দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকা রাজশাহী টেক্সটাইল মিল পুনরায় চালু করে মাত্র ছয় মাসে দুই হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। টেলি মার্কেটিং ও তৈরি পোশাকসহ নতুন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে আরো ১০ হাজার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

শনিবার (২ আগস্ট) রাজশাহীর সপুরায় অবস্থিত ‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ কারখানা চত্বরে “দুই হাজার কর্মসংস্থান উদযাপন; লক্ষ্য ১২ হাজার” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড.

এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি কর্মসংস্থানের এই মাইলফলক উদযাপনের অংশ হিসেবে কেক কাটেন।

আরো পড়ুন:

আমরা যে চূড়ান্ত পরিবর্তন চেয়েছিলাম, তা সম্ভব হয়নি: আসিফ মাহমুদ

সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী, রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) ম্যানেজার নুরুল আলমসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত মিল চালু করে এত অল্প সময়ে দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি শুধু একটি কারখানা নয়, একটি অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা।”

তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে যখন কর্মসংস্থানের অভাবে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে ছুটছে, তখন প্রাণ-আরএফএল-এর মতো প্রতিষ্ঠান স্থানীয় পর্যায়ে শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে—যা টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি।”

অনুষ্ঠানে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কয়েকজন শ্রমিকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন উপদেষ্টা।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—আমরা চাই না কেউ আর কাজের জন্য ঢাকায় ছুটে যাক। শিল্প নিয়ে আমরা পৌঁছাতে চাই প্রত্যন্ত অঞ্চলে। রাজশাহীতে শ্রমঘন শিল্পে বিনিয়োগ করে আমরা ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছি।”

তিনি বলেন, “এই কারখানাটি হবে একটি সম্পূর্ণ সাসটেইনেবল গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। এখানে উৎপাদিত পণ্য শতভাগ রপ্তানিমুখী হবে। নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য আমরা বিশেষভাবে কাজ করছি। টেলি মার্কেটিংয়ের মতো খাতে বিপুল সংখ্যক নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”

২০২৪ সালের অক্টোবরে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) সঙ্গে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের ভিত্তিতে চুক্তি স্বাক্ষর করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। পরের মাসেই বিটিএমসি থেকে দায়িত্ব বুঝে নিয়ে পুরোনো, পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে কারখানাটিকে সচল করে তোলা হয়।

বর্তমানে কারখানাটির পরিত্যক্ত একমাত্র শেড মেরামত করে ব্যাগ, জুতা, লাগেজসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট প র ণ আরএফএল গ র প অন ষ ঠ ন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

পণ্য রপ্তানিতে বিলিয়ন ডলারের কাছে ইয়াংওয়ান, অর্ধবিলিয়ন ছাড়িয়ে হা-মীম, মণ্ডল ও ডিবিএল

বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষ অবস্থানটি দক্ষিণ কোরীয় ব্যবসায়ী কিহাক সাংয়ের মালিকানাধীন ইয়াংওয়ান করপোরেশনের। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশীয় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদের মালিকানাধীন হা-মীম গ্রুপ।

ইয়াংওয়ান ও হা-মীম ছাড়াও রপ্তানিতে সেরা দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা বাকি আট শিল্প গ্রুপ হচ্ছে মণ্ডল গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ, অনন্ত, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, পলমল গ্রুপ, প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ ও মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ।

সেরা দশে থাকা নয়টি শিল্প গ্রুপের রপ্তানির ৯০ থেকে ১০০ শতাংশই তৈরি পোশাক। এই তালিকায় ব্যতিক্রম শুধু প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে শুরু করে জুতা, আসবাব, প্লাস্টিক ও হালকা প্রকৌশল পণ্য—প্রায় সবই আছে শিল্প গ্রুপটির রপ্তানির তালিকায়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রপ্তানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে প্রথম আলো বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের শীর্ষ ১০ শিল্পগোষ্ঠীর এই তালিকা তৈরি করেছে। এনবিআরের পরিসংখ্যান থেকে স্থানীয় বা প্রচ্ছন্ন রপ্তানি ও নমুনা রপ্তানি বাদ দিয়ে প্রকৃত রপ্তানির হিসাব নেওয়া হয়েছে।

এনবিআরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশ থেকে মোট ৪৬ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৬৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষ দশ গ্রুপের সম্মিলিত রপ্তানির পরিমাণ ৫ দশমিক ২৫ বিলিয়ন বা ৫২৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা মোট রপ্তানির ১১ শতাংশ।

গত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক শিল্পগোষ্ঠী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পণ্য রপ্তানিতে বিলিয়ন ডলারের কাছে ইয়াংওয়ান, অর্ধবিলিয়ন ছাড়িয়ে হা-মীম, মণ্ডল ও ডিবিএল