জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে যাত্রী সেজে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে উঠেছিলেন দুজন। তাঁরা বাবা-ছেলে পরিচয় দিয়ে ভ্যানটি ভাড়া নেন। পথে চালককে ছুরিকাঘাত ও মারধর করে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যান ওই দুজন।

গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে আক্কেলপুর-জয়পুরহাট সড়কের মাতাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ভ্যানচালক নুর আলম (৪৫) জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের পশ্চিম আমুট্টা মহল্লার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নুর আলমের পিঠের তিনটি জায়গায় ব্যান্ডেজ। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্ন। শয্যার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা।

নুর আলম বলেন, গতকাল রাত ১০টার পর আক্কেলপুর রেলস্টেশনে যাত্রী খুঁজছিলেন। ১১টার পর একটি ট্রেন ছাড়লে এক ব্যক্তি ও এক কিশোর তাঁর কাছে এসে নিজেদের বাবা-ছেলে পরিচয় দেন। তাঁরা প্রথমে জয়পুরহাট, পরে জামালগঞ্জ বাজার যেতে চান। ১৫০ টাকা ভাড়া চাইলে তাঁরা ১০০ টাকা দিতে চান। এতে রাজি হয়ে তিনি তাঁদের ভ্যান তুলে নেন। ভাল্কি সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীদের একজন গেঞ্জি ফেলেছে বলে জানিয়ে ভ্যান থামাতে বলেন। সন্দেহ হওয়ায় নুর আলম গতি বাড়িয়ে লোকালয়ের দিকে যেতে চেষ্টা করেন। তখন পেছন থেকে তাঁর পিঠে তিনবার ছুরিকাঘাত করা হয়। তিনি ভ্যান থেকে পড়ে গেলে তাঁকে মারধর করে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যান ছিনতাইকারীরা।

নুর আলম বলেন, ‘ভ্যানই আমার উপার্জনের একমাত্র সম্বল। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আমার মারা যাওয়া ভালো ছিল। এখন সংসার চালামু কেমনে?’

আক্কেলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং আহত ভ্যানচালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনে। এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র আলম

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ