নেত্রকোণা-শিধলী সড়কের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, এলাকাবাসী একে মরণ ফাঁদ হিসেবে অভিহিত করেছেন। সড়কটিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যে কারণে যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। 

এলাকাবাসী জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকার নাজিরপুর সাত শহীদের মাজারে যেতে হয় এ সড়ক দিয়ে। সড়কটি নির্মাণ এবং তদারকি করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বর্তমানে এই সড়কের সংস্কার প্রয়োজন। 

নেত্রকোণা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোণা থেকে কলমাকান্দার লেঙ্গুড়ায় সাত শহীদের মাজার পর্যন্ত প্রায় ৩২ কিলোমিটার সড়ক। এর মধ্যে নাজিরপুর থেকে লেঙ্গুড়া সড়কটি গত অর্থবছরে সংস্কার করা হয়েছে। একই সড়কের নাজিরপুর থেকে শিবলী পর্যন্ত সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ৩ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ

ছয় ঘণ্টা পর বাঘাইছড়িতে যান চলাচল স্বাভাবিক

নেত্রকোণা-শিধলী সড়ক ১৩ দশমিক ২ কিলোমিটার। গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে নেত্রকোণা থেকে মেদনী নয়াপাড়া পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সংস্কার করা হয়। বাকি ১১ দশমিক ২ কিলোমিটার পুরো সড়কটি খানাখন্দে বেহাল অবস্থা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নেত্রকোণা সদর, কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরের ২৫-৩০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ নেত্রকোণা জেলা শহরে যাওয়া-আসা করেন এই সড়ক দিয়ে। সীমান্তবর্তী এলাকা নাজিরপুর ও লেঙ্গুড়া হয়ে সাত শহীদের মাজারেও যেতে হয় এই সড়কটি দিয়ে। এতে যেমন সময় কম লাগে, তেমনি খরচও বেঁচে যায়।

ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক তমজিদ বলেন, “নেত্রকোণা-শিবলী সড়কে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটে। ঝুঁকি নিয়েই সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়। পরিবারের লোকজন গাড়ি চালাতে না করে। সংসার চালানোর একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে গাড়ি। সেই গাড়ি যদি বন্ধ রাখি তাহলে পরিবার নিয়ে কীভাবে চলব?”

জেলা সদরের বড়াইল থেকে পাথর বহন করে নিয়ে যাওয়া ট্রাক চালক শামসুল আলম বলেন, “প্রায় সময় এখান থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাথর ও বালুর ভাড়া নিয়ে যাই। বড়াইল থেকে নেত্রকোণা যেতে যে পরিমাণ কষ্ট হয় সারা বাংলাদেশ ঘুরলেও এরকম মনে হয় না।” 

বড়ওয়ারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক নাজমুল হুদা তালুকদার বলেন, “নেত্রকোণা-শিধলী সড়কের কোনো না কোনো জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ রাস্তা দিয়ে সুস্থ মানুষও যেতে এখন ভয় পায়। মূলত সড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির সময় কর্দমাক্ত কাপড় নিয়ে বিদ্যালয়ে আসে।” 

তিনি আরো বলেন, “এই সড়কটি দিয়ে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও নেত্রকোণা সদরের কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজনে জেলা শহরে যাতায়াত করেন। সড়কটির দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।”

নেত্রকোণা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

রবিউল ইসলাম বলেন, “নেত্রকোণা থেকে শিধলী পর্যন্ত সড়কটি প্রায় ১৩ দশমিক ২ কিলোমিটার। গত অর্থ বছরে সড়কটির দুই কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে। বাকি অংশ প্রশস্ত করণসহ সংস্কার করার জন্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা হবে।”

ঢাকা/কামাল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন স স ক র কর ন ত রক ণ এই সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

কেশবপুরে টিসিবির পণ্য না পেয়ে কার্ডধারীদের রাস্তা অবরোধ

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় নির্ধারিত দিনে টিসিবির পণ্য না পেয়ে যশোর–সাতক্ষীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কার্ডধারীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটা থেকে উপজেলার পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ কর্মসূচির কারণে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দুর্ভোগ পোহান যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্টরা।

কেশবপুর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ফ্যামিলি কার্ডের অধীনে ১ হাজার ৮০০ কার্ডধারীকে আজ টিসিবির পণ্য দেওয়ার নির্ধারিত দিন ছিল। এ জন্য তিনটি স্থান নির্ধারণ করে মাইকিং করে জানানো হয়। এর মধ্যে কেশবপুর পৌরসভার ১, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কার্ডধারীদের জন্য শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হাফিজ এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আজ সকাল থেকে পণ্য দেওয়া হচ্ছিল। সেখানে কার্ডধারীরা ভোর থেকেই পণ্য নেওয়ার জন্য লাইন দেন।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা একটার দিকে হঠাৎ পণ্য দেওয়া বন্ধ করেন পরিবেশক (ডিলার) আবদুল বারিক। তিনি কার্ডধারীদের জানান, ঘাটতি থাকায় আপাতত আর পণ্য দিতে পারবেন না। এ সময় জনরোষের কবলে পড়েন তিনি। পরে তিনি ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ কার্ডধারীরা যশোর–সাতক্ষীরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। কার্ডধারীদের অভিযোগ, তাঁদের পণ্য না দিয়ে বাইরে এসব পণ্য বিক্রি করেছেন ডিলার।

পরে কেশবপুরের সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফ নেওয়াজ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীদের আশ্বস্ত করেন। তাঁর আশ্বাস পেয়ে সড়কটি ছেড়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় শরিফ নেওয়াজ বলেন, পণ্য কম থাকায় সবাইকে দেওয়া যায়নি। তবে পরবর্তী সময় সবাইকে পণ্য দেওয়া হবে। তাঁর আশ্বাসে ভুক্তভোগীরা রাস্তা অবরোধ তুলে নেন।

এ বিষয়ে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেকসোনা খাতুন জানান, ওই ডিলার ৬০৫টি কার্ডের পণ্য পেয়েছিলেন। এ কারণে অনেকেই পণ্য পাননি। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সবাইকে পণ্য দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেশবপুরে টিসিবির পণ্য না পেয়ে কার্ডধারীদের রাস্তা অবরোধ