দেশ ধীরে ধীরে সাম্রাজ্যবাদের খপ্পরে পড়ছে: সিপিবি
Published: 25th, July 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার নানা ধরনের দেশবিরোধী চুক্তি করে চলেছে অভিযোগ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটির নেতারা বলেছেন, দেশ ধীরে ধীরে সাম্রাজ্যবাদের খপ্পরে পড়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সাম্রাজ্যবাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করে দেশের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দিতে চায়।
তা ছাড়া দেশে অরাজক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো উন্নয়ন ঘটছে না বলেও মনে করেন সিপিবির নেতারা। তাঁদের ভাষ্যমতে, এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবি নেতারা এসব কথা বলেছেন। সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে এই সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাজ্জাদ জহির। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক লুনা নূর। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিপিবি এসব তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার দেশবিরোধী গোপন চুক্তি করেছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিবি। এই চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে সিপিবি বলেছে, জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশবিরোধী গোপন চুক্তি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা দেশবাসী কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না।
সমাবেশ থেকে রাখাইনের জন্য করিডর দেওয়ার অপচেষ্টা বন্ধ এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন চালুর করার চক্রান্ত বন্ধের দাবিও জানিয়েছে সিপিবি।
সমাবেশে সিপিবির নেতারা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর জনগণ ভেবেছিল বিভিন্ন দেশের সঙ্গে করা গোপন চুক্তি জনগণের সামনে উন্মুক্ত হবে এবং তা বাতিল হবে।
অথচ দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার তা এখনো অব্যাহত রেখেছে। বরং বর্তমানে সরকার এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেছে ও জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন চালুর অনুমতি দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত আছে। এসব কাজ করার জন্য বাংলাদেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসায়নি। এ ধরনের তৎপরতার ক্ষেত্রে ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাব থেকে পল্টন পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন সিপিবির নেতা–কর্মীরা। তাঁরা পল্টন মোড়ে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব