আগামী জাতীয় নির্বাচনেই দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির ভোটাধিকার চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই দাবি আদায়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটির ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স। এসব কর্মসূচিতেও প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়ার দাবি চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন না হলে প্রয়োজনে আরও ‘হার্ডলাইনে’ (কঠোর পথে) যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রবাসীদের ভোটাধিকার বিষয়ে ডাকা এই সংবাদ সম্মেলনে ৪০টি দেশে থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন এনসিপির ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের নেতা–কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান এনসিপির ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের কো-অর্ডিনেটর (অপারেশন) তারিক আদনান। তিনি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে তিনটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো—প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনপ্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে হবে ও এই প্রক্রিয়ার একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ১৪ আগস্টের মধ্যে ইসিকে ঘোষণা করতে হবে; পোস্টাল ব্যালটে বা অনলাইনে প্রদত্ত ভোট যেন সময়মতো এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে গণনায় অন্তর্ভুক্ত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার কার্যকর করার জন্য একটি স্থায়ী উচ্চপর্যায়ের কারিগরি কমিটি গঠন করতে হবে, যা ২০২৬–পরবর্তী নির্বাচনগুলো নিয়েও দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করবে।

দাবি আদায়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের নতুন দুটি কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তারিক আদনান। তিনি জানান, ২৭ জুলাই (আজ) থেকে ১৩ আগস্ট ‘আমার ভোট আমি দেব, প্রবাস থেকেও অংশ নেব’ শীর্ষক সর্বাত্মক অনলাইন ক্যাম্পেইন, প্রবাসী গণজমায়েত ও ইসির কাছে প্রবাসীর চিঠি পাঠানো হবে। ১৪ আগস্টের মধ্যে রোডম্যাপ ও গাইডলাইন প্রকাশিত না হলে ১৫, ১৬ ও ১৭ আগস্ট ‘ডায়াস্পোরা রাইজিং ফর ভোটিং রাইটস’ শীর্ষক গ্লোবাল প্রটেস্ট (বৈশ্বিক প্রতিবাদ) অনুষ্ঠিত হবে। এতেও দাবি আদায় না হলে প্রয়োজনে আরও ‘হার্ডলাইনে’ যাওয়ার কথাও বলেন তিনি।

‘বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে এনসিপির সম্পর্ক নেই’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের পর প্রশ্নোত্তর পর্বে চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে এনসিপির প্রতিক্রিয়া জানতে চান একজন সাংবাদিক। এর জবাবে এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বর্তমানে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্ম, যার নিজস্ব সাংগঠনিক কাঠামো আছে।

এ বিষয়টি জানার পরও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে কোনো অভিযোগ এলে তার সঙ্গে এনসিপিকে যুক্ত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ ও অপপ্রচার করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তারিকুল। তিনি বলেন, গুলশানের ঘটনাটিও এরই অংশ। এর মাধ্যমে এনসিপির গ্রহণযোগ্যতা বিনষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অপচেষ্টা প্রতিহত করা হবে।

আরও পড়ুনচাঁদাবাজির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ জন ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ২ জন বহিষ্কার১৬ ঘণ্টা আগে

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও কোষাধ্যক্ষ এস এম সাইফ মোস্তাফিজ বক্তব্য দেন। এ ছাড়া ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হওয়া এনসিপির ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের নেতা–কর্মীদের মধ্যে দিলশানা পারুল বক্তব্য দেন।

উল্লেখ্য, রাজধানীর গুলশান এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গতকাল শনিবার আটক হন ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো.

সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান এবং এক কিশোর। তাঁদের মধ্যে প্রথমজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক এবং অপর দুজন সদস্য। আর আব্দুর রাজ্জাক গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সদস্য।

এরপর এ ঘটনায় শাম্মী আহমেদের স্বামী গতকাল রাতেই গুলশান থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা করেন। এই মামলায় রাতেই আটক পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এদিকে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর রাতেই ওই কিশোর ছাড়া বাকিদের নিজ নিজ সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকেও বহিষ্কার করা হয়।

আজ গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে চারজনের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আর কিশোরকে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুনসমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি: আবদুর রাজ্জাকসহ চারজন সাত দিনের রিমান্ডে১ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র ড প রব স আগস ট সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান সিপিজের

খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। দোষীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার সিপিজের এক টুইটে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি মিলন ত্রিপুরা ১৭ জুলাই একটি বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন ও ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ