সমকামিতার অভিযোগ ওঠার পর ডুয়েটের পাঁচ ছাত্রকে হল থেকে বহিষ্কার
Published: 24th, July 2025 GMT
সমকামিতায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) পাঁচ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদিকে তাঁদের বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
ডুয়েটের পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) অধ্যাপক উৎপল কুমার দাস স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ওই পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লিখিত ছাত্রদের সমকামিতার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি সঠিক তদন্ত ও ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাময়িকভাবে হল থেকে বহিষ্কার করা হলো।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, কিছু শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে সমকামিতায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজী নজরুল ইসলাম হলের তিনজন ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের দুজনকে হল থেকে বহিষ্কার করে। এ ছাড়া আর কেউ জড়িত আছেন কি না, সেটা তদন্ত করতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে ওই পাঁচ ছাত্রের বিচারের দাবিতে আজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের দাবি, ওই পাঁচজনকে শুধু হল থেকে নয়, ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। তা ছাড়া সমকামিতা বন্ধে আইন করার দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডুয়েটের পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) অধ্যাপক উৎপল কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সমকামিতা বন্ধের আইন করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলেই আইন করতে পারে না। আইন করার জন্য আলাদা কমিটি গঠন করতে হবে। সেই কমিটি করার বিষয়ে আগামী রোববার বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ওই পাঁচ ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমক ম ত আইন কর হল থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস