পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক ২৯ জুলাই
Published: 24th, July 2025 GMT
পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২৯ জুলাই অনলাইনে বৈঠক হবে। এ তথ্য আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানিয়েছেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ওই দিন বৈঠকটি বাংলাদেশ সময় রাত আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত হবে। যেহেতু এটি দর-কষাকষির বিষয়, তাই আমরা এখনো চেষ্টা করছি, এটি সশরীর করার জন্য।
তবে আজ দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত পাল্টা শুল্কের হার কমানোর বিষয়ে অবশেষে দেশটির সঙ্গে বৈঠকের তারিখ পেয়েছে বাংলাদেশ। সরকার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে আলোচনা করার জন্য অপেক্ষায় থাকলেও বৈঠকটি হচ্ছে আপাতত অনলাইনে। আগামীকাল শুক্রবার এ বৈঠক হবে।
কিন্তু সন্ধ্যায় জানা গেল বৈঠকটি পিছিয়ে ২৯ জুলাই নেওয়া হয়েছে।
আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা নিজ দপ্তরে এলে সাংবাদিকেরা যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। আগামী ১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা, দেশটির সঙ্গে তৃতীয় দফার আলোচনার কোনো খবর আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘গত পরশু দিন (২২ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিকে (ইউএসটিআর) আমাদের করণীয় সম্পর্কে একটি পত্র দিয়েছি। এখন জবাবের অপেক্ষায় আছি, আমন্ত্রণেরও আছি। পেলে দর-কষাকষি করার দল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা হয়তো একটা অনলাইন বৈঠকের শিডিউল পাচ্ছি আজ-কালের মধ্যে। বিষয়গুলো গতিশীলভাবে এগোচ্ছে বলেই আমাদের চিঠির ওপর ভিত্তি করে তারা একটি অনলাইন বৈঠকের সময় দিয়েছে। এ বৈঠকেই আমরা পরবর্তী সময়ের কর্মকাণ্ড ঠিক করব। অনলাইন বৈঠক সম্ভবত কাল হবে।’
আগামী ১ আগস্টের পরেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জন্য যেমন প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও প্রয়োজন। আর এ বিষয়ে আমাদের কর্মকাণ্ডে কোনো স্থবিরতা নেই। কর্মকাণ্ড যথেষ্ট গতিশীলতার সঙ্গে এগোচ্ছে।’
বাংলাদেশের অবস্থান সঠিকভাবে তুলে ধরার কথা জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘সক্ষমতার ভিত্তিতে আমাদের যা করণীয়, তা তুলে ধরেছি। এখন আছি যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণের অপেক্ষায়।’
নিজের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি বা দেশটিকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে বাংলাদেশ—বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসা এমন অভিমতের বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার কোনো বক্তব্য নেই। আপনার মতো আমিও একজন বাংলাদেশি। দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে আমরা কেন কাজ করব?’
বাণিজ্য উপদেষ্টা এ বিষয়ে আরও বলেন, যদি তা-ই হতো, তাহলে তো আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের দরকার পড়ে না। নির্দিষ্ট কোনো কিছু মেনে নিয়ে কাজটা করে ফেললেই হয়ে যায়। স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার প্রশ্ন এলে এত পরিশ্রমেরও দরকার নেই। তিনি বলেন, ‘সরকারের প্রায় সব মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে। এর ওপর ১৫ দিন ধরে দিন-রাত কাজ হয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি, তাদের আমন্ত্রণ পেলে আলোচনা করতে যাব।’
বাংলাদেশ কী প্রত্যাশা করছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশটির কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা করছি। এ জন্য করণীয় কাজগুলো করছি।’ নতুন শুল্কহার কার্যকরের আর এক সপ্তাহ বাকি থাকার এ সময়ে দর-কষাকষি বা আলোচনার আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ কতটা আশাবাদী, এ বিষয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি আপনার মতোই আগ্রহী।’
দর-কষাকষির জন্য লবিস্ট নিয়োগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এটি ব্যবসায়ীদের এখতিয়ার। সরকার কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি। আপনাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ভিত্তিতে কাজটি করছে। এ কাঠামোতে লবিস্টদের করার কোনো কিছু আছে কি না, আমি ঠিক জানি না।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। এ পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। পরিবর্তনগুলোতে আন্তমন্ত্রণালয়–সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো আইনি প্রক্রিয়া আছে। এ আইনি প্রক্রিয়াগুলো একজন লবিস্টের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় বলে আমার ধারণা।
সর্বশেষ বৈঠক থেকে ভালো কোনো ইঙ্গিত পেয়েছিলেন কি না, জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমাদের হয়তো ভালো কিছু হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান সিপিজের
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। দোষীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার সিপিজের এক টুইটে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি মিলন ত্রিপুরা ১৭ জুলাই একটি বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন ও ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।