অন্তর্বর্তী সরকার নানা ধরনের দেশবিরোধী চুক্তি করে চলেছে অভিযোগ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটির নেতারা বলেছেন, দেশ ধীরে ধীরে সাম্রাজ্যবাদের খপ্পরে পড়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সাম্রাজ্যবাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করে দেশের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দিতে চায়।

তা ছাড়া দেশে অরাজক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো উন্নয়ন ঘটছে না বলেও মনে করেন সিপিবির নেতারা। তাঁদের ভাষ্যমতে, এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবি নেতারা এসব কথা বলেছেন। সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে এই সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাজ্জাদ জহির। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক লুনা নূর। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিপিবি এসব তথ্য জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার দেশবিরোধী গোপন চুক্তি করেছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিবি। এই চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে সিপিবি বলেছে, জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশবিরোধী গোপন চুক্তি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা দেশবাসী কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না।

সমাবেশ থেকে রাখাইনের জন্য করিডর দেওয়ার অপচেষ্টা বন্ধ এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন চালুর করার চক্রান্ত বন্ধের দাবিও জানিয়েছে সিপিবি।
সমাবেশে সিপিবির নেতারা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর জনগণ ভেবেছিল বিভিন্ন দেশের সঙ্গে করা গোপন চুক্তি জনগণের সামনে উন্মুক্ত হবে এবং তা বাতিল হবে।

অথচ দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার তা এখনো অব্যাহত রেখেছে। বরং বর্তমানে সরকার এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেছে ও জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন চালুর অনুমতি দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত আছে। এসব কাজ করার জন্য বাংলাদেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসায়নি। এ ধরনের তৎপরতার ক্ষেত্রে ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাব থেকে পল্টন পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন সিপিবির নেতা–কর্মীরা। তাঁরা পল্টন মোড়ে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রয়োজন অনুসারে রাষ্ট্রকাঠামোর পরিবর্তনে সচেতনভাবে এগোচ্ছে বিএনপি: মির্জা ফখরুল

প্রয়োজন অনুসারে রাষ্ট্রকাঠামোর পরিবর্তনে বিএনপি সচেতনভাবে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জনগণের যেটা প্রয়োজন, যুগের সঙ্গে সঙ্গে যে পরিবর্তনগুলো আনা দরকার, রাষ্ট্রকাঠামোর যে পরিবর্তন আনা দরকার, সে বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সচেতন। সচেতনভাবেই সামনের দিকে এগোচ্ছি।’

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি’ এ সেমিনারের আয়োজন করে।

দ্বিতীয় পদ্মা সেতু এবং পদ্মা ব্যারাজ এখন সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। একই সঙ্গে তিনি সাতবার ফিজিবিলিটি স্টাডি (প্রস্তাবিত প্রকল্পের কার্যকারিতা এবং বাস্তবতার মূল্যায়ন) হলেও এই বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তের জায়গায় আসতে না পারাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এ জন্য রাজনৈতিক কমিটমেন্ট প্রয়োজন। এটি তখনই তৈরি হবে, যখন জনগণের মধ্য থেকে এ দাবি উঠে আসবে।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অনেক আগেই দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর অঙ্গীকার করেছিলেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের বহু অংশ ছেড়ে মানুষ চলে যাচ্ছে। বাসের উপযোগী আর থাকছে না। পরবর্তী সরকারগুলো শুধু নয়, জনগণেরও এ বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ থাকা উচিত।

পরবর্তী সরকারগুলোকে এ বিষয়ে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটা ট্রানজিশন পিরিয়ডে আছি। আজ একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। অভূতপূর্ব ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল। সেই ঐক্যকে সামনে নিয়ে আমরা সবাই যদি মূল বিষয়গুলোকে সামনে আনতে পারি, চিন্তার ঐক্য যদি থাকে, তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা সফল হব।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সবকিছুই নির্ভর করবে মানুষের ওপর। ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাংলাদেশের মানুষ পারে। সেটি একাত্তর সালে প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি চব্বিশেও তা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের পালস আমি বুঝি। দেশের মানুষ উন্নতি চায়, ওপরে উঠতে চায়, সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ চায়। সেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সব বিষয়ের সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে।’

আয়োজক কমিটির সভাপতি বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ামের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক আইনুন নিশাত, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন: মিন্টু
  • আশুলিয়ায় বিএনপির জনসভা ও এনসিপির পদযাত্রা আজ, নিরাপত্তা জোরদার
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ
  • কিছু দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে: ফখরুল
  • ভুয়া র‍্যাবকে ধাওয়া দিল আসল র‍্যাব, পথে দুই পক্ষকেই পেটাল জনতা
  • মনোনয়ন নিয়ে চিন্তা করবেন না, জনগণের পাশে থাকুন : আজাদ 
  • স্থানীয় শাসনব্যবস্থায় নাগরিকেরা কোথায়
  • লাঙ্গল মার্কার কেউ বিএনপির সদস্য হতে পারবেন না : টিপু 
  • পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি: ফখরুল
  • প্রয়োজন অনুসারে রাষ্ট্রকাঠামোর পরিবর্তনে সচেতনভাবে এগোচ্ছে বিএনপি: মির্জা ফখরুল