চট্টগ্রামের পটিয়ায় মামার বাড়িতে বেড়াতে এসে পুকুরে ডুবে শান্ত নন্দী (১৮) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের অনুকূল ঠাকুর সংলগ্ন ধরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শান্ত নন্দী রংপুর জেলার সঞ্জয় নন্দীর ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি চট্টগ্রাম শহরের একটি ভাড়া বাসায় মা–বাবার সঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন। চার দিন আগে তিনি বেড়াতে আসেন মধ্যম হাইদগাঁওয়ের বটতল এলাকার নানা বিমল সেনের বাড়িতে।

স্থানীয় পল্লিচিকিৎসক সঞ্জয় সেন জানান, বেলা একটার দিকে শান্ত তাঁর মামাতো ভাই ও স্থানীয় বন্ধুদের সঙ্গে পুকুরে গোসল করতে নামেন। সবার সঙ্গে সাঁতার কেটে পুকুরের এক পাশ থেকে আরেক পাশে যাওয়ার সময় শান্ত মাঝপথে তলিয়ে যান।

গোসল শেষে সবাই ঘরে ফিরলেও শান্ত না ফেরায় সন্দেহ জাগে। পরে তাঁর বন্ধুরা পুকুরপাড়ে গিয়ে তাঁর কাপড়চোপড় দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে পুকুরে খোঁজাখুঁজি করে পানির নিচ থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

এরপর দ্রুত পটিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্তকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাইদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রনজিত কুমার চৌধুরী। তিনি বলেন, তাঁরা প্রতিদিনের মতো পুকুরে গোসল করতে যান। গোসল শেষে দুজন বন্ধু অন্য পারে পৌঁছালেও শান্ত পারেননি। পরে তাঁর খোঁজ শুরু হলে পুকুরেই পাওয়া যায় তাঁকে।

পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ নুরুল আবছার বলেন, আজ বেলা দুইটার দিকে শান্ত নামের এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো.

আসিফ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

শান্তর মামাতো ভাই সুভাষ সেন জানান, শান্ত নন্দী এ বছর চট্টগ্রামের কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়।

এই দুর্ঘটনায় শান্ত নন্দীর পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবাই বলছেন, একটি আনন্দঘন বেড়ানোর মুহূর্ত কীভাবে বিষাদে পরিণত হলো, তা বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ন ত নন দ

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ