আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি সংসদীয় আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠের জনসভা থেকে এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দলটি। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এ সময় জনসভার মঞ্চে রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার সবগুলো আসনের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। 

বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার সবগুলো আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী রংপুর বিভাগের জামায়াতের প্রার্থীরা হচ্ছেন
রংপুর জেলা
রংপুর-১ অধ্যাপক রায়হান সিরাজী
রংপুর-২ এটি এম আজহারুল ইসলাম
রংপুর-৩ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল
রংপুর-৪ মাওলানা উপাধ্যক্ষ এটি এম আজম খান
রংপুর-৫ গোলাম রাব্বানী
রংপুর-৬ মাওলানা নূরুল আমিন

দিনাজপুর জেলা
দিনাজপুর-১ মতিউর রহমান
দিনাজপুর-২ অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন আনাম
দিনাজপুর-৩ অ্যাডভোকেট মনিরুল আলম
দিনাজপুর-৪ আবতাব উদ্দিন মোল্লা
দিনাজপুর-৫ আনোয়ার হোসেন
দিনাজপুর-৬ আনোয়ারুল ইসলাম

নীলফামারী জেলা
নীলফামারী-১ অধ্যাক্ষ মাওলানা আব্দুর সাত্তার
নীলফামারী-২ (ঘোষণা করা হয়নি)
নীলফামারী-৩ ওবাইদুল্লাহ সালাফি
নীলফামারী-৪ মাওলানা হফেজ আব্দুল মুনতাকিম

লালমনিরহাট জেলা
লালমনিরহাট-১ আনোয়ারুল ইসলাম
লালমনিরহাট-২ অ্যাডভোকেট ফিরোজ হায়দার লাভলু
লালমনিরহাট-৩ হারুনূর রশিদ

কুড়িগ্রাম জেলা
কুড়িগ্রাম-১ অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম
কুড়িগ্রাম-২ অ্যাডভোকেট ইয়াসিন আলী
কুড়িগ্রাম-৩ ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহী
কুড়িগ্রাম-৪ মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক

গাইবান্ধা জেলা
গাইবান্ধা-১ অধ্যাপক মাজেদুর রহমান
গাইবান্ধা-২ আব্দুল করীম
গাইবান্ধা-৩ অধ্যাক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম
গাইবান্ধা-৪ ডা: আব্দুর রহিম সরকার
গাইবান্ধা-৫ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওরেস

ঠাকুরগাঁও জেলা
ঠাকুরগাঁও-১ দেলোয়ার হোসেন
ঠাকুরগাঁও-২ আব্দুল হাকিম
ঠাকুরগাঁও-৩ মিজানুর রহমান

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচনসহ চার দফা দাবিতে রংপুরে এই জনসভার আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগর ও জেলা শাখা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.

শফিকুর রহমান।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতগুলো মৌলিক সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। আমরা সেই সব সংস্কারের কথা বলেছি। সংস্কারগুলো আদায় করে ছাড়ব।’

শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচনসহ চার দাবিতে জনসভার আয়োজন করে জামায়াতের রংপুর জেলা ও মহানগর শাখা।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কেউ যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলের নির্বাচনের স্বপ্ন দেখে থাকে, আমরা সেই স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করব। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। কোনো প্রশাসনিক ক্যু করতে দেওয়া হবে না। ভোটকেন্দ্রে কোনো মাস্তানতন্ত্র চলতে দেওয়া হবে না, কালো টাকার কোনো খেলা সহ্য করা হবে না।’

জামায়াতে ইসলামী সব সময় মবের ঘোরবিরোধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মব ১৯৭২ সাল থেকে শুরু হয়েছে। তবে মব সমর্থন করার সুযোগ নেই আমাদের। কোনো নাগরিক নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অধিকার রাখে না। এখন দেশে এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এজন্য আগে পরিবেশ-পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে। এই পরিবেশ তৈরির জন্যই সংস্কারের প্রস্তাব এসেছে। তাই আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন করতে হবে।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এই বাংলাদেশে মদিনার ছায়ার আলো দেখতে চাই। শরিয়াহর কথা শুনলে অনেকের গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে যায়। কারণ, তারা ঘুষ-দুর্নীতি করতে পারবে না, যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে না।’

‘উত্তরের দুঃখ তিস্তা নদী’ উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। এ নিয়ে টালবাহানা দেশের মানুষ আর সহ্য করবে না।’

১৭ বছর পর রংপুরে অনুষ্ঠিত জামায়াতের জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এ টি এম আজহারুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের রংপুর মহানগরের আমির এ টি এম আজম খান। জনসভার মঞ্চ থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম র রহম ন ব র ল ইসল ম ইসল ম র জনসভ র ঠ ক রগ

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির

জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় মৌলিক সংস্কার ছাড়া কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। ইনশাআল্লাহ, সংস্কার করেই নির্বাচন হবে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াতের আয়োজনে বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “আগামী নির্বাচনে কালো টাকা ও অপকর্ম রুখতে যুবকদের মাঠে থাকতে হবে। সব যুবককে এ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।”

সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৫৪ বছর ধরে যারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে মায়াকান্না করেছে, তারাই জাতির ক্ষতির জন্য দায়ী। আমরা সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করব। সংবিধানের পাহারাদার হবো। দেশের মালিক নয়, সেবক হবো, ইনশাআল্লাহ।”

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “গত ১৫ বছরে আমাদের ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে অন্যায়ভাবে হত্যা ও বহু নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। তবু, বিপ্লব-পরবর্তী ১০ মাসে আমরা কোনো প্রতিশোধ নিইনি। আমরা অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে নয়, মানবিক রাষ্ট্র গঠনে জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে দেশে মবতন্ত্র চলছে। জামায়াত মব রাজনীতি সমর্থন করে না। জনগণ মব সন্ত্রাসীদের বিচার দেখতে চায়। মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী কঠোর অবস্থানে থাকবে।”

তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন ও জুলাই বিপ্লবে আবু সাঈদসহ অন্যদের হত্যার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, এ নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না।

জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের ঢল নামে। তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে জনসভাস্থলেই দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায় করেন তারা।

জনসভায় বক্তব্য দেন দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকা জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে এসেছি। এখন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিজেকে উৎসর্গ করব।”

আবু সাঈদের জীবনের বিনিময়ে তার মুক্তি হয়েছে, উল্লেখ করে এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, “অন্যায়ভাবে যারা ১৫ বছর ইসলামপ্রিয় মানুষদেরকে জেল-জুলুম দিয়েছে, তারা মানবতাবিরোধী অপরাধী। এই কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দিতে হবে।”

শুক্রবার বিকেল ৩টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জামায়াতের আমিরের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জনসভা শেষ হয়। সভায় রংপুর অঞ্চলের ৩৩টি আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। 

অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্যে দিয়ে উত্তরাঞ্চল সফর শুরু করেন ডা. শফিকুর রহমান। সেই ধারাবাহিকতায় এ পর্যন্ত রংপুর বিভাগে তিনি ১০টি জনসভা করেন। এ টি এম আজহারুল ইসলামের কারামুক্তির পর আজ একাদশতম জনসভা করা হলো।

ঢাকা/আমিরুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার আদায় করে ছাড়ব: জামায়াত আমির
  • নির্বাচন সামনে রেখে বহু ষড়যন্ত্রের কথা শুনতে পাচ্ছি: শফিকুর রহমান
  • সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির
  • নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সংস্কার জরুরি: জামায়াত আমির
  • জামায়াতের জনসভায় ঢল নেমেছে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে
  • ভালো নির্বাচনের জন্য সংস্কার জরুরি: জামায়াতের আমির
  • রংপুরে জামায়াতের জনসভাস্থলে জমতে শুরু করেছে কর্মী-সমার্থক
  • রংপুরে আজ জামায়াতের জনসভা, দুই লাখ লোক সমাগমের টার্গেট
  • রংপুরে উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম জনসভার প্রস্তুতি জমায়াতের