ্যাট অনেক কম। আমরা ভ্যাট কমানোর জন্য কাজ করবো।

বাজুসের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সানন্দা জুয়েলার্স (প্রা.) এর রনজিৎ ঘোষ, সহ-সভাপতি পদে আপন ডায়মন্ড হাউজের আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের অভি রায় এবং জেসিএক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের ইকবাল হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন নিউ ফেন্সী জুয়েলার্স’র অমিত ঘোষ।

বাজুসের পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. মিলন মিয়া, পবন কুমার আগোওরালা, তানভীর রহমান, মো. লিটন হাওলাদার, বাবুল দত্ত, গনেশ দেবনাথ, আশিস কুমার মন্ডল, মিনাজুর রহমান, বিকাশ ঘোষ, সুমন চন্দ্র দে, মোস্তাফা কামাল, ধনঞ্জয় সাহা (বিপুল), শ্রীবাস রায়, মো. আলী হোসেন, মো. রুবেল, মো. নয়ন চৌধুরী, মো. ছালাম, ফাহাদ কামাল লিংকন, গৌতম ঘোষ, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম, সৌমেন সাহা, আককাছ আলী, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, শাওন আহমেদ চৌধুরী, মো. নাজমুল হুদা লতিফ এবং পলাশ কুমার সাহা।

ঢাকা/নাজমুল/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জবি শিবিরের মেধাবীদের তালিকায় নেই ৩ বিভাগের শিক্ষার্থী
  • জকসু নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদলের ১২ দাবি
  • ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির
  • বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখকের রাবি শাখার নতুন কমিটি
  • বাজুসের নতুন সভাপতি এনামুল হক খান
  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রম সচল করার পর তিন জেলায় তিন নেতার পদত্যাগ